তালেবান আতঙ্কে কাবুল ছাড়তে চেয়েছিলেন। বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারের সঙ্গে নিজেকে বেঁধে রেখেছিলেন। বিমান উড়তেই মৃত্যু হয় তার।
ছবি: Marc Tessensohn/Bundeswehr/dpa/picture alliance
বিজ্ঞাপন
তালেবান কাবুলে ঢোকার পর আফগানিস্তান ছাড়তে মরিয়া হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। অ্যামেরিকাগামী বিমানে উঠতে না পেরে ল্যান্ডিং গিয়ারের সঙ্গে নিজেকে বেঁধে নিয়েছিলেন। তার যাত্রা শেষ হয়নি। বিমান থেকে খসে পড়েন আফগান ফুটবলার। তার নাম জাকি আমোয়ারি। আফগান সংবাদসংস্থা আরিয়ানা জানিয়েছে, জাকি ছিলেন আফগান ফুটবল দলের সদস্য।
গত রোববার তালেবান কাবুল দখল করার পরই দলে দলে মানুষ বিমানরন্দরে হাজির হন। কয়েকজন বিমানের চাকার সঙ্গে নিজেদের বেঁধে নিয়েছিলেন। দুই ভাই রেজা ও করিম প্লেন থেকে খসে পড়ে মারা যান। সেই ডিভিও দেখে শিউরে উঠেছিলেন বিশ্বের মানুষ।
কাবুল বিমানবন্দরের ভয়াবহ ছবি
রোববারই কাবুল দখল করেছে তালেবান। শহর ঘিরে রেখেছে তারা। বিমানবন্দরে পালাতে চাওয়া মানুষের ভিড়। বিমানের মাথায় মানুষ। ভিড়ের চাপে মৃত সাত।
ছবি: Wakil Kohsar/AFP/Getty Images
বিমান না বাস
উপমহাদেশে বাসের মাথায় অনেকসময় মানুষ চড়েন, ট্রেনের মাথাতেও মাঝেমধ্যে দেখা যায় তাদের। কিন্তু তাই বলে বিমানের মাথায় মানুষ! সেই দৃশ্যও দেখা গেল কাবুল বিমানবন্দরে। কাবুল ছাড়ার জন্য কিছু মানুষ এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
ছবি: Wakil Kohsar/AFP/Getty Images
প্রবল ভিড়
যেদিকে দেখা যায়, সেদিকেই মানুষের মাথা। পিলপিল করছে মানুষ। বিমানবন্দরের ভিতরের ছবি।
ছবি: AFP
কোথায় যাবেন
কোথায় যাবেন জানা নেই। তাদের কাছে টিকিট নেই, ভিসা নেই, আছে শুধু অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ভয় এবং পালানোর মরিয়া প্রয়াস।
ছবি: AP Photo/picture alliance
পাঁচিল ও কাঁটাতারের বেড়া টপকে
বিমানবন্দরে উঁচু পাঁচিল, তার উপরে কাঁটাতারের বেড়া। সে সব টপকে মানুষ ঢুকেছেন বিমানবন্দরে। ছবিতে একটি মেয়েকে পাঁচিলে টেনে তুলছেন এক পুরুষ।
ছবি: REUTERS
যে কোনো ভাবে ঢোকার চেষ্টা
বিমানে যে কোনো ভাবে ঢোকার চেষ্টা করেছেন মানুষ। একমাত্র বিমানেই কাবুল তথা আফগানিস্তানের বাইরে যাওয়া যাবে। তাই মরিয়া হয়ে উঠেছে মানুষ।
ছবি: AP Photo/picture alliance
বাইরে গাড়ি রেখে
মানুষ এতটাই বেপরোয়া, যে বিমানবন্দরের বাইরে গাড়ি রেখে পরিবারের সকলকে নিয়ে তারা ছুটছেন ভিতরে ঢোকার জন্য।
ছবি: REUTERS
নারী ও শিশুরাও
শুধু পুরুষরা নয়। নারী ও শিশুদেরও দেখা গেছে বিমানবন্দরে ঢুকে প্লেন ধরার মরিয়া চেষ্টা করতে।
ছবি: REUTERS
বাইরে তালেবান প্রহরা
বিমানবন্দরের বাইরে সতর্ক পাহারায় তালেবান। বন্দুক হাতে তারা প্রহরারত।
ছবি: REUTERS
ভিড়ের চাপে
প্রবল ভিড় এবং বিশৃঙ্খলার শিকার হলেন অন্ততপক্ষে সাতজন। পালাতে চেয়েছিলেন তারা। পারলেন না। চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
ছবি: AFP/Getty Images
মার্কিন বিমানবাহিনীর বিমান
কাবুল বিমানবন্দরের উপরে মার্কিন বিমানবাহিনীর বিমান। এই বিমানবন্দর এখনো অ্যামেরিকার দখলে।
ছবি: ASVAKA NEWS via REUTERS
বিমান ঘিরে সেনা
পরিস্থিতি দেখে মার্কিন সেনা বিমানগুলি ঘিরে ধরে। আফগান জনতা দূর থেকে দেখছেন। তারা তখনো আশায় যে, বিমানে করে চলে যেতে পারবেন।
ছবি: Wakil Kohsar/AFP/Getty Images
নামতে পারল না
বিমানবন্দরের এমন অবস্থা ছিল যে, সোমবার জার্মান সেনাবাহিনীর বিমান সেখানে নামতে পর্যন্ত পারেনি।
সকলকে বিমানবন্দরের বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য বন্ধ রাখা হয় এয়ারপোর্ট। বেশ কয়েকঘণ্টা পরে তা খোলে।
ছবি: Maxar Technologies/REUTERS
13 ছবি1 | 13
সেদিন কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে গাড়ি রেখে হাজার হাজার মানুষ দেশ থেকে যেভাবে হোক পালাতে চেয়েছিলেন। তারা বিমানের মাথায় চড়েছিলেন। কোনো বিমান দেখলেই রানওয়ে দিয়ে ছুটেছেন। যে কোনোভাবে বিমানে ওঠার চেষ্টা করেছেন। কাবুল বিমানবন্দর এখনো মার্কিন সেনার নিয়ন্ত্রণে। তারা পরিস্থিতি সামলাতে শূন্যে গুলি চালিয়েছে। ভিড়ের চাপে ও হুড়োহুড়িতে নয়জন মারা যান।
তালেবান কাবুল দখল করে নেয়ার পর অন্য অনেকের মতো আনোয়ারিও আতঙ্কিত হয়ে যে কোনো উপায়ে কাবুল ছাড়তে চেয়েছিলেন। তিনি ছিলেন আফগান যুব দলের প্লেয়ার। আফগান জাতীয় দলের ফেসবুক পেজেও এই খবর পোস্ট করা হয়েছে।
আনোয়ারির সতীর্থরাও এই খবরে ভেঙে পড়েছেন। একজন প্রতিশ্রুতিবান ফুটবলারের এরকম মর্মান্তিক পরিণতি তারা মেনে নিতে পারছেন না। কিন্তু এর মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসছে তালেবান শাসন নিয়ে আফগান দের একাংশের, বিশেষ করে যুব সম্প্রদায়ের আতঙ্ক। এই যুবকরা আগের তালেবান শাসন দেখেননি। শুনেছেন শুধু। তার থেকেই তারা আতঙ্কিত হয়েছেন। এভাবে দেশ ছাড়তে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।