বিশ্বের অন্য অনেক প্রান্তের তুলনায় ইউরোপে বনজঙ্গল বেশি চোখে পড়ে বটে, কিন্তু তার প্রায় সবটাই অর্থনৈতিক কারণে মানুষের সৃষ্টি৷ সামান্য কিছু আদিম অরণ্য থেকে শিক্ষা নিতে বিজ্ঞানীরা উদ্যোগ নিচ্ছেন৷
ইউরোপের সম্ভবত সবচেয়ে সুন্দর ও বড় জঙ্গলে ভরা বোইয়া মিকা উপত্যকা ছবি: EuroNatur/Matthias Schickhofer
বিজ্ঞাপন
রোমানিয়ার সিবিউ শহর থেকে গাড়িতে ঘণ্টাতিনেক দূরে বোইয়া মিকা উপত্যকা৷ সেখানে এখনো পর্যন্ত সাধারণ মানুষের পা পড়ে নি৷ একদল বিজ্ঞানী ইউরোপের সম্ভবত সবচেয়ে সুন্দর ও বড় জঙ্গলে ভরা এই উপত্যকায় যাতায়াত করেন৷ সেখানে গবেষকদের জন্য এমন এক গুপ্তধন লুকিয়ে রয়েছে, যা দামী পাথরের মতো বিরল ও দূরের গ্রহের মতো রহস্যময়৷ দলের সদস্য মার্টিন মিকোলাশ বলেন, ‘‘বোইয়া মিকা সত্যি অনবদ্য, কারণ এটা ইউরোপের নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের শেষ উপত্যাকাগুলির অন্যতম যেখানে মানুষের তৈরি কোনো পথ নেই, যা সত্যিই বেশ দুর্গম৷’’
প্রাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা পাঁচ বছর ধরে নিয়মিত এই উপত্যকায় আসছেন৷ কারণ দুর্গম এই জায়গাটি গবেষণার জন্য খুবই উপযুক্ত৷ ইউরোপে প্রায় ১,০০০ হেক্টর জুড়ে উপত্যকা থেকে পাহাড়ের চূড়া পর্যন্ত এমন অক্ষত প্রকৃতি সত্যি বিরল৷
জার্মানির বন-জঙ্গল
জার্মানরা বন-জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করেন৷ এভাবে অবসর সময় কাটাতে আর হাঁটতেও ভালোবাসেন তাঁরা৷ চলুন সে রকমই জার্মানির কিছু বনানির সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া যাক৷
ছবি: picture-alliance/Thomas Muncke
জাতীয় পার্ক ইয়াসমুন্ড
ইয়াসমুন্ডের এই পার্কটি জার্মানির জাতীয় পার্কগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ছোট পার্ক৷ বিখ্যাত ব়্যুগেন দ্বীপের একেবারে উত্তরে অবস্থিত এই পার্কের সৌন্দর্য পর্যটকদের আকর্ষণ করে, করে মুগ্ধ৷ ইউনেস্কো ২০১১ সালে ইয়াসমুন্ড পার্কটিকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়৷
ছবি: Scoopshot/ac-images
এলবে নদীর নিসর্গ
প্রকৃতি সৃষ্ট নিসর্গের মধ্যে অন্যতম নদী পরিবেষ্টিত চরগুলি৷ নিয়মিত বন্যা হওয়ার কারণে এই সব চরে গাছপালা এবং পশুপাখিরা আনন্দে বেঁচে থাকে৷ যেমনটা এখানে, ব্রান্ডেনবুর্গের এলবে নদীতে৷ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য এলবে নদীর এই চরটিকে ১৯৭৯ সালে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যর অন্তর্ভুক্ত করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/ZB
হারৎস
জার্মানির মধ্যভাগে অবস্থিত হারৎসের পাহাড়ি অঞ্চল শুধু জার্মানির সবচেয়ে বড় বনভূমি নয়, জার্মানির সবচেয়ে জনপ্রিয় বনাঞ্চলও বটে৷ ১৮২৪ সালে অন্যতম জার্মান লেখক হাইনরিশ হাইনে তাঁর ভ্রমণ কাহিনিতে এই অঞ্চলকে তুলে ধরেন৷ যাঁরা হাঁটতে পছন্দ করেন তাঁদের কাছে জায়গাটি খুবই প্রিয়৷
ছবি: picture-alliance/ZB
হাইনিশ জাতীয় পার্ক
জার্মানির ট্যুরিঙ্গেন রাজ্যে রয়েছে ‘বুখেন’ বা বীচ গাছে ঘন জঙ্গল৷ এই বনের কয়েকটা গাছ আবার গত ৮০০ বছর ধরে এইভাবে একেবারে সাড়ি দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে৷ এর জন্যই ইউনেস্কো ২০১১ সালে এই বনভূমিকে বিশ্ব প্রাকৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে৷ এখানে বনবিড়ালের মতো অনেক বিরল প্রাণীও দেখা যায়৷
ছবি: DW/C. Hoffmann
স্পেসার্ট
জার্মানির দক্ষিণে অবস্থিত বাভারিয়া এবং হেসেন রাজ্যের মাঝামাঝি একটি পাহাড়ি এলাকায় অবস্থিত এই বনটি৷ আগে স্পেসার্ট ছিল ধনী ও বিশপদের শিকার করার জায়গা৷ শুধু তাই নয়, ঊনিশ শতকে এই জঙ্গলেই আস্তানা গড়েছিল জার্মানির কুখ্যাত ডাকাতরা৷ ১৮২৭ সাল থেকে ‘‘দাস ভির্টহাউস ইম স্পেসার্ট’’ নামে পরিচিতি লাভ করে এই ঘন বনাঞ্চল৷
ছবি: picture-alliance/Thomas Muncke
ব্ল্যাক ফরেস্ট
ব্ল্যাক ফরেস্ট বা কৃষ্ণ অরণ্য নিয়ে নানা রকম ভূতের গল্প প্রচলিত আছে জার্মানিতে৷ আছে এই জঙ্গলের নামে একটি কেক-ও৷ সে জন্যই হয়ত এই কৃষ্ণ অরণ্যের জাতীয় পার্কের মর্যাদা পাওয়া উচিত বলে মনে করেন অনেকে৷ আবার অন্যদের আশঙ্কা, জাতীয় পার্ক হলে এখান থেকে আর ফল সংগ্রহ বা গাছ কাটা যাবে না – জার্মানিতে পরিবেশ রক্ষা সত্যিই যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়!
ছবি: picture-alliance/Ronald Wittek
বাভারিয়ার জাতীয় পার্ক
রাখেল লেক বাভারিয়ার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ হ্রদের মধ্যে একটি৷ লেকটি ঘিরে প্রায় ১০৭০ মিটার এলাকা জুড়ে অবস্থিত এই বন, যেখানে গত কয়েক দশকে একটি গাছও কাটা হয়নি৷ খুবই নিরিবিলি ও শান্ত পরিবেশ এখানে৷ তাই হাঁটার জন্যও খুব উপযোগী এই অঞ্চল৷ ১৯৭০ সালে এই পার্কটিকে জার্মানির প্রথম জাতীয় পার্ক হিসেবে ঘোষণা করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
জাতীয় পার্ক ব্যার্শটেসগাডেন
এটা আলপস পর্বতমালায় অবস্থিত জার্মানির একমাত্র জাতীয় পার্ক৷ পার্কটি উচ্চ পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থানের কারণে পর্যটকরা এখানে এলে বিরল প্রাণীর দেখা পান৷ তাই তো পক্ষীপ্রেমী আর বন্যপ্রাণী গবেষকদের জন্য এটা দারুণ একটা জায়গা৷
ছবি: picture-alliance/Thomas Muncke
8 ছবি1 | 8
বর্তমানে ইউরোপের প্রায় ৯৫ শতাংশ জঙ্গল বাণিজ্যিক কারণে কৃত্রিমভাবে গড়ে তোলা হয়েছে৷ সে কারণে প্রাকৃতিক অরণ্যের চরিত্র বুঝতে হলে বোইয়া মিকা উপত্যকার মতো জায়গায় আসতে হবে৷ শুধু এমন জায়গায় এলেই জঙ্গলের ইকোসিস্টেমের আদি ও অকৃত্রিম রূপ দেখা যায়৷ মার্টিন মিকোলাশ মনে করেন, ‘‘এমন জায়গার অস্তিত্ব সত্যি খুব জরুরি৷ বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের এই সময়ে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা কীভাবে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছে, শুধু এমন উপত্যকায় আমরা তা পর্যবেক্ষণ করতে পারি৷’’
প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে পাহাড় চড়ার পর অবশেষে ক্যাম্পে পৌঁছানো গেল৷ এক সপ্তাহ ধরে প্রাকৃতিক জঙ্গলের রহস্য ভেদ করতে বিজ্ঞানীদের দল সেখান থেকে আশেপাশের পাহাড় ঘুরে দেখবেন৷ পরের দিন সকালে অসংখ্য পরিমাপ যন্ত্র নিয়ে গবেষকরা জঙ্গলের আরও গভীরে প্রবেশ করলেন৷ ঘন জঙ্গল ভেদ করে এগিয়ে চলা সত্যি বেশ কঠিন৷ তাছাড়া জঙ্গলের মধ্যে তাঁরা মোটেই একা নন৷ মার্টিন মিকোলাশ জানালেন, ‘‘এখানে পাতার উপর ভালুকের পায়ের ছাপ দেখা যাচ্ছে৷ দেখতে পাচ্ছেন, একই রেখায় ছাপ এগিয়ে গেছে৷ এত বড় পা অন্য কোনো প্রাণীর হতে পারে না৷ ভালুকটা সম্ভবত পাতার নীচে পোকার খোঁজ করছিল৷’’
বোইয়া মিকা উপত্যকায় আনুমানিক ১৫টি ভালুক বসবাস করে৷ গবেষকদল অবশ্য তাতে দমে না গিয়ে কাজ চালিয়ে গেছেন৷ অর্থাৎ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে গোটা জঙ্গল পরিমাপ করেছেন৷ তাঁরা এভাবে গাছপালার সংখ্যা, বয়স, উচ্চতা ও জাত লিখে রাখেন৷ তাঁরা মরা গাছের গুঁড়ির ঘনত্ব ও বণ্টন ভালোভাবে হিসাব করেন৷ তাছাড়া অনেক গাছের ইতিহাস জানতে সেগুলির তাঁরা নমুনাও সংগ্রহ করেছেন৷
বিশ্বের ১০টি রহস্যময় অরণ্য
প্রাচীন অরণ্য দেখলেই কি আপনার নিজেরও বন্য হতে ইচ্ছে করে? আপনি কি এমন একজন মানুষ, যিনি ভয়কে উপেক্ষা করে রহস্যের পেছনে ছুটতে ভালোবাসেন? তাহলে এই ছবিঘরটি আপনার জন্য৷ আপনার ভ্রমণ তালিকায় এখনই এদের নাম যুক্ত করুন৷
ছবি: AFP/Getty Images/J. Thys
ব্ল্যাক ফরেস্ট, জার্মানি
এই অরণ্যের নামেই যেন লুকিয়ে আছে রহস্য৷ কেননা একে ঘিরে রয়েছে অনেক পৌরাণিক কাহিনি ও কিংবদন্তি৷ জার্মানির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে রোমানরা নাম দিয়েছিল ব্ল্যাক ফরেস্ট, কারণ সে অঞ্চল একসময় ছিল অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং অভেদ্য৷ সেখানে গেলে মনে হতে পারে ঘন অরণ্যে গাছের আড়ালে লুকিয়ে আছে ভূত প্রেত৷ একইসাথে রূপকথা এবং ভৌতিক এক শিহরণ জাগবে মনে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Seeger
হ্যালারবাস, বেলজিয়াম
প্রতি বসন্তে নীলমনি লতায় ছেয়ে থাকে এই অরণ্য, মনে হয় যেন নীল ভেলভেট৷ পর্যটকদের কাছে তখন এই অরন্যকে মনে হয় রূপকথার রাজ্য৷
ছবি: AFP/Getty Images/J. Thys
গোবলিন ফরেস্ট, নিউজিল্যান্ড
গোবলিন অরণ্য আসলেই অনন্য৷ এমন অরণ্য বিশ্বের আর কোথাও দেখতে পাওয়া যায় না৷ ভূতুরে শ্যাওলা ঢাকা এই গাছগুলো বৃষ্টির পানি পুরোপুরি শুষে নিতে পারে না৷ গায়ে যে পানি জমে থাকে তাতে শ্যাওলা হয়ে এমন ভূতুরে চেহারা হয় এগুলোর৷
ছবি: picture-alliance/blickwinkel/S. Sailer
রাতা ফরেস্ট, নিউজিল্যান্ড
রাতা নিউজিল্যান্ডের এক ধরনের গাছের নাম৷ এই অরণ্যটি এন্ডারবাই দ্বীপে অবস্থিত৷ এখানে গাছগুলোর গুড়ি আর ডালপালা দেখে মনে হয় একে অপরকে শুঁড় দিয়ে জড়িয়ে ধরে রেখেছে৷ এই অরণ্যে হাইকিং খুব জনপ্রিয়৷
ছবি: picture-alliance/Arco Images G/H. Reinhard
ক্রুকেড ফরেস্ট, পোল্যান্ড
পোল্যান্ডের নোয়ে সারনোভো এলাকার উপকণ্ঠে এই অরণ্যের অবস্থান৷ এখনও পর্যন্ত কেউ জানে না এই গাছগুলোর একইরকম আকৃতির রহস্য৷ ধারণা করা হয় ১৯৩০ সালে এখানে ৪০০ ঝাউ গাছ লাগানো হয়েছিল, যাতে এর কাঠ থেকে নৌকা তৈরি করা যায়৷ কিন্তু এখন গাছগুলো এভাবেই রয়ে গেছে৷
ছবি: picture-alliance/L. Halbauer
মস সোয়াম্প, রোমানিয়া
এই ছবিটি দেখলেই বোঝা যায় এতে শেওলা কি পরিমাণ বেশি৷ রোমানিয়ায় দারুণ সব পাহাড় আর অরণ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে৷
ছবি: Imago/Nature Picture Library
আওকিগাহারা, জাপান
জাপানের মাউন্ট ফুজির পাদদেশে এই অরণ্যের অবস্থান৷ এটাকে বলা হয় বৃক্ষের সমুদ্র৷ কেননা এটা এটা বিস্তৃত এবং রহস্যে ঘেরা৷ হাইকাররা প্রায়ই এখানে গিয়ে পথ হারিয়ে ফেলেন৷ সেজন্য গাছে গাছে চিহ্ন এঁকে রাখেন তাঁরা৷
ছবি: cc-by-sa/ajari
হোয়া-বাসিউ ফরেস্ট, রোমানিয়া
বিশ্বের অন্যতম ভূতুরে অরণ্য বলা হয় এটিকে৷ এমনকি ‘ট্রান্সিলভেনিয়ার বার্মুডা ট্রায়াঙ্গেল’-ও বলা হয় একে৷ এই জঙ্গলে গাছের আড়ালে অনেকেই ভূত দেখেছেন বলে দাবি করেন৷
ছবি: cc
ওতসারেতা ফরেস্ট, স্পেন
স্পেনের বাস্ক অঞ্চলে এর অবস্থান৷ গোর্বিয়া প্রাকৃতিক উদ্যানের একটি সুন্দর অংশ এটি৷ প্রাচীন বৃক্ষ, সেই সঙ্গে কুয়াশা ঢাকা পরিবেশ এখানে রহস্যের সৃষ্টি করেছে৷
ছবি: imago/Westend61
সিংগী ফরেস্ট, মাদাগাস্কার
ছুড়ির অরণ্য হিসেবে পরিচিত এই জঙ্গল৷ এতে রয়েছে ছুঁচালো চুনাপাথরের সারি৷ ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ৭০ মিটার উপরে এদের মাথাগুলো দেখে মনে হবে যেন সত্যিই কতগুলো ছুড়ি আকাশের দিকে মুখ তুলে আছে৷ এটাকে সবচেয়ে বিপদজনক প্রাকৃতিক উদ্যান বলা হয়৷
ছবি: cc-by-nc-sa-Ralph Kränzlein
10 ছবি1 | 10
প্রায় ১০ বছর আগে জটিল এই গবেষণা প্রকল্প শুরু হয়েছিল৷ ইউরোপের হাতে গোনা অবশিষ্ট আদিম অরণ্যগুলিতে বিজ্ঞানীরা বাস্কেটবল মাঠের মাপের কিছু গোল জায়গা বেছে নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন৷ এভাবে প্রায় এক হাজার প্লট চিহ্নিত করা হয়েছে৷ এই গোষ্ঠী প্রায় ৪০,০০০ গাছের নমুনা সংগ্রহ করেছে৷ ফলে আদিম অরণ্য সম্পর্কে ইউরোপের সবচেয়ে বড় তথ্যভাণ্ডার সৃষ্টি হয়েছে৷ মার্টিন মিকোলাশ বলেন, ‘‘প্রতি বছর আমরা প্রায় তিন মাস জঙ্গলেই কাটাই৷ দলে অনেক মানুষ থাকে৷ এই মুহূর্তে ফাগারাশ পাহাড়ে আমাদের দলে ২৫ জন রয়েছে৷ সব মিলিয়ে তিনটি দল বিভিন্ন উপত্যকায় ছড়িয়ে রয়েছে৷’’
একটি প্রশ্ন মার্টিন মিকোলাশ-কে সবচেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে৷ আদিম অরণ্য কীভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কা সামলাচ্ছে? ভবিষ্যতে এমন জঙ্গলের অস্তিত্ব কি বিপন্ন হতে পারে? তাঁর মতে, ‘‘জটিল বিষয় হলো, তাপমাত্রার চরম ফারাক বেড়েই চলেছে৷ ফলে প্রকৃতি অস্থির হয়ে উঠছে৷ গাছ উপড়ে দেওয়া ঝড়, খরা, দাবানল, পোকামাকড়ের উপদ্রব বাড়ছে৷’’
এমন প্রাকৃতিক বিপর্যয় বেড়ে চলার ফলে কি আদিম অরণ্য হুমকির মুখে পড়ছে? সেই প্রশ্নের জবাব পেতে গবেষকরা সবার আগে অতীতে ঢুঁ মারতে চান৷ বোইয়া মিকা অরণ্য গত কয়েক শতাব্দীতে কত ঘনঘন পোকার উপদ্রব বা খরার কবলে পড়েছে? এবং এই অরণ্য কত দ্রুত আবার সবকিছু সামলে নিয়েছে? এই সব প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব পাওয়া গেছে৷ গবেষণার মাধ্যমে জানা গেছে যে অতীতেও এই অরণ্যে একাধিক বিপর্যয় ঘটেছে৷ তবে তা সত্ত্বেও কোনো স্থায়ী ক্ষতি হয় নি৷