1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিশ্বখ্যাত ‘আর্ট কোলন’ মেলা শেষ হলো

২৭ এপ্রিল ২০১০

শিল্পকলার ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে পুরাতন বাণিজ্য মেলা হিসেবেই ‘আর্ট কোলনে’র সুনাম৷ জার্মানির কোলন শহরে এই মেলার ৪৪ তম প্রদর্শনী শেষ হল ২৫ শে এপ্রিল৷

‘আর্ট কোলন' মেলায় শিল্পী কাথরিন মায়ার’এর প্রদর্শনীছবি: AP

পাঁচ দিন স্থায়ী ‘আর্ট কোলন' মেলায় ২৩টি দেশের ২০০'রও বেশি গ্যালারিস্ট সমকালীন শিল্পকর্মের নানা নিদর্শন নিয়ে যোগ দিয়েছিলেন৷ প্রদর্শন করেছেন ইনস্টলেশান আর্ট, ভিডিও ছবি, আলোক চিত্র ও ভাস্কর্য৷

১৯৬৭ সালের হেমন্তে কোলন শহরের গ্যুরৎসেনিশ এলাকায় ঐতিহাসিক এক কনসার্ট ভবনে স্বল্প পরিসরে আধুনিক শিল্পকলার এক বাজার হিসেবেই মেলার সূচনা৷ শিল্প ব্যবসায়ী রুডল্ফ সুইর্নারের উদ্যোগে ১৮ জন গ্যালারিস্ট খ্যাতনামা শিল্পীদের কিছু কাজ তুলেধরেন তখন৷ হয়তো হাজার খানেক দর্শক হতে পারে, ভেবেছিলেন তাঁরা৷ কিন্তু উদ্যোক্তাদের বিস্মিত করে পনের হাজারের মত দর্শক এসেছিলেন মেলায়৷ এ প্রসঙ্গে রুডল্ফ সুইর্নার বলেন, ‘‘দর্শকদের প্রতিক্রিয়াটা খুবই স্পষ্ট৷ গ্যালারি থেকে শিল্পকর্মগুলি বিপণি এলাকার একটি ভবনে এনে প্রদর্শন করাটা বয়স্ক দর্শকরা একেবারেই পছন্দ করেননি৷ কিন্তু অল্প বয়সিরা খুব খুশি হয়ে দেখতে গিয়েছিলেন মেলা৷''

এরপর দ্রুত আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নাম ছড়িয়ে পড়ে এই শিল্পমেলার৷ ১৯৮৪ সালে এই মেলা ‘আর্ট কোলন' নামে নবরূপে আত্মপ্রকাশ করে৷ কিন্তু প্রথম দিকের নামডাক ৯০-এর দশকে অনেকটাই স্তিমিত হয়ে পড়ে আর্ট কোলনের৷ লন্ডন, নিউইয়র্ক ও সুইজারল্যান্ডের শিল্পবাণিজ্য মেলাগুলি বিশ্বের শিল্পকলার বাজারে প্রথম সারিতে এসে পড়ে৷ তবে ইদানীং আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছে আর্ট কোলন, বিশেষ করে গত বছর লসএঞ্জেলেস থেকে আসা প্রখ্যাত গ্যালারিস্ট ড্যানিয়েল হুগ দায়িত্বভার নেয়ার পর থেকে৷ আর তাই তো এবার বিমানযাত্রা ব্যাহত হওয়া সত্ত্বেও নানা দেশ থেকে আসা শিল্পকলা ব্যবসায়ীরা সরগরম করে তুলেছিলেন আর্ট কোলনকে৷ দুবাই, অ্যামেরিকা, ইসরাইল, চীন থেকে এসেছিলেন অনেকে৷ তবে বেশির ভাগই এসেছিলেন জার্মানির নানা অঞ্চল থেকে৷ বিংশ ও উনবিংশ শতাব্দীর গুরুত্বপূর্ণ চিত্রশিল্পীদের এক চতুর্থাংশই জার্মান, বলেন আর্ট কোলনের পরিচালক ডানিয়েল হুগ৷ যেমন, ইওসেফ বয়েজ, গ্যারহার্ড রিখটার, রজেমারি ট্রকেল প্রমুখ৷ এছাড়া আর্ট কোলনের বড় আকর্ষণ ছিল বিশ্বখ্যাত শিল্পী পাবলো পিকাসো, ইওর্গ ইমেনডর্ফ, নেও রাউখ, ক্রিস্টো, এডভার্ড মুঙ্ক্, অ্যান্ডি ওয়ারহল'এর নজর কাড়া নানা শিল্পকলা৷ এডভার্ড মুঙ্ক্'এর ‘বসে থাকা তরুণী' ছবিটির দাম ধার্য করা হয়েছিল সাড়ে নয় মিলিয়ন ইউরো৷ অ্যান্ডি ওয়ারহলের ‘কোলন ক্যাথিড্রাল' ছবিটিও দর্শকদের টেনেছে৷ আকাশচুম্বী দাম দিয়ে কেনার সামর্থ্য না থাকলেও অন্তত ছবিটি দেখে মন ভরিয়েছেন অনেকে৷ পাশাপাশি তরুণ গ্যালারি মালিকদেরও উৎসাহিত করা হয় আর্ট কোলনে৷ তাঁরা অনেক নাম না জানা নতুন শিল্পীর চিত্রকলা প্রদর্শন করেছেন এই বাণিজ্য মেলায়৷ আর্ট কোলনে প্রদর্শিত চিত্রকর্মগুলি সম্পর্কে এক কথায় কিছু বলা সম্ভব নয়৷ কোনটি মনমুগ্ধকর, কোন কোনো শিল্পীর কাজ ধাঁধাঁয় ফেলে দেয়৷

প্রদর্শনীগুলি কখনও মুগ্ধ করে, কখনও আবার ধাঁধাঁয় ফেলে দেয়ছবি: AP

পরাবাস্তববাদী ধরণের আলোকচিত্র ও ভিডিও চিত্রের পাশাপাশি দেখা গেছে বিশাল চোখ ধাঁধাঁনো রঙিন ছবি, অদ্ভুত ধরণের দেয়াল ইন্সটেলেশন কিংবা কাপড়ের ক্যানভাসে শুধুই রঙিন দাগ৷

এবারের ‘আর্ট কোলন পুরস্কার' দেয়া হল শিল্পসংগ্রাহক গ্র্যাসলিন পরিবারকে৷ সমকালীন শিল্পীদের গুরুত্বপূর্ণ শিল্পকলার সংগ্রহ করে নাম করেছেন গ্র্যাসলিন পরিবার৷ ২০০৬ সাল থেকে দর্শকদের জন্যও উন্মুক্ত করেছেন তাঁদের এই সংগ্রহ৷ আর তাই তাঁরা পেলেন ১০ হাজার ইউরো অর্থ মূল্যের আর্ট কোলন পুরস্কারটি৷ ১৯৮০ সাল থেকে শিল্পকলায় বিশেষ অবদানের জন্য দেয়া হচ্ছে এই পুরস্কার৷

পরিচালক ড্যানিয়েল হুগের সক্রিয় উদ্যোগে আর্ট কোলন তার হারানো গরিমা আবার কিছুটা ফিরে পেয়েছে বলে শিল্পরসিকরা মনে করছেন৷ ড্যানিয়েল হুগ বলেন: ‘‘আর্ট কোলন যে আবার একটা নির্দিষ্ট আদল পেয়েছে, এটা আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷''

পাবলো পিকাসোর ৬,৪ মিলিয়ন মূল্যের চিত্রটি এবং এডভার্ড মুঙ্ক্'এর দামি ছবিটি অবশ্য শেষ পর্যন্ত বিক্রি হয়নি আর্ট কোলনে৷ তবে সব মিলিয়ে আর্ট কোলন যে সফল হয়েছে, তা বোঝা যায় দর্শকসংখ্যা দেখে৷ ৬০ হাজারের মত দর্শক উপস্থিত হয়েছিলেন এবারের মেলায়৷

প্রতিবেদক : রায়হানা বেগম

সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ