অস্ট্রেলিয়ায় হোটেল ও খাবার নিয়ে সমানে অভিযোগ করছে ভারতীয় দল। মঙ্গলবারও প্র্যাকটিসের পর খাবার নিয়ে তারা অসন্তুষ্ট।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার প্র্যাকটিসে হার্দিক পান্ডিয়া, সূর্যকুমার যাদব, অক্ষর প্যাটেল-সহ সব ফাস্ট বোলারদের বিশ্রাম দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বাকি ভারতীয় প্লেয়াররা বেশ কয়েকঘণ্টা ধরে কঠোর অনুশীলন করেন। কিন্তু তারপর তারা খাবার টেবিলে এসে দেখেন সেখানে স্যান্ডউইচ, ফল ও ফলাফল রাখা। ক্রিকেটাররা তখন গরমাগরম খাবারের প্রত্যাশা করছিলেন। কিন্তু তারা তা পাননি।
ফলে প্লেয়াররা ক্ষুব্ধ হন। অধিকাংশ প্লেয়ার হোটেলে ফিরে গিয়ে খাবার খান। বিসিসিআইয়ের এক কর্মকর্তা সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে জানিয়েছেন, প্লেয়াররা খাবার বয়কট করেননি, কয়েকজন ফল ও ফলাফল খান। কিন্তু সকলেরই বক্তব্য ছিল, মধ্যাহ্নভোজের সময় হয়ে গেছে। তাই তারা হোটেলে ফিরেই খাবেন।
নিজে থেকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের অধিনায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বিরাট কোহলি। আমিরাতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলার সময় তিনি এই ঘোষণা করেন। তিনি বলেছেন, বোর্ডকে আগে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন, রোহিত শর্মাকেও জানিয়েছিলেন। সেইসময়ের কোচ রবি শাস্ত্রীর সঙ্গেও তার কথা হয়েছিল। বিরাট জানিয়ে দেন, তিনি টেস্ট এবং একদিনের ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব করবেন।
ছবি: AFP/D. Sarkar
কোহলির জায়গায় রোহিত
এরপর কোহলির জায়গায় রোহিত শর্মাকে প্রথমে ভারতের টি-টোয়েন্টি টিমের অধিনায়ক করা হয়। কিছুদিন পর একটা বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, একদিনের ক্রিকেটেও রোহিতই অধিনায়ক হবেন। বোর্ডের যুক্তি ছিল, সাদা বলের ক্রিকেটে একজনই অধিনায়ক থাকা উচিত।
ছবি: Getty Images/D. Sarkar
সৌরভের সাফাই
কোহলির কাছ থেকে এইভাবে একদিনের ক্রিকেটের অধিনায়কের পদ ছিনিয়ে নেয়ার পর প্রবল বিতর্ক শুরু হয়। তখন সৌরভ জানান, কোহলিকে জানিয়েই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে। আর তিনি কোহলিকে টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব না ছাড়ার অনুরোধ করেছিলেন। কোহলি সেটা শোনেননি। সাদা বলে একজন অধিনায়ক থাকা উচিত বলে নির্বাচকরা রোহিতকে অধিনায়ক করেছেন।
ছবি: Getty Images/AFP/P. Paranjpe
বিরাটের জবাব
এরপর বোমা ফাটান বিরাট কোহলি। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা যাওয়ার আগে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সৌরভ তাকে টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব না ছাড়ার কোনো কথা বলেননি। আর একদিনের ক্রিকেটে রোহিতকে অধিনায়ক ঘোষণার দেড় ঘণ্টা আগে তাকে সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। সেটাও দক্ষিণ আফ্রিকায় দল নির্বাচন নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলার পর একেবারে শেষে।
ছবি: Getty Images/A. Davidson
'বোর্ড দেখছে'
প্রশ্ন হলো, কে ঠিক বলছেন, সৌরভ না বিরাট? সৌরভ এরপর জানিয়েছেন, বোর্ড বিষয়টি দেখছে। তবে অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের মাঝখানে বোর্ড কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না। দল দেশে ফেরার পর নিতে পারে।
ছবি: privat
গাভাস্কারের মতে
সুনীল মনোহর গাভাস্কার মনে করেন, বিরোধের কারণ, কোহলির বিবৃতি। টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব ছাড়ার সময় কোহলি বলেছিলেন, তিনি টেস্ট ও একদিনের ক্রিকেটে অধিনায়ক থাকবেন। তার বলা উচিত ছিল, এই দুই ফরম্যাটে অধিনায়ক থাকতে তার কোনো অসুবিধা নেই। কোহলির কথায় বোর্ড চটেছে বলে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ছবি: picture alliance/AP Photo
অশ্বিন বনাম শাস্ত্রী
ভারতীয় স্পিনারদের মধ্যে অন্যতম রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তিনি সম্প্রতি ক্রিকইনফোডটকমে বলেছেন, ২০১৮-১৯-এর অস্ট্রেলিয়া সফরের সময় কোচ রবি শাস্ত্রীর একটি কথায় ভেঙে পড়েছিলেন। সে সময় একটি টেস্টে স্পিনার কুলদীপ যাদব পাঁচ উইকেট নেয়ার পর রবি শাস্ত্রী বলেছিলেন, কুলদীপই এখন ভারতের সেরা স্পিনার। ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সফল বোলার অশ্বিন এই কথাটা মেনে নিতে পারেননি বলে একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন।
ছবি: Getty Images/AFP/P. Parks
শাস্ত্রীর জবাব
রবি শাস্ত্রী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, সবার টোস্টে মাখন মাখানো একজন কোচের কাজ নয়। তার কাজ, কোনো এজেন্ডা ছাড়া ঠিক তথ্য পরিবেশন করা। কুলদীপ সেই টেস্টে অসাধারণ বল করেছিলেন এবং পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন। তিনি এত ভালো বল করেছিলেন বলেই ওই কথাগুলো বলেছিলেন বলে জানিয়েছেন শাস্ত্রী।
ছবি: dapd
শাস্ত্রী খুশি
শাস্ত্রীর বক্তব্য, তার ওই মন্তব্যের ফলে অশ্বিন আরো ভালোভাবে নিজের কাজটা করেছেন। তাই তিনি খুশি। শাস্ত্রীর দাবি, তার মন্তব্যের পরই অশ্বিন নতুন কিছু করার চেষ্টা করেছেন। উপরের ছবিতে মহম্মদ শামির সঙ্গে শাস্ত্রী।
ছবি: IANS
9 ছবি1 | 9
ওই কর্মকর্তার মতে, ''আসলে আইসিসি গরম খাবারের ব্যবস্থা করছে না। দ্বিপাক্ষিক সিরিজের সময় অন্য দেশের বোর্ড ক্রিকেটারদের জন্য গরম ভারতীয় খাবার রাখে। কিন্তু আইসিসি সব দেশের প্লেয়ারদের জন্য একই খাবার রাখে। কিন্তু দুই ঘণ্টা ধরে মাঠে কঠোর অনুশীলনের পর শসা, টমেটো এবং অ্যাভাকেডো দিয়ে ঠাণ্ডা স্যান্ডউইচ নিঃসন্দেহে যথেষ্ট খাবার নয়।''
বিসিসিআই এখন কী ব্যবস্থা নেয়, সেটাই দেখার।
হোটেল নিয়ে
এর আগে হোটেল নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন ভারতীয় প্লেয়াররা। প্র্যাকটিস ম্যাচ চলার সময় অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তানকে পাঁচ তারা হোটেলে রাখা হয়। ভারতীয় টিমকে রাখা হয়েছিল চার তারা হোটেলে। তা নিয়েও ক্ষোভ ছিল ভারতীয় টিমের।