বল ট্যাম্পারিংয়ের অভিযোগে পাওয়া নিষেধাজ্ঞা পেরিয়ে সবে অস্ট্রেলিয়া দলে ফিরেছেন স্টিভেন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নার৷ কিন্তু বিশ্বকাপ শুরু হতেই অ্যাডাম জাম্পার বিরুদ্ধে একই অভিযোগে সোশাল মিডিয়ায় চলছে তোলপাড়৷
বিজ্ঞাপন
ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ৷ বল করবেন স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা৷ রানআপ শুরুর আগে বল-সমেত হাত ঢুকিয়ে দিলেন পকেটে৷ একবার নয়, দু'বার নয় বেশ কয়েকবার দেখা গেল এমন দৃশ্য৷ সাধারণ দর্শকদের সন্দেহ তো হবেই! ব্যস, সন্দেহ থেকে সোশাল মিডিয়ায় আলোচনা-সমালোচনা, শেয়ারের পর শেয়ার, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভাইরাল হয়ে গেল সেই ভিডিও৷
নানাজন নানাভাবে শেয়ার করেছেন সেই ভিডিও৷ লালনটপ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে এক দিনেই সেই ভিডিও এবং তার বিশ্লেষণ দেখা হয়েছে সাত লাখেরও বেশিবার৷ সংবাদ মাধ্যমেও উঠে এসেছে জাম্পাকে নিয়ে আলোচনার ঝড়ের খবর৷ তবে কি সত্যিই করেছেন জাম্পা? আইসিসি বিষয়টি নিয়ে এখনো মাথা ঘামা্য়নি৷ ভারতীয় দলও কোনো অভিযোগ করেনি৷ কেন সবাই নীরব? লালনটপের বিশ্লেষণ– সন্দেহের অবকাশ থাকলেও আসলে শীত ছিল বলে হাত গরম করতেই হয়ত বারবার হাত পকেটে রাখছিলেন জাম্পা আর সে কারণেই হয়ত সোশাল মিডিয়ায় আলোচনা-সমালোচনার মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকছে বিষয়টি৷
এসিবি/কেএম
ক্রিকেটে ‘বল ট্যাম্পারিং’
দক্ষিণ আফ্রিকায় অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার ব্যানক্রফটের বদৌলতে আবারো আলোচনায় বল ট্যাম্পারিং৷ ক্রিকেটে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা নতুন নয়৷ এসব নিয়ে ঝড় বয়ে গেছে আগেও৷ ছবিঘরে দেখুন তেমন কয়েকটি ঘটনা৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
মাইক আথার্টন, লর্ড’স ১৯৯৪
ইংলিশ অধিনায়ক থাকাকালে ১৯৯৪ সালে বল ট্যাম্পারিংয়ের অভিযোগ মাথায় নিয়ে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছিলেন আথার্টন৷ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে স্বাগতিকরা টেস্ট খেলছিল লর্ড’সে৷ ধুলো দিয়ে বল ঘষায় তিনি অভিযুক্ত হয়েছিলেন৷ তাঁর ব্যাখ্যা ছিল, বল ও হাত শুষ্ক রাখতে উইকেট থেকে ধুলো নিয়ে পকেটে রেখেছিলেন তিনি৷ অস্ট্রেলিয়ান ম্যাচ রেফারি পিটার বার্জের কল্যাণে অবশ্য ২ হাজার পাউন্ড জরিমানা গুনেই নিষ্কৃতি পান তিনি৷
ছবি: picture-alliance/Photoshot
শচীন টেন্ডুলকার, পোর্ট এলিজাবেথ ২০০১
শচীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি আম্পায়ারকে না জানিয়ে বল থেকে ঘাস পরিষ্কার করেছেন৷ সেজন্য তাঁকে পরের ম্যাচে নিষিদ্ধ করেন ইংলিশ ম্যাচ রেফারি মাইক ডেনিস৷ এমনকি ম্যাচে অতিরিক্ত আপিল করায় পরের ম্যাচে আরো পাঁচ ভারতীয় ক্রিকেটারকে নিষিদ্ধ করেন৷ ভারতের আপিলে সেই সাজা শুধু বাতিল হয়৷ ডেনিসকে আম্পায়ারের দায়িত্বে রেখে ক্রিকেট খেলতে অস্বীকৃতি জানায় ভারত৷ বিতর্ক এড়াতে আইসিসি পরের ম্যাচটি ‘আনঅফিসিয়াল’ ঘোষণা করে৷
ছবি: Reuters
ইনজামাম উল-হক, ওভাল ২০০৬
ব্যাপক আলোচিত সিরিজের চতুর্থ টেস্টে ইনজামামের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে বল ট্যাম্পারিংয়ের৷ চতুর্থ দিনে দুই ফিল্ড আম্পায়ার ড্যারেল হেয়ার ও বিলি ডকট্রোভ হঠাৎ করে বল পরিবর্তন করেন এবং ইংল্যান্ডের পক্ষে পাঁচ রান পেনাল্টি দেন৷ কিন্তু ইনজামাম তাঁর দলকে নিয়ে ফিল্ডিং করতে অস্বীকৃতি জানালে ইতিহাসে প্রথমবার কোনো টেস্ট বাজেয়াপ্ত (ফোরফিট) হয়৷ পরে ইংলিশদের জয়ী ঘোষণা করা হলেও হেয়ারের ক্যারিয়ার সেখানেই শেষ হয়ে যায়৷
ছবি: Getty Images
শহীদ আফ্রিদি, পার্থ ২০১০
পার্থে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজের পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে ঘটে এ ঘটনা৷ টেলিভিশন ক্যামেরায় দেখা যায়, আফ্রিদি বল কামড়ে ধরেছেন৷ টিভি আম্পায়ার ফিল্ড আম্পায়ারদের বিষয়টি জানালে বল পরিবর্তন করা হয়৷ পাকিস্তান সিরিজটি ৫-০-তে হারে৷ আফ্রিদির ব্যাখ্যা ছিল, বলের ‘ঘ্রাণ’ নিচ্ছিলেন তিনি৷ তাঁকে পরের দুই টি-টোয়েন্টি ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
ভের্নন ফিল্যান্ডার, গল ২০১৪
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেই টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার এই পেসার নখ দিয়ে আঁচড়ে বলের ছাল তুলে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন৷ ক্যামেরায় তা ধরাও পড়েছিল৷ পরে স্বাগতিকদের অভিযোগের মুখে ম্যাচের ৭৫ শতাংশ ফি জরিমানা গোনেন ফিল্যান্ডার৷
ছবি: Imago/Colorsport/A. Cowie
ডু প্লেসিস, হোবার্ট ২০১৬
মুখের চুইংগামের রস দিয়ে বল ‘শাইন’ করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক৷ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচে ঘটেছিল ঘটনাটি৷ সে কারণে তাঁকে পুরো ম্যাচ ফি জরিমানা গুণতে হয়৷ অবশ্য এই ম্যাচসহ সিরিজটিই জিতে নিয়েছিল ডু প্লেসিসের দল৷ ডু প্লেসিস এর আগেও ২০১৩ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে বল ট্যাম্পারিং করেছিলেন৷