বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জার্মান দলের ক্যাপ্টেন ফিলিপ লাম জাতীয় দল থেকে অবসর নিতে যাচ্ছেন৷ মাত্র ৩০ বছর বয়সে তাঁর অবসরের ঘোষণায় বিস্মিত ফুটবল ভক্তরা৷
বিজ্ঞাপন
জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের এই ডিফেন্ডার জাতীয় দলের হয়ে ১১৩ বার মাঠে নেমেছেন৷ চতুর্থ বার জার্মানিকে বিশ্বজয়ের পথে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি৷ জার্মান সংবাদ সংস্থা ডিপিএ-কে খবরের নিশ্চয়তা জানিয়েছেন লামের এজেন্ট রোমান গ্রিল৷ লামের বরাত দিয়ে বলেন, লাম বলেছেন, ব্রাজিল বিশ্বকাপ চলার সময়ই তিনি ভেবেছিলেন এই বিশ্বকাপই তাঁর শেষ বিশ্বকাপ এবং চূড়ান্ত টুর্নার্মেন্ট৷'
স্কাই স্পোর্টস ডয়চলান্ডের টুইটার ফিডে লাম লিখেছেন, ‘‘এটা আমার জন্য সঠিক সময়৷ জাতীয় দলের সাথে প্রতিটি মুহূর্ত আমি ভীষণভাবে উপভোগ করেছি৷''
জার্মান ফুটবল ফেডারেশনও তাদের ওয়েবসাইটে এই খবরটি নিশ্চিত করেছে৷ ডিএফবি প্রেসিডেন্ট ভল্ফগাঙ নিয়ার্সবাখ বলেছেন, ‘‘শুক্রবার সকালে ফিলিপ আমাকে ফোন করেছিলেন এবং ব্যক্তিগতভাবে আমাকে অবসরের কথা জানিয়েছেন৷ লামের কথা শুনে আমার মনে হয়েছে, তাঁর মত পরিবর্তনের চেষ্টা করে কোনো লাভ নেই৷'' তিনি আরো বলেন, জাতীয় দলে ১০ বছর ধরে খেলা ফিলিপ অসাধারণ একজন খেলোয়াড়ই নন, খেলোয়াড়দের জন্য আদর্শ৷ ডিএফবি-র জন্য ফিলিপ যা করেছেন, সে জন্য তিনি তাঁকে ধন্যবাদ জানান৷
পারলেন না মেসি, জয়ী জার্মানি
বিশ্বসেরা ফুটবলার হলেও দেশকে বিশ্বকাপ এনে দিতে পারলেন না লিওনেল মেসি৷ বরং টিম হিসেবে খেলে জিতেছে জার্মানি৷ বদলি খেলোয়াড় গোটৎসের গোলে নিশ্চিত হয় চতুর্থ বিশ্বকাপ৷ ফাইনাল নিয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছবি: picture-alliance/dpa
চতুর্থবার বিশ্বকাপ জয়
নব্বইয়ের পরে ২৪ বছরের প্রতীক্ষার অবসান হলো৷ ব্রাজিলে বিশ্বকাপ ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে চতুর্থবার বিশ্বকাপ জয় করেছে জার্মানি৷ যদিও অনেকের আশা ছিল চমক দেখাবেন মেসি, কিন্তু সেটা হয়নি৷ জগৎসেরা মেসি তাঁর দলকে ফাইনালে কিছুই দিতে পারেননি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
লামের হাতে কাপ
বিশ্বকাপ হাতে জার্মান অধিনায়ক ফিলিপ লাম৷ জাতীয় দলের পক্ষে শতাধিক বার মাঠে নামা লাম এবার তাঁর সাফল্যের তালিকায় যোগ করলেন বিশ্বকাপ ট্রফি৷ ৩০ বছর বয়সি এই ফুটবলার জার্মান জাতীয় দলের অধিনায়ক৷
ছবি: Reuters
গোল্ডেন গ্লোভস নয়ার, গোল্ডেন বল মেসি
বিশ্বকাপের ‘মোস্ট আউটস্ট্যান্ডিং প্লেয়ার’ হিসেবে ‘গোল্ডেন বল’ অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন মেসি৷ আর সেরা গোলরক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন জার্মানির মানুয়েল নয়ার৷ বিশ্বকাপ ফাইনাল শেষে তাঁদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়৷
ছবি: Getty Images
গোটৎসের গোল
জার্মান কোচ ইওয়াখিম ল্যোভ ভরসা রেখেছিলেন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় মিরোস্লাভ ক্লোজের উপর৷ তাই ৮৮ মিনিট পর্যন্ত মাঠে ছিলেন তিনি৷ এরপর ক্লোজের বদলে মাঠে নামেন বায়ার্নের মারিও গ্যোটৎসে৷ শেষ পর্যন্ত তিনিই জার্মানদের মুখে হাসি ফোটালেন৷ শ্যুর্লের কাছ থেকে পাওয়া পাস বুকে ঠেকিয়ে নিয়ে সেই বল পাঠিয়ে দেন আর্জেন্টিনার জালে৷
ছবি: Reuters
বান্ধবীর সঙ্গে গোটৎসে
গোটৎসের বান্ধবী আন-কাথরিন ব্র্যোমেল গ্যালারিতে ছিলেন৷ খেলা শেষে তিনি নেমে আসেন মাঠে৷ অভিনন্দন জানান সঙ্গীকে৷
ছবি: Reuters
পোডোলস্কির সেলফি
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে সেলফি তুলে বিশ্বকাপের শুরুতেই আলোচনায় আসেন লুকাস পোডোলস্কি৷ ফাইনালে খেলার সুযোগ পাননি তিনি৷ কিন্তু তাই বলে কি সেলফি তোলা বাদ থাকবে? ছবিতে সতীর্থ শোয়াইন্সটাইগারের সঙ্গে সেলফি তুলছেন পোডোলস্কি৷ মাঠে থাকতেই সেটা আবার ফেসবুকে আপলোড করেছেন তিনি৷
ছবি: AFP/Getty Images
আট বছর পর চূড়ান্ত সাফল্য
জার্মান ফুটবল দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর সবচেয়ে বড় সাফল্য পেতে আট বছর সময় নিলেন ইওয়াখিম ল্যোভ৷ গত বিশ্বকাপে ফাইনালে পৌঁছাতে পারেনি তাঁর দল৷ চূড়ান্ত জয় পায়নি দুটো ইউরো কাপেও৷ এবার সমালোচকদের মুখ চিরতরে বন্ধ করে দিলেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/AP
হিগুয়াইনকে তুলে নেয়া কি ভুল ছিল?
খেলার শুরুতে কিন্তু বেশ এগিয়ে ছিল আর্জেন্টিনা৷ একের পর এক আক্রমণে কাবু করে দিচ্ছিল জার্মানির রক্ষণভাগ৷ কিন্তু খেলার দ্বিতীয়ার্ধে হিগুয়াইনকে তুলে নেন আর্জেন্টিনার কোচ সাবেলা৷ এরপরই আর্জেন্টিনার দুর্বলতা ফুটে উঠতে থাকে৷ মেসিও হয়ে যান নিষ্প্রাণ৷ সাবেলার সিদ্ধান্ত কি ভুল ছিল?
ছবি: Reuters
গ্যালারিতে ম্যার্কেল
জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলকে জাতীয় দলের এক নম্বর ভক্ত বলা হয়৷ এই ভক্ত ফাইনাল দেখতে উড়ে যান ব্রাজিলে৷ সঙ্গে ছিলেন জার্মানির প্রেসিডেন্ট ইওয়াখিম গাউক৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বাধভাঙা উচ্ছ্বাস
জার্মানির বিজয়ের খবরে আনন্দের বন্যায় ভাসছে গোটা জার্মান জাতি৷ জার্মানির বিভিন্ন শহরে গভীর রাতেও ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় বিজয়োল্লাস করছেন ফুটবল ভক্তরা৷ তবে জাতীয় দলকে সংবধর্না দেয়া হবে মঙ্গলবার, বার্লিনে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
10 ছবি1 | 10
ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের চেয়ারম্যান কার্ল-হাইনৎস রুমেনিগে ক্লাবের ওয়েবসাইটে বলেন, ‘‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দলের নেতৃত্বে থাকা অবস্থায় এবং সাফল্যের শিখরে থেকে বিদায় – এর চেয়ে ভালো সময় আর হতে পারে না৷ তবে এটা ঠিক, লামের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার মত কোনো খেলোয়াড় খুঁজে পাওয়া কঠিন৷''
মঙ্গলবার জার্মান দলের বিজয়ী বীররা যখন বার্লিন মাতান, তখনও হয়ত লামের হাসি মুখ দেখে কেউ ভাবতে পারেননি অবসরে যাওয়ার কথা ভাবছেন তিনি৷ তবে লাম এমন এক খেলোয়াড়, যাঁর পায়ে এসে ধরা দিয়েছে সাফল্য৷ চ্যাপিয়ন্স লিগের শিরোপা, ৬টি বুন্ডেসলিগা-র শিরোপা জয় এবং জাতীয় দলের ৬টি বিজয় তাঁর হাত ধরে৷
১৯৮৩ সালের ১১ই নভেম্বর লামের জন্ম মিউনিখে৷ দল এবং দেশের পক্ষে খেলাগুলিতে ফিলিপ লামকে বিভিন্ন অবস্থানে খেলানো হয়েছে৷ তবে জার্মান জাতীয় দলের কোচ ইওয়াখিম ল্যোভের বিবেচনায় ‘রাইট ব্যাক' অবস্থানের জন্যই সবচেয়ে উপযুক্ত ছিলেন তিনি৷ জাতীয় দলের পক্ষে ১১৩ বার মাঠে নামা লাম সবশেষ তাঁর সাফল্যের তালিকায় বিশ্বকাপ ট্রফি যোগ করেন৷