ইন্সু্রেন্সের ঘাটতি থাকায় বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার মতো দুর্যোগপ্রবণ উন্নয়নশীল দেশগুলো ঝড়, বন্যা ও ভূমিকম্পে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
লন্ডনভিত্তিক ইন্সুরেন্স মার্কেট লয়েডস সোমবার এক প্রতিবেদনে বলেছে, বিশ্বব্যাপী ১৬৩ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের সম্পদের প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিপরীতে ইন্সুরেন্স নেই, যা জীবিকা ও সমৃদ্ধির জন্য হুমকি৷
২০১২ সাল থেকে ইন্সুরেন্সবিহীন সম্পদের পরিমাণ মাত্র ৩ শতাংশ কমেছে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়েছে৷
প্রতিবেদনে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবসহ বিভিন্ন দুর্যোগে খুব বেশি মাত্রায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকিতে থাকা এবং ক্ষতি কাটিয়ে উঠার তহবিল সংগ্রহে সীমিত সামর্থ্যের অনেক দেশেই খুব কম ইন্সুরেন্স আছে৷
লয়েডসের চেয়ারম্যান ব্রুস কার্নেগি-ব্রাউন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘যদি ইন্সুরেন্স না থাকে তাহলে অর্থনীতি ও মানুষের জীবনজীবিকার ওপর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের অনেক বেশি প্রভাব পড়তে পারে৷''
উদীয়মান ও স্বল্প আয়ের দেশগুলোই প্রধানত বৈশ্বিক ‘ইন্সু্রেন্স ঘাটতি'র জন্য দায়ী বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়৷
এতে বলা হয়, উন্নয়নশীল দেশগুলোর চেয়ে ধনী দেশগুলোতে ইন্সুরেন্স পেনিট্রেশন হার (জিডিপিতে শতকরা হারে বীমার অবদান) দ্বিগুণ৷
বাংলাদেশ, ভারত, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন্স, ইন্দোনেশিয়া, মিশর ও নাইজেরিয়ায় এই হার ১ শতাংশেরও কম৷
প্রকৃতি ‘রাগ’ প্রকাশ করলে যা হয়
প্রতি বছর গড়ে দশ হাজারের মতো মানুষ ভূমিকম্পে প্রাণ হারায়৷ ভূ-কম্পনের ফলে সুনামিসহ আরো বিস্তৃত দুর্যোগ সৃষ্টি হয়৷ ভয়াবহ কয়েকটি ভূমিকম্প সম্পর্কে জেনে নিই চলুন৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Barret
ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প
রেকর্ড রাখা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প হয়েছে চিলির সমুদ্র উপকূলে, ১৯৬০ সালে৷ নয় দশমিক পাঁচ মাত্রার সেই ভূমিকম্প প্রায় দশ মিনিট স্থায়ী হয়েছিল৷ তাতে অনেক অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে যায়৷ সেই সময় চিলিতে পাঁচ হাজার সতশ’র মতো মানুষ প্রাণ হারায়৷ আর ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্ট সুনামিতে জাপানে ১৩০ ব্যক্তি এবং হাওয়াইতে মারা যায় ৬১ ব্যক্তি৷
ছবি: Getty Images/AFP
‘গুড ফ্রাইডে’ ভূমিকম্প
এখন অবধি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানা সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পটি ‘গুড ফ্রাইডে’ বা ‘গ্রেট আলাস্কান’ ভূমিকম্প হিসেবে পরিচিত৷ ১৯৬৪ সালের ২৭ মার্চের সেই ভূমিকম্পে ১৩৯ জনের মতো মানুষ প্রাণ হারায়৷
ছবি: Getty Images/Central Press
জাপানের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প
জাপানের রেসকিউ ডগ অ্যাসোসিয়েশনের এক সদস্য এবং তাঁর কুকুর ভুক্তভোগীদের খুঁজছেন৷ জাপানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে নয় দশমিক এক মাত্রার ভূমিকম্প এবং পরবর্তীতে সুনামির আঘাতে প্রায় ১৮ হাজার ৫০০ ব্যক্তি প্রাণ হারায়৷ এতে ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/Y. Chiba
২০০৪-এর ভারত মহাসাগর ভূমিকম্প
সমুদ্রের তলদেশে নয় দশমিক এক মাত্রার ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট বিধ্বংসী ভূমিকম্পে ১৪টি দেশের ২৮০,০০০ মানুষ প্রাণ হারায়৷ এতে সমুদ্র উপকূলে একশ’ ফুট উঁচু অবধি ঢেউ আছড়ে পড়ে৷ পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম প্রাণঘাতী প্রাকৃতিক বিপর্যয় ছিল এটি৷
ছবি: Getty Images/P.M. Bonafede/U.S. Navy
চিলি ভূমিকম্প, ২০১০
২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে চিলির কেন্দ্রীয় অঞ্চলের উপকূলে আট দশমিক আট মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে৷ ভূমিকম্প এবং কম্পন পরবর্তী সুনামিতে প্রাণ হারায় ৪৫০ ব্যক্তি৷ এতে স্থানীয় মৎস শিল্পের প্রায় ৬৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষতি হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Bernetti
চীনে ভূমিকম্প, ১৯৭৬
চীনের তাংজিশিয়ানের একটি পরিত্যক্ত রেলওয়ে কোচ৷ ১৯৭৬ সালের ২৮ জুলাইয়ের ভূমিকম্পে শিল্পঅঞ্চলটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ সরকারি হিসেব অনুযায়ী, সাত দশমিক চার মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ২৪২,০০০ মানুষ প্রাণ হারায়৷ আর বেসরকারি হিসেব বলছে, প্রাণহানির সংখ্যা পাঁচলাখের মতো৷
ছবি: Getty Images/Keystone/Hulton Archive
২০১০ হাইতি ভূমিকম্প
হাইতির পোর্ট অফ প্রিন্সে ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত ঘর-বাড়ির মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন এক ব্যক্তি৷ ২০১০ সালের ১২ জানুয়ারিতে সাত মাত্রার সেই ভূমিকম্পে কমপক্ষে দু’লাখ মানুষ প্রাণ হারায়৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Barret
7 ছবি1 | 7
বিমা না থাকলে দুর্যোগের পর ক্ষয়ক্ষতি পূরণে সরকারি তহবিল থেকে অর্থ দিতে হয়, এটা দরিদ্র দেশগুলোর জন্য একটি সমস্যা৷ কারণ, পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান দেওয়া তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে৷
‘‘প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও বিমা না থাকাকে অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করা এবং বৈশ্বিক অসাম্য টিকিয়ে রাখার জন্য একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে দেখা যেতে পারে৷''
লয়েডসের প্রতিবেদনে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিরাট অংশে আরো গুরুতর, ঘনঘন ও ক্ষয়ক্ষতি সৃষ্টিকারী প্রাকৃতিক দুর্যোগ হওয়ায় বিষয়টি উদ্বেগজনক৷
বিগত দশকে গত বছরই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি৷ এখন বছরে দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১৬৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷
সমস্যা যেখানে
উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সম্পদের দুর্যোগকালীন বিমা না করার পেছনে তা অনেকের জন্য বেশি ব্যয়বহুল হওয়ার কথা উঠে এসেছে প্রতিবেদনে৷ এছাড়া বিমার মূল্য অনুধাবনের সীমাবদ্ধতা এবং বিমা কোম্পানির ওপর আস্থার সংকট পলিসি বিক্রির ক্ষেত্রে অন্তরায় বলে এতে বলা হয়৷
প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্যোগ সহনশীলতায় বিনিয়োগ এবং বিমা এই দুটি একসঙ্গে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমাতে পারবে৷
গবেষণায় দেখা গেছে, দুর্যোগ ঝুঁকি কমাতে এক ডলার বিনিয়োগ করলে তা পুনর্বাসনের ৪ ডলার খরচ কমিয়ে দেয়৷
ভুলে যাওয়া বন্যা দুর্গতরা
পৃথিবী ভুলে গেছে তাঁদের দুর্দশার কথা৷ নেপাল, নাইজেরিয়া, ভারত এবং বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ বন্যায় তাঁদের সর্বস্ব হারিয়েছেন৷ পানি কমার সাথে সাথে বন্যার ভয়াবহতা আরো স্পষ্ট হয়ে উঠছে৷
ছবি: picture alliance/AP/dpa/A. A. Siddiqui
আসছে আরো বাজে সময়
বৃষ্টি কমছে, কিন্তু বিশৃঙ্খলা রয়েই গেছে৷ জাতিসংঘের জরুরি আন্তর্জাতিক শিশু তহবিল ইউনিসেফ বলছে, দক্ষিণ এশিয়ার অন্তত এক কোটি ৬০ লাখ শিশুকে তাদের ওপরই নির্ভর করতে হবে৷ বিশুদ্ধ পানি, খাবার এবং ওষুধ থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিসেরই চরম অভাব৷
স্কুল, হাসপাতাল এবং বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে, মৃতের সংখ্যাও বেড়েই চলেছে৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/R. Asad
বৃষ্টি যখন অভিশাপ
কয়েক দশকের মধ্যে ভয়াবহ বন্যা হয়েছে৷ দক্ষিণ এশিয়ায় লাখ লাখ লোক বন্যার কারণে ভিটেমাটি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন৷ নেপাল এবং বাংলাদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ তলিয়ে গিয়েছিল পানির নীচে৷ ভারতের বিহার রাজ্যের চাম্পারান জেলায় বেশকয়েকটি গ্রাম একেবারে ধ্বংস হয়ে গেছে৷
ছবি: picture-alliance/Photoshot/Stringer
জীবিত, কিন্তু বিধ্বস্ত
কারিতাস ইন্টারন্যাশনালের তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ায় বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪ কোটি ১০ লাখ মানুষ৷ এর মধ্যে ৪০ লাখই বাংলাদেশে৷ অনেকেই প্রাণে বাঁচতে পেরেছেন, কিন্তু তাঁরা জানেন না, কী আছে ভবিষ্যতে৷ দাতাসংস্থাগুলোও জানিয়েছে সাহায্যের আহ্বান৷
ছবি: bdnews24.com
কোথাও কেউ নেই
ভারতের বিহারে অনেক পরিবার খোলা আকাশের নীচে বাস করতে বাধ্য হচ্ছেন৷ একসময় বৃষ্টি কমলে, বন্যার পানি নেমে গেলে বাড়িতে ফেরার আশা তাঁদের৷ এ বছর এত ভয়াবহ বন্যা হয়েছে যে, অচল হয়ে পড়েছিল অর্থনৈতিক রাজধানী মুম্বইও৷
ছবি: picture alliance/AP/dpa/A. A. Siddiqui
পরিত্যক্ত মাকুরদি
নাইজেরিয়াতেও ভয়াবহ বন্যায় এক লাখ মানুষ বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন৷ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বোর্নো এবং বেন্যু রাজ্য৷ বেন্যু নদীর বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যায় রাজ্যের রাজধানী মাকুরদি৷ সরিয়ে নিতে হয় হাজার হাজার নাগরিককে৷
ছবি: Getty Images/AFP/F. Ijidioma
যোগাযোগব্যবস্থায় ধস
নাইজেরিয়ার বোর্নো রাজ্যের রাজধানী মাইদুগুরিতে রাস্তাঘাট ডুবে গেছে বন্যার পানিতে৷ জমে থাকা পানিতে কোথাও ভেঙে পড়েছে সড়ক৷ বন্যার পানি নেমে গেলেও পুরো শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Heunis
তেল নয়, জল
গত কয়েক বছর ধরেই বন্যা নাইজেরিয়ার স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে৷ ২০১২ সালেও তেলসমৃদ্ধ বেশ কয়েকটি শহর ও গ্রাম ডুবে গিয়েছিল৷ ১৫ জন মানুষ এতে মারা যান, হাজার হাজার মানুষ হারান বাড়িঘর৷ তেলের পাইপলাইনে জল ঢুকে ক্ষতি হয়েছিল দীর্ঘস্থায়ী৷
ছবি: picture alliance/dpa
কী হবে এখন!
৮৭ বছরের লিডিয়া আনুসা৷ ইয়েনাগোয়ার এক শিবিরের সামনে বসে আছেন বন্যার কবল থেকে বেঁচে যাওয়া নিজের অল্প কিছু সম্বল নিয়ে৷ ২০১২ সাল থেকে দেশটিতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অন্তত ৮০ লাখ মানুষ, প্রাণ হারিয়েছেন ৩ শতাধিক মানুষ৷
ছবি: Getty Images/AFP/P. Utomi Ekpei
8 ছবি1 | 8
সোমবারই লয়েডস ও ব্রিটিশ সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত সেন্টার ফর গ্লোবাল ডিজাস্টার প্রোটেকশনের এ বিষয়ে আরো একটি প্রতিবদেন প্রকাশিত হয়৷ সেখানে দুর্যোগ সহনশীল অবকাঠামোয় বিনিয়োগ টানতে পারা এবং বিমা আওতা বাড়ানোর চারটি উদ্ভাবনী আর্থিক পদ্ধতি তুলে ধরা হয়েছে৷
তারা স্বল্প সুদের ঋণ, যাতে বিমা অন্তর্ভুক্ত থাকবে এবং বন্ডের কথা বলেছেন, যার পেমেন্ট দুর্যোগ সহনশীল পদক্ষেপের সাফল্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবে৷
এছাড়া তারা রেজিলিয়েন্স সার্ভিস কোম্পানির ধারণা দিয়েছেন, যারা দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ও ইন্সুরেন্স প্রিমিয়াম কমাতে কাজ করবে৷
তিনি দাতা দেশগুলোর প্রতি এসব দেশের সুরক্ষা জোরদারে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে অর্থায়নের উপায় খুঁজতে ফিন্যান্সিয়াল মার্কেটগুলোর সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন৷
‘‘স্বল্প সামর্থ্যের দেশগুলোর দুর্যোগ সহনশীল প্রচেষ্টায় যে পরিমাণ সহায়তা করা দরকার বলে আমরা মনে করি, তা সত্যিকার অর্থে উন্নত বিশ্ব করছে না,'' থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে বলেন তিনি৷
এএইচ/এসিবি (রয়টার্স)
ইন্দোনেশিয়া: এক সুনামি-বিধ্বস্ত জনপদ
ভূমিকম্পের পর ভয়াবহ সুনামিতে বিধ্বস্ত হয়েছে পর্যটন দ্বীপ সুলাওয়েসি৷ এরই মধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে আট শতাধিক মরদেহ, বিচ্ছিন্ন হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিধ্বস্ত হয়েছে ঘরবাড়ি, দেখা দিয়েছে খাদ্য ও চিকিৎসা সংকট৷
ছবি: BNPB
ধ্বংসপ্রাপ্ত সেতু
৭ দশমিক ৫ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে নিহত হয়েছেন শত শত মানুষ৷ উদ্ধারকাজ পুরোপুরি শেষ হলে এ সংখ্যা আরো বাড়বে বলে আশংকা কর্তৃপক্ষের৷ জলোচ্ছ্বাসের ধাক্কায় ভেঙে পড়েছে পালুর ৩০০ মিটার দীর্ঘ সেতু৷
ছবি: BNPB
বিধ্বস্ত মসজিদ
শুক্রবার যখন পালুতে সুনামি আঘাত করে, তখন মসজিদে নামাজের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মুসল্লিরা৷ কর্তৃপক্ষ বলছে, সেসময় সমুদ্র সৈকতে আয়োজিত এক উৎসবের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ছিলেন অনেকে৷ তাঁদের বেশিরভাগই নিহত হয়েছেন৷
ছবি: AFP/Getty Images/J. Samad
জায়গা নেই হাসপাতালে
আহতদের ভিড় সামাল দিতে পারছে না স্থানীয় হাসপাতাল৷ আহতদের হাসপাতালের বাইরে চিকিৎসা দিতে বাধ্য হচ্ছেন চিকিৎসকরা৷ পালুর একটি হাসপাতালের পরিচালক কোমাং আদি সুয়েন্দ্র বলছেন, ‘‘আমাদের এই মুহূর্তে সব ধরনের সাহায্য প্রয়োজন৷ ফিল্ড হাসপাতাল, মেডিকেল কর্মী, ওষুধ, কম্বল, সবকিছু৷’’
ছবি: Getty Images/AFP/M. Rifki
নিখোঁজ অনেকেই
এখনো শহরজুড়ে ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে আছেন অনেকে৷ যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়ায় উদ্ধাকাজ চালানো যাচ্ছে না পূর্ণ গতিতে৷ উদ্ধারকর্মীরা আশংকা করছেন, নিহতের সংখ্যা কয়েক হাজারে পৌঁছুতে পারে৷
ছবি: Reuters/Antara Foto
জ্বালানি সংকট
ভূমিকম্প ও সুনামির আঘাতে পুরো দ্বীপ এখনো বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছে৷ ফলে দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির সংকটও৷ অনেককেই দেখা গেছে, বাসার জেনারেটরের জন্য গ্যাস স্টেশনে নিজ হাতে গ্যাস নিতে৷
ছবি: DW/N. Amir
বেড়েছে লুটতরাজ
নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের সংকটে পড়েছে পালু৷ বেঁচে থাকা অধিবাসীদের অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রবেশ করছেন বিধ্বস্ত শপিং মল ও সুপারমার্কেটে৷ খুঁজে বের করছেন ব্যবহারযোগ্য জিনিসপত্র৷
ছবি: Reuters/DRONE PILOT TEZAR KODONGAN
জেল ভেঙে পলায়ন
অস্থিরতার সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন দ্বীপের কয়েদিরাও৷ স্থানীয় বিভিন্ন জেল ভেঙে অন্তত ১২০০ অপরাধী পালানোর তথ্য জানানো হয়েছে সংবাদমাধ্যমে৷ পলাতক কয়েদিদের ধরতে শিগগিরই অভিযান পরিচালনা শুরুর কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/T. Syuflana
পুনর্নিমাণের ঘোষণা
সুনামির আঘাতে বন্ধ হয়ে যাওয়ার একদিন পর পালু বিমানবন্দর খুলে দেয় কর্তৃপক্ষ৷ তখন থেকে ত্রাণ সরবরাহ শুরু করে সেনাবাহিনী৷ ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোও সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন দ্বীপের অবস্থা, অঙ্গীকার করেছেন পুনর্নিমাণের৷