ফুটবলের জুয়া, ফাটকা, সাট্টা বা বেটিং, যাই বলুন, তার ‘বুকি’ বা দালালরা অ্যাপ, ওয়েবসাইট ইত্যাদি বানিয়ে ইন্টারনেট যুগের স্মার্টফোন, ট্যাবলেটধারীদের দলে আনার চেষ্টা করছেন৷ নতুন খদ্দেররা খেলা চলাকালীনই বাজি ধরার সুযোগ পাবেন৷
বিজ্ঞাপন
স্লোগানটা হলো: লাইভ ম্যাচ অ্যাকশন – যার ফলে এবারকার বিশ্বকাপ সারা বিশ্বের বুকমেকারদের পক্ষে একটি সর্বকালের অর্থকরী ব্যবসা হয়ে উঠতে পারে৷ এমনকি গতবারের বিশ্বকাপে তাঁরা যা রোজগার করেছিল, এবারকার বিশ্বকাপে তার দ্বিগুণ মুনাফা হওয়াটাও কিছু আশ্চর্যের নয়৷
সাধারণভাবেই বলা যেতে পারে যে, বিগত কয়েক বছরে ফুটবল নিয়ে বাজি ধরাটা জনপ্রিয়তায় প্রায় ঘোড়দৌড়কে ধরে ফেলেছে: কথাটা বিশেষ করে ব্রিটেন এবং আয়ারল্যান্ডের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য৷ সেখানকার বুকমেকাররা এবার বেটিং শপ-এর চেয়ে অনলাইন বেটিং থেকেই বেশি বেট টানবেন বলে আশা করছেন – বিশেষ করে তরুণ গ্যাম্বলারদের কাছ থেকে৷
তরুণ প্রজন্ম লাইভ টিভি অ্যাকশন দেখে অভ্যস্থ; যেমন সেই অ্যাকশনের ফাঁকে ফাঁকে মোবাইল ফোনটা টেনে নিয়ে কোনো বেট প্লেস করা, অর্থাৎ বাজি ধরাটাও তাঁদের কাছে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক বলেই মনে হয়৷ পান্টাররা যে খেলা চলাকালীন খেলার অসংখ্য খুঁটিনাটি নিয়ে বাজি ধরতে পারেন, সেটাও এই নতুন জুয়াড়িদের কাছে একটা বিশেষ আকর্ষণ৷
একক প্লেয়ারদের নিয়েই সবচেয়ে বেশি বাজি ধরা যায়: তারা গোল করবে কিনা; লাল কিংবা হলুদ কার্ড দেখবে কিনা৷ বাকি রইল অ্যাকশন: ম্যাচে ক'টা কর্নার হবে, ইত্যাদি৷ কোনো কোনো বুকমেকার নাকি শুধু একটি ম্যাচের উপরেই এ ধরনের প্রায় আড়াই'শো বাজি ধরার রেখেছেন৷
২০১৪ বিশ্বকাপে যাঁদের জ্বলে ওঠার সম্ভাবনা
২০১৪ সালের বিশ্বকাপকে সেরা টুর্নামেন্টে পরিণত করায় রোনাল্ডো আর মেসির ভূমিকা থাকতেই পারে৷ কিন্তু আরো ১০ লুকানো রত্ন রয়েছে, যাঁরা সুযোগ পেলেই দেখাতে পারেন তাঁদের কেরামতি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
খোয়াদভো আসামোয়া (ঘানা)
সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে অসাধারণ দক্ষতা ঘানার এই ফুটবলারের৷ ২৫ বছর বয়সি এই খেলোয়াড় তাই মাঠে হয়ে উঠতে পারেন প্রতিপক্ষের বিভীষিকা৷ ২০১০ সালের মতো ঘানা যদি তাদের সেরাটা দিতে পারে, এক্ষেত্রে অবশ্যই ভূমিকা রাখবেন আসামোয়া৷
ছবি: Marco Bertorello/AFP/Getty Images
পল পগবা (ফ্রান্স)
অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ ফুটবলে পল পগবা অসাধারণ কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন৷ স্যার আলেকজান্ডার ফার্গুসনের মুখেও এই ফুটবলারের প্রতি প্রশংসা উচ্চারিত হয়েছে৷ তাঁর সিদ্ধান্তেই এই কিশোর ফুটবলার বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেয়েছেন৷ শক্তিশালী এই খেলোয়াড় যে বিশ্বকাপে মাঠ মাতাবে, তা বোধহয় বলাই যায়৷
ছবি: Marco Bertorello/AFP/Getty Images
অ্যাডাম লালানা (ইংল্যান্ড)
এবার বিশ্বকাপে ইংলিশ শিবিরের শিরোপা জেতার আশা অনেকটাই বেশি৷ ২০১৩/১৪ মৌসুমে লালানা যে আভিজাত্য এবং দক্ষতার সাথে খেলেছেন, তা এককথায় অসাধারণ৷ তাই এই মিডফিল্ডারের পায়ের জাদু দেখার অপেক্ষায় থাকবেন অনেকেই৷
ছবি: Getty Images
মিরালেম পিয়ানিচ(বসনিয়া)
কিশোর এই ফুটবলারকে নিয়ে ইটালির মিডিয়ায় বরাবরই মতামাতি৷ বসনিয়ায় এই ফুটবলারকে বলা যায় স্বভাবজাত ফুটবলার৷ অসাধারণ পাস, দূর দৃষ্টি এবং ফুটবল নিয়ন্ত্রণে অসাধারণ দক্ষতা রয়েছে তাঁর৷
ছবি: Getty Images
ইয়োইচিরো কাকিতানি (জাপান)
জাপানের অন্যতম আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার কাকিতানি৷ তাঁর পেস, গতি এবং লিঙ্ক আপের দক্ষতা অসাধারণ৷ ২৪ বছর বয়সি কাকিতানি ব্রাজিল বিশ্বকাপে তাঁর সেরাটা দিয়ে সামুরাই ব্লুদের অনেক এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে৷
ছবি: Getty Images
কেভিন দে ব্রয়না (বেলজিয়াম)
বেলজিয়ামের স্বর্ণ প্রজন্মের অন্যতম অংশীদার কেভিন দে ব্রয়না৷ বুন্ডেসলিগায় তাঁর অসাধারণ অভিষেক এখনো মনের মধ্যে গেঁথে আছে ফুটবল ভক্তদের৷ মাত্র ২৩ বছর বয়সি এই শক্তিশালী ফুটবলারের পায়ের জাদু দেখার অপেক্ষায় থাকবেন বিশ্ববাসী৷
ছবি: Getty Images
লুকাস মুরা (ব্রাজিল)
২১ বছর বয়সি এই ফুটবলার ব্রাজিল শিবিরে কয়েক বছর আগে প্রবেশ করেছে৷ ফরাসি ফুটবল ক্লাব পিএসজি-র গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়ারে পরিণত হয়েছেন তিনি৷ আর বিশ্বকাপে ব্রাজিলের আক্রমণ ভাগেও এই প্রতিভাবান ফুটবলারের খেলা দেখার অপেক্ষায় থাকবেন ভক্তরা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
জেমস রোদ্রিগেজ (কলম্বিয়া)
এ বছর বিশ্বকাপে সবার চোখ থাকবে কলম্বিয়ার দিকে৷ কেননা দক্ষিণ অ্যামেরিকার এই দলটি এখন দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে৷ মোনাকো তারকা রোদ্রিগেজ কাঁধে রয়েছে দলের সব চাপ৷ ২২ বছর বয়সি এই ফুটবলারের গতি এবং খেলার ধরণ অসাধারণ৷ তিনি এই দলের একটি রত্নে পরিণত হয়েছেন৷
ছবি: Getty Images
এদুয়ার্দো ভার্গাস (চিলি)
ফার্গাস এখন ভ্যালেন্সিয়ায় রয়েছেন৷ তবে খুব শিগগিরই স্টুটগার্ডে জার্মান ভক্তরা প্রীতি ম্যাচে তাঁর দেখা পাবেন৷ তবে ২৪ বছর বয়সি প্রতিভাবান এই ফুটবলারের জন্য ব্রাজিল বিশ্বকাপ একটি নতুন দ্বার খুলে দিতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ইয়োর্দি ক্লাসি (নেদারল্যান্ডস)
ইয়োর্দি ক্লাসির মধ্যে লুকিয়ে আছে সহজাত ফুটবলার৷ নেদারল্যান্ডসের জাতীয় দলের পুরো দায়িত্ব এখন এই মিডফিল্ডার এ কাঁধে৷ মাত্র ২২ বছর বয়সেই ১০০ ম্যাচ খেলার মাইল ফলক ছুঁয়েছেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
10 ছবি1 | 10
অ্যাপল স্টোর-এ অ্যাপ, মোবাইল বেটিং, এগুলোই এখন ইনডাস্ট্রির ডালভাত হয়ে দাঁড়াচ্ছে – পরে হয়ত একদিন জলভাত হয়ে উঠতে পারে৷ লাইভ ম্যাচ পেজ, গেস্ট ব্লগার হিসেবে নামকরা সব পুরনো প্লেয়ার, এ সবই পরীক্ষা করা হয়ে গিয়েছে এবং হচ্ছে৷ এছাড়া রয়েছে যাকে বলা হয় অ্যাকুম্যুলেটর বেট: অর্থাৎ পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত বা সংশ্লিষ্ট বাজি, যেমন আটটি গ্রুপে কোন আটটি দল জিতবে৷
তবে যুক্তরাজ্যে এবার একটি পরিবর্তন চোখে পড়ার মতো: পান্টার বা যাঁরা বাজি ধরছেন, তাঁদের মধ্যে অহেতুক দেশপ্রেম দৃশ্যত এবার মাথা চাড়া দেয়নি৷ ব্রিটেনের বিশ্বকাপ জেতার বাজি ধরা হচ্ছে ২৮-১, সেক্ষেত্রে ব্রাজিলের ৩-১৷ অবশ্য বাজি এক ব্যাপার আর ফুটবল আরেক ব্যাপার: ফুটবল সব সময়েই তার নিজের মর্জি মতো চলে, যদি না ম্যাচ ফিক্সিং...