1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিলুপ্তির পথে পাখিরা

হাফসা হোসাইন১০ অক্টোবর ২০০৮

বিশ্ব জলবায়ুর নেতিবাচক পরিবর্তনের প্রভাবে বিপর্যয় ঘটছে পরিবেশের৷ হুমকির মুখে জীব বৈচিত্র্য৷ আর এতে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে চেনা জানা বহু পাখি৷

প্রতিনিয়তই হারিয়ে যাচ্ছে পরিচিত পাখিদের ডাকছবি: AP

সম্প্রতি বার্ড লাইফ ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্টে বলা হয়েছে, আবাসন হারানো ও মানুষের কর্মকান্ডের কারণে কমে যাচ্ছে বিশ্বের নানা প্রজাতির পাখি৷

ইউরোপে অতি সাধারণ প্রজাতির যেসব পাখি রয়েছে তাদের ৪৫ শতাংশের অস্তিত্বই হুমকির মুখেছবি: Anne Hormes/Alfred-Wegener-Institut

প্রতিনিয়তই হারিয়ে যাচ্ছে পরিচিত পাখিদের ডাক৷ পাখির কলতানে ঘুম ভাঙ্গা যেন হয়ে উঠছে রূপকথার গল্প৷ বার্ড লাইফ ইন্টারন্যাশনালের জরিপে বেরিয়ে এসেছে খুবই উদ্বেগজনক তথ্য৷ দেখা যাচ্ছে, ইউরোপে অতি সাধারণ প্রজাতির যেসব পাখি রয়েছে তাদের ৪৫ শতাংশের অস্তিত্বই হুমকির মুখে৷ দ্রুত কমে যাচ্ছে তাদের সংখ্যা৷ গত ২৬ বছরে ইউরোপের ২০টি দেশে ৫৬ প্রজাতির অতি চেনা পাখি এখন আর তেমন চোখে পড়ে না৷ অস্ট্রেলিয়ার অবস্থা আরো ভয়াবহ৷ সেখানে জলচর পাখিদের ৮০ শতাংশেরও বেশি এখন বিলুপ্তির পথে৷ আফ্রিকায় সংরক্ষিত এলাকার বাইরে ব্যাপক হারে কমে যাচ্ছে শিকারি পাখির সংখ্যা৷ এশিয়ায় বিপন্ন অতিথি পাখিরা৷ মহাদেশটির জলচর অতিথি পাখিদের ৬২ শতাংশই বিলুপ্ত হয়ে গেছে কিংবা বিলুপ্ত হতে চলেছে৷ পাখি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর মাধ্যমেই এটা পরিস্কার, ২০১০ সালের মধ্যে জীব বৈচিত্র্যের বিলুপ্তি রোধে দেয়া প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছে সরকারগুলো৷

বার্ড লাইফ ইন্টারন্যাশনালের প্রধান বিজ্ঞানী আলি স্ট্যাটার্সফিল্ডের মতে, পাখিসহ বিশ্ব জীব বৈচিত্র্যের এই বিপন্ন অবস্থার মূল কারণ পরিবেশ বিপর্যয়৷ এছাড়া মানুষের কর্মকান্ডও দায়ি৷

পাখিদের বিলুপ্তির অন্যতম বড় কারণ কৃষি জমি ব্যবহার ও কৃষি পদ্ধতিতে পরিবর্তন৷ আর এ কারণে প্রজনন ক্ষেত্র হারাচ্ছে অতিথি পাখিরা৷ গবেষণায় দেখা গেছে, ইউরোপের টার্টল-ডাভ নামে এক ধরনের ঘুঘুর সংখ্যা কমে গেছে ৭৯ শতাংশ৷ বিরল প্রজাতির নানা জাতের পাখিও বিলুপ্ত হতে চলেছে৷ আশংকা করা হচ্ছে, বিশ্বজুড়ে ১,২২৬ রকম বিরল পাখির মধ্যে ১৯০টিই খুব দ্রুত হারিয়ে যাবে৷

পাখি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর মাধ্যমেই এটা পরিস্কার, ২০১০ সালের মধ্যে জীব বৈচিত্র্যের বিলুপ্তি রোধে দেয়া প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছে সরকারগুলোছবি: AP

ভারতীয় উপমহাদেশে অতি চেনা পাখিদের মধ্যে হঠাত্‌ করেই প্রায় বিলুপ্ত হয়েছে সাদা পুচ্ছের শকুন৷ গত কয়েক বছরে এই পাখির সংখ্যা কমে গেছে ৯৯.৯ শতাংশ৷ গবেষণায় দেখা গেছে, রোগ ব্যাধি সারাতে গবাদি পশুর দেহে ডিক্লোফেনাক জাতীয় ড্রাগের ব্যাপক হারে ব্যবহারের জন্যই এই অবস্থা৷ কারণ মৃত পশুর দেহেও থেকে যায় ডক্লোফেনাক৷ যা খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে শকুন৷ ভারতে এখন এর ব্যবহার বন্ধের পদক্ষেপ নেয়া হলেও স্থানীয় পর্যায়ে চলছে ক্লোফেনাকের ব্যবহার৷

ভালো নেই সামুদ্রিক পাখিরাও৷ সাগরে মাছ ধরার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় দুর্দশায় পড়েছে অ্যালব্যাট্রসসহ নানা পাখি৷ খাবারের অভাব ও মাছ ধরার জালে আটকা পড়ে প্রতি বছরই মরে যাচ্ছে ১ লাখ করে ধীর প্রজননের পাখি৷ অবশ্য এরইমধ্যে পাখিদের বাঁচাতে নানা পদক্ষেপও নেয়া হচ্ছে৷ অ্যালব্যাট্রস রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন ব্রিটেনের প্রিন্স চার্লসসহ অনেকেই৷

তবে পাখি বিশেষজ্ঞদের মতে, জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় আরো বেশি মনোযোগের পাশাপাশি ব্যয় করতে হবে অর্থও৷ তাঁরা বলছেন, আফ্রিকাতে যদি প্রতি বছর কেবল ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করা যায় তবে রক্ষা পাবে সেখানকার ৯০ শতাংশ প্রাণী৷ তাই প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানাচ্ছেন পরিবেশবিদরা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ