এই শুক্রবারকে বলা হচ্ছে 'ফ্যাবুলাস ফ্রাইডে'। কারণ, শুক্রবার রাতেই ব্রাজিল-ক্রোয়েশিয়া এবং আর্জেন্টিনা-নেদারল্যান্ডস ম্যাচ।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বিজ্ঞাপন
মেসি-নেইমারদের শেষ আটে ওঠার লড়াই শুক্রবার জাগিয়ে রাখবে উপমহাদেশের ফুটবলপ্রেমী মানুষকে। ব্রাজিলের খেলা প্রথমে। আর্জেন্টিনার খেলা মধ্যরাত পেরিয়ে। নক-আউট পর্বের খেলা। সামনে জোরদার প্রতিদ্বন্দ্বী। ফলে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।
ব্রাজিলের সামনে গতবারের ফাইনালে খেলা ক্রোয়েশিয়া। আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ ইউরোপের শক্তিশালী দল নেদারল্যান্ডস। গ্রুপ পর্যায়ের খেলায় নেইমারের ব্রাজিল এবং মেসির আর্জেন্টিনা একটি করে ম্যাচ হেরেছে। ব্রাজিল হেরেছে ক্যামেরুনের কাছে এবং আর্জেন্টিনা হেরেছে সৌদি আরবের কাছে। নক আউট পর্বে হার মানে এবারের মতো বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয়া। তাই দুইটি খেলাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর যেহেতু উপমহাদেশে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সমর্থক সবচেয়ে বেশি, সেজন্য শুক্রবারের রাত তাদের খেলা দেখে, নিজের দলের সমর্থনে গলা ফাটিয়ে কাটাতে হবে।
ঢাকায় ফুটবল বিশ্বকাপের যত আনন্দ-উন্মাদনা
মরুভূমির দেশ কাতারে শুরু হয়েছে ২২তম ফিফা বিশ্বকাপ। ফুটবলের এই আসরকে ঘিরে ঢাকায় দেখা যাচ্ছে নানা ধরনের উন্মাদনা। তার কিছু চিত্র থাকছে এই ছবিঘরে।
ছবি: Rajib Paul/DW
দেয়ালে বিশ্বকাপ
বিশ্বকাপ উদযাপনের অংশ হিসেবে পুরান ঢাকার টিকাটুলির কেএম দাস লেনের একটি গলি দেয়ালচিত্রে রঙিন হয়ে উঠেছে। এখানে দেখা যাচ্ছে, সাত দেশের বিশ্বখ্যাত ফুটবলারদের চোখ রয়েছে বিশ্বকাপ ট্রফিতে।
ছবি: Rajib Paul/DW
তরুণদের আবেগ
টিকাটুলির স্থানীয় তরুণরা নিজ উদ্যোগে তারকা ফুটবলারদের মুখাবয়ব এঁকেছেন। বর্তমান ফুটবলারদের পাশাপাশি প্রয়াত কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনা ও সাবেক ব্রাজিলিয়ান তারকা রোনালদিনিয়োকেও সম্মান জানিয়েছেন তারা।
ছবি: Rajib Paul/DW
ছবি তোলার স্পট
কেএম দাস লেনের গলিতে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের পতাকার রঙে পাখির ডানা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। দেয়ালচিত্রের এই অংশটি এখন স্থানীয়দের কাছে ছবি তোলার আকর্ষণীয় স্পটে পরিণত হয়েছে। চাইলে সেলফিও তোলা যেতে পারে কিন্তু!
ছবি: Rajib Paul/DW
ঢাবিতে বিশ্বকাপের আমেজ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ঝুলছে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলসহ বিভিন্ন দেশের পতাকা। মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে এই সাজ সাজ রব চোখে পড়ার মতো।
ছবি: Rajib Paul/DW
রঙিন করিডোর
মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের অভ্যন্তরেও বিশ্বকাপের আমেজ। নিজেদের প্রিয় দল আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের পতাকায় করিডোর সাজিয়ে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।
ছবি: Rajib Paul/DW
মাঠের দেয়ালচিত্র
মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের পাশের একটি মাঠে বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখানো হবে বড় পর্দায়। এজন্য এখানকার দেয়ালে ব্রাজিল ও বাংলাদেশের পতাকা আঁকা হয়েছে। মাঠের গাছে আর্জেন্টিনার পতাকা ঝুলিয়ে রেখেছেন সমর্থকরা।
ছবি: Rajib Paul/DW
বেচাকেনা জমজমাট
গুলিস্তানে ফুটপাত মার্কেটে বিভিন্ন দেশের জার্সির বেচাকেনার রীতিমতো জমজমাট আয়োজন চোখে পড়েছে। দোকানিরা ডয়চে ভেলেকে জানালেন, আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের জার্সি কেনার দিকেই ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি।
ছবি: Rajib Paul/DW
শিশু-কিশোরদের আনন্দ
বড়দের পাশাপাশি ফিফা বিশ্বকাপ যেন আলাদা আনন্দ যোগ করেছে শিশু কিশোরদের মনে। প্রিয় দলের জার্সি কিনতে চায় তারাও। গুলিস্তান বেলপট্টিতে সন্তানের আবদার মেটাতে কেনাকাটা করতে এসেছেন একজন মা।
ছবি: Rajib Paul/DW
দর্জিদের ব্যস্ততা
বিশ্বকাপকে সামনে রেখে পতাকা সেলাইয়ে ব্যস্ত দর্জিরা। শনির আখড়ার কদমতলীতে একটি কারখানায় বিভিন্ন দেশের পতাকা তৈরি করতে দেখা গেছে।
ছবি: Rajib Paul/DW
ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতা
কারখানা থেকে পতাকা সংগ্রহ করে অনেকে ভ্যানে করে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করেন। শনির আখড়া এলাকায় এই ছবিটি তোলা।
ছবি: Rajib Paul/DW
ক্রেতাদের ভিড়
বিশ্বকাপের আনন্দে মাততে পতাকা কিনতে দোকানে দোকানে ভিড় করছেন ক্রেতারা। আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের পতাকার চাহিদা বেশি বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে এমনই ছবি ধরা পড়েছে আলোকচিত্রীর ক্যামেরায়।
ছবি: Rajib Paul/DW
শহরের ফেরিওয়ালা
ঢাকায় এখন এদিক-সেদিক পতাকা হাতে ফেরিওয়ালাদের দেখা যাচ্ছে। নবাবপুরের কাপ্তানবাজারে তাদেরই একজন আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরছেন যেন!
ছবি: Rajib Paul/DW
বড় পতাকার প্রতিযোগিতা
কে কার চেয়ে বড় পতাকা রাখবে তা নিয়ে সমর্থকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলে। গুলিস্তানে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের চার তরুণ প্রিয় দলের পতাকা কেনার আগে মাপ দেখে নিচ্ছে। কারণ, বিশ্বকাপে প্রিয় দলের পতাকাটি নিখুঁত হওয়া চাই।
ছবি: Rajib Paul/DW
সব শ্রেণির মানুষের আগ্রহ
নিম্ন-আয়ের মানুষরাও বিশ্বকাপ জ্বরে ভুগছেন। আফতাব নগরে একজন রিকশাচালক প্রিয় দলের তিনটি পতাকা সাজিয়েছেন নিজের বাহনে।
ছবি: Rajib Paul/DW
ছোট পর্দায় খেলা
বিশ্বকাপের ম্যাচ সরাসরি দেখতে অনেকে টেলিভিশন কিনছেন। ঢাকার পুরানা পল্টনে ক্রেতাদের আকর্ষণের জন্য বিভিন্ন দলের জার্সি ও ফুটবল দিয়ে দোকানঘর সাজানো হয়েছে ।
ছবি: Rajib Paul/DW
15 ছবি1 | 15
গতবারের ফাইনালিস্ট ক্রোয়েশিয়া শক্তিশলী দল। ব্রাজিলের বিরুদ্ধে নামার আগে কোচ বলেছেন, ''যদি আপনি ব্রাজিলের ফুটবলারদের দেখেন, তাদের স্কিল, মান ও মূল্যের কথা ভাবেন, তাহলে বিপক্ষ হিসাবে আতঙ্কিত হবেন। আমরা মাঠে সুযোগের অপেক্ষায় থাকব। আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে নামব। এই বিশ্বাস নিয়ে নামব যে আমরা জিততে পারি। ব্রাজিলের বিরুদ্ধে খেলাটা মাঠে উপভোগ করতে চাই।''
আর্জেন্টিনা-নেদারল্যান্ডস
এর আগে বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ও নেদারল্যান্ডস যতবার মুখোমুখি হয়েছে, ততবারই অত্যন্ত উপভোগ্য খেলা হয়েছে। কিন্তু এবার আলাদা লড়াই। ৩৫ বছর বয়সি মেসির সম্ভবত এটাই শেষ বিশ্বকাপ। এই সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলার মেসি কখনও বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পাননি। তাই শেষ বিশ্বকাপে জয়ের আনন্দ পেতে মরিয়া তিনি।
বিশ্বকাপ: কলকাতা বিভক্ত ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও পর্তুগালে
কলকাতা এখন ফুটবল জ্বরে ভুগছে। ঘুড়ি থেকে দেওয়াল ভরে গেছে বিশ্বকাপের ছবি আর পোস্টারে। অলি-গলি ঘুরে দেখলো ডিডাব্লিউ।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
ফুটবল পাগল
ফুটবল পাগল বাঙালি। বিশ্বকাপ শুরু হতে না হতেই কলকাতার রাস্তা ভরে গেছে বিভিন্ন দেশের পতাকায়। রাত জেগে ম্যাচ দেখছে বাঙালি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
রাস্তার উপর সূচি
উত্তর কলকাতার রাস্তার উপর টাঙানো হয়েছে বিশ্বকাপের সূচি। কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় বাঁশ বেঁধে এভাবেই বিশ্বকাপের সূচি টাঙিয়ে দেওয়া হয়। রাস্তার উপরেই লাগানো হয় জায়ান্ট স্ক্রিন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
দেওয়াল চিত্র
দেওয়ালে দেওয়ালে এখনো হাতে আঁকা হয় ফুটবলারদের ছবি। শুধুমাত্র এই বিশ্বকাপের সময়েই কলকাতার রাজনৈতিক দেওয়াল খেলার দেওয়ালে পরিণত হয়।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
কলকাতার নেমার, রোনাল্ডোরা
ভোটের সময় বড় বড় কাটআউট টাঙানো হয় রাজনীতিবিদদের। এখন সেই জায়গাতে বিভিন্ন দেশের ফুটবলাররা। তবে কলকাতার ফুটবল ভক্তদের অধিকাংশই ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা এবং পর্তুগালের সমর্থক।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
পতাকায় ঢেকেছে শহর
পাড়ায় পাড়ায় এখন ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, পর্তুগাল। এভাবেই রাস্তাজোড়া পতাকা দেখা যায় সর্বত্র।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
জার্সিতেও ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা
বিকেলে ক্লাবের সামনে ফুটবল খেলছে যুবকরা। তাদের গায়েও ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনার জার্সি। কলকাতার ময়দানে খুব কম টাকায় এমন জার্সি কিনতে পাওয়া যায়।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
কলকাতার মেসি
দেওয়ালে মেসির ছবি আঁকছেন সমর্থকরা। অধিকাংশ ক্লাবের গায়ে এখন এমন ছবি দেখতে পাওয়া যাবে। বছরের অন্য সময় এই ক্লাবগুলি সেজে থাকে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান-মহামেডানের পতাকায়।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বিশ্বকাপ ঘুড়ি
৫৬ বছর ধরে কলকাতায় ঘুড়ি বিক্রি করছেন অজিত দত্ত। তার ঘুড়ির দোকান কলকাতায় বিখ্যাত। প্রত্যেক বছর ফুটবল বিশ্বকাপের সময় খেলায় অংশগ্রহণকারী দলগুলির পতাকার আদলে ঘুড়ি তৈরি করেন তিনি। এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
ম্যারাডোনাকে মনে রেখেছে কলকাতা
এই বিশ্বকাপে সব আছে, শুধু ম্যারাডোনা নেই। রাস্তা ব্রাজিলের হলেও দেওয়ালে ম্যারাডোনাকে স্মরণ করেছে উত্তর কলকাতার এই গলি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
9 ছবি1 | 9
আবার তিনবার ফাইনালে উঠেও একবারও বিশ্বকাপ জিততে পারেনি নেদারল্যান্ডস। তাই এবার তারা বিশ্বকাপ জিততে চাইছে। নেদারল্যান্ডসের ম্যানেজার জানিয়েছেন, তারা মেসিকে থামাতে চান। তাদের কৌশল যে কোনো দলের বিরুদ্ধে জয় এনে দিতে সক্ষম। তাই জয়ের আশা নিয়েই তারা মাঠে নামবেন।
বিশ্বকাপের এই জমজমাট লড়াইয়ে কোনো দেশ বিপক্ষকে এক ইঞ্চি জমিও ছেড়ে দিতে চায় না। তাই মহাশুক্রবারে মহারণ দেখার রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষায় থাকবেন ফুটবলপ্রেমীরা।