বিলুপ্তির পথে বানর প্রজাতি
২৯ আগস্ট ২০০৮এ জন্য বনাঞ্চল উজাড় আর ব্যাপক হারে পশু শিকারকে দায়ি করছেন বিশেষজ্ঞরা৷
আইইউসিএন এর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গঠনগত দিক থেকে মানুষের সঙ্গে মিল রয়েছে এমন স্তন্যপায়ী প্রাণী বা প্রাইমেটের সংখ্যা যে হারে কমছে তা সত্যিই উদ্বেগজনক৷ বিপন্ন এসব প্রাণীর একটি রেড লিস্টও তৈরি করেছেন তারা৷ তালিকায় দেখা গেছে, শিম্পাঞ্জি, ওরাং-ওটাং, বানর এবং লেমুরের মতো ৬৩৪ প্রজাতির প্রাণীর ৪৮ শতাংশের অস্তিত্বই এখন ঝুঁকির মুখে৷ অথচ ৫ বছর আগেও এই সংখ্যা ছিলো ৩৯ শতাংশ৷
এক্ষেত্রে এশিয়ার চিত্র সবচেয়ে ভয়াবহ৷ এখানকার ৭১ শতাংশ প্রাইমেটই বিলুপ্তির পথে৷ আর আফ্রিকায় এই হার ৩৭ শতাংশ৷ প্রাইমেটদের বিলুপ্তির দিক দিয়ে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ কম্বোডিয়া৷ দেশটির ৯০ ভাগ বানর প্রজাতির অস্তিত্বই হুমকির মুখে৷
প্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বে বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ্যের যোগান দিতে এবং পরিবেশ দূষণ রোধে বায়োফুয়েল উত্পাদনের জন্য ক্রমেই বাড়ছে ফসলী জমির চাহিদা৷ সেজন্য দেদারসে গাছ কেটে উজাড় করা হচ্ছে বনভূমি৷ তার উপর কাঠ চোরাকারবারিদের দৌরাত্ম্য তো আছেই৷ আর এসব কারণে ক্রমেই আবাসন হারাচ্ছে প্রাইমেটরা৷
প্রাইমেটদের বিলুপ্তির আরেকটি বড় কারণ হলো, লোভনীয় খাবার হিসেবে এদের চাহিদা বৃদ্ধি৷ আফ্রিকার কোন কোন দেশে শিম্পাঞ্জি, গরিলা আর উল্লুকের মাংশ খুবই জনপ্রিয়৷ এমনকি গরু , মুরগি কিংবা মাছের চেয়েও এদের দাম অনেক বেশি৷
এছাড়া পোষা প্রাণী হিসেবে প্রাইমেটদের চাহিদা বাড়তে থাকায় বেড়ে গেছে বন্যপ্রাণীর অবৈধ ব্যবসাও৷ চীনাদের সনাতন চিকিত্সা পদ্ধতিতেও প্রাইমেটদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে৷ সেই তা মেটাতেও চলছে বন্যপ্রাণী নিধন৷
প্রাণী বিশেষজ্ঞদের আশংকা, মানুষের এসব বৈরি আচরণের কারণে এরইমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে রেড কলোবাস নামে বিরল ধরনের বানেরর দুটি প্রজাতি৷ গত ২৫ বছরে বভিয়ার প্রজাতির কোন রেড কলোবাসই দেখা যায়নি৷ আর ১৯৭৮ সালে একমাত্র জীবিত মিস ওয়াল্ড্রন রেড কলোবাসটির মৃত্যু হয়েছে বলে তাদের আশংকা৷
প্রাইমেটদের দ্রুত বিলুপ্তির কারণে জী্ব বৈচিত্র্য হারানোর পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্যও নষ্ট হচ্ছে খুব দ্রুত, এমনই আশংকা প্রাণী বিশেষজ্ঞদের৷