যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এক ঘন্টা আকাশে উড়ে কোলনে ফিরে এলো জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের বিমান৷ সেই বিমানে ম্যার্কেল ‘জি-২০’ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন৷ বিমানের ত্রুটির কারণে তখন আর যাওয়া হয়নি৷
বিজ্ঞাপন
বিশ্বের ২০টি গুরুত্বপূর্ণ দেশের প্রধানরা এখন ‘জি-২০’ সম্মেলন নিয়ে ব্যস্ত৷ জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলও গতকাল সম্মেলনের শহর আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আইরিসের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন৷ কিন্তু বিমান ওড়ার একঘন্টা পরই দেখা দেয় যান্ত্রিক গোলযোগ৷ ফলে কোলনের বিমানবন্দরে ফিরে আসতে বাধ্য হয় চ্যান্সেলরের ‘কনরাড আডেনাওয়ার’ এয়ারবাসটি৷
এ কারণে নির্ধারিত সময়ের পরে সম্মেলনে যোগ দিতে হবে ম্যার্কেলকে৷
কী সমস্যা?
তবে ত্রুটির কারণে এমন একটি সম্মেলনে যোগ দিতে দেরি হলেও বিমানের ক্রু'র প্রশংসা করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর৷ সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, বিমানের সমস্যাটি আসলেই বেশ জটিল ছিল৷ কিন্তু বিমানের চালক ম্যার্কেলকে জানান যে, বিমানের বৈদ্যুতিক ব্যবস্থায় কিছু অসঙ্গতি থাকলেও নিরাপত্তায় কোনো ফাঁক ছিল না৷
এই যাত্রায় ম্যার্কেলের সঙ্গী হন জার্মানির অর্থমন্ত্রী ওলাফ শোলৎজ৷ যান্ত্রিক বিভ্রাটের ফলে পরে কোলন হয়ে মাদ্রিদ থেকে একটি কমার্শিয়াল বিমানে বুয়েনস আইরিসের উদ্দেশ্যে তাঁরা রওয়ানা হন, জানায় বিমানসংস্থা ইবেরিয়া৷
আগেও হয়েছে এমন
জার্মান চ্যান্সেলর বা প্রেসিডেন্টের বিমানবিভ্রাটের ঘটনা নতুন কিছু নয়৷ এর আগে রাষ্ট্রপতি ফ্রাঙ্ক-ভাল্টার স্টাইনমায়ারের একাধিক যাত্রার সময় ঘটেছে এমন গোলযোগ৷ এবছরই রয়েছে এমন একাধিক দৃষ্টান্ত৷ গত সপ্তাহেই রাষ্ট্রপতির আফ্রিকা-যাত্রায় বিঘ্ন ঘটে৷ তখন তাঁর এ-৩৪০ এয়ারবাসে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছিল৷
এবিষয়ে ম্যার্কেলকে প্রশ্ন করা হলে তিনি এর পেছনে কোনো চক্রান্তের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এই একক সমস্যাগুলির জন্য কোনোকিছু বদলানোর প্রয়োজন নেই৷’’
ইতিমধ্যে জার্মানির বেশ কিছু সংবাদ সংস্থা বারবার ঘটা এমন বিভ্রাটের পেছনে কোনো চক্রান্তের ইঙ্গিত করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে৷ কিন্তু চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের মতো সরকারী বিমানবাহিনীর এক মুখপাত্রও তা অস্বীকার করেছেন৷
এসএস/এসিবি (ডিপিএ/রয়টার্স/এএফপি)
লোগো দেখে যায় বিমান চেনা
বিমানের লেজে বৃহৎ, সুদৃশ্য লোগো দেখে কোন এয়ারলাইন্সের বিমান তা সহজেই চেনা যায়৷ অনেকেই তাদের লোগোর নকশায় পাখি ব্যবহার করেন৷ কিন্তু বেশিরভাগ কোম্পানি লোগোর দ্বারা তারা কোন দেশের তা বোঝানোর চেষ্টা করে৷
ছবি: S. Barbour/Getty Images
কোয়ান্টাস
অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় বিমান সংস্থা কোয়ান্টাসের বিমানগুলোর লেজে শোভা পায় ক্যাঙ্গারুর ছবি৷ এ কারণে কোয়ান্টাসের আরেক নাম ‘উড়ন্ত ক্যাঙ্গারু’৷ এমনকি বিমানটি দেখে দূর থেকেই বলে দেয়া যায় কোন মহাদেশ থেকে এসেছে এটি৷
ছবি: S. Barbour/Getty Images
কেএলএম রয়্যাল ডাচ এয়ারলাইন্স
এই বিমান সংস্থার বিমানগুলো তথ্য সমৃদ্ধ৷ মুকুটের বিমূর্ত প্রতীকের পাশাপাশি এই বিমানের লেজে লেখা থাকে কেএলএম৷ এ থেকে বুঝতে অসুবিধা হয় না কোন দেশ থেকে এটি এসেছে৷
ছবি: AFP/Getty Images/R. de Waal
গাম্বিয়া বার্ড
পশ্চিম আফ্রিকার এই ছোট্ট রাষ্ট্রটি পাখিদের স্বর্গ হিসেবে পরিচিত৷ গাম্বিয়ায় পাঁচশ’রও বেশি রকমের পাখি রয়েছে৷ ২০১২ সালে তাই তাদের জাতীয় বিমান সংস্থায় যখন পাখির প্রতীক ব্যবহার করা হয়েছিল তখন তাতে কেউ আশ্চর্য হননি৷ তবে ২০১৪ সালে ঐ বিমান চলাচল স্থগিত হয়ে যায়৷
ছবি: flickr/Transport Pixels
আলাস্কা এয়ারলাইন্স
সিয়াটলভিত্তিক এই বিমান সংস্থাটি তাদের ৯০ বছরের ইতিহাসে নানা সৃজনশীলতার পরিচয় দিয়েছে৷ বিমান সংস্থাগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম তারাই অনলাইনে টিকেট বিক্রি শুরু করেছিল৷ এমনকি অনলাইনে এবং স্বয়ংক্রিয় চেক-ইনও তারা শুরু করেছে৷ তাদের লোগোতে আলাস্কার ইনুইত আদিবাসীদের ছবি রয়েছে, যা দেখে এটা যে আলাস্কার বিমান তা বুঝতে কষ্ট হয় না৷
ছবি: Reuters
ইরান এয়ার
১৯৮০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের জাতীয় বিমান সংস্থাটিকে কঠিন সময় পার করতে হয়েছে৷ এই এয়ারলাইন্সের বিমানের লোগো হলো ‘হোমা’ নামের পৌরাণিক পাখি, যা বিমান সংস্থাকে বাঁচিয়ে দিয়েছে বলে অনেকের ধারণা৷ পারস্যের পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, হোমা সৌভাগ্য ও আনন্দের প্রতীক৷
ছবি: Konstantin von Wedelstaedt
এয়ার তানজানিয়া
বেশ কয়েক বছর ধরে তানজানিয়ার জাতীয় বিমান সংস্থাটি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে৷ কখনো এর বিমান আকাশে নিয়মিত উড়েছে, কখনো ওড়েনি আর প্রায়ই হাতবদল হয়েছে এর মালিকানা৷ এটা নিশ্চয়ই এর লোগো জিরাফের কারণে নয়৷
ছবি: flickr/stevesaviation
লুফটহানসা, জার্মানি
জার্মানির বৃহত্তম বিমান সংস্থাটি পথচলা শুরু করে ১৯১৮ সালে৷ এর লোগো হলো একটি সারস পাখি৷ কিছু প্রজাতির সারস আকাশে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অন্য দেশে চলে যায়৷ তবে লুফটহানসার লোগোর নকশায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে৷ প্রতীক একই থাকবে, তবে রঙে পরিবর্তন আসবে৷ হলুদ আর ধূসরের বদলে দেখা যাবে সাদা আর নীল রঙ৷