1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিশ্বজুড়ে চরম আবহাওয়া: কেন এমন হচ্ছে?

২০ মে ২০২৪

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব দেখা যাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে৷ এর পরিণাম কেমন হবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় বিশেষজ্ঞরা৷

ব্রাজিলের একটি বন্যা দুর্গত এলাকা
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব দেখা যাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তেছবি: Andre Penner/AP/picture alliance

আফ্রিকায় একদিকে বন্যা, অন্যদিকে খরা৷ আমাজন ও এশিয়ার বিভিন্ন দিকে তাপপ্রবাহ, ইউরোপে বন্যা৷ এবছর চরম আবহাওয়া নানারূপে দেখা যাচ্ছে বিশ্বের নানা দিকে৷

এখন পর্যন্ত, ২০২৪ সালে যতটা চরম আবহাওয়া দেখা গেছে, তা রীতিমত খারাপ, জানাচ্ছে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা বা ডাব্লিউএমও৷ সংস্থাটির জলবায়ু বিশেষজ্ঞ আলভারো সিলভার মতে, ‘‘বিশ্বের প্রায় সব অঞ্চলেই চরম আবহাওয়া বা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঘটনাবলী দেখা গেছে৷''

কিন্তু সব ঘটনার পেছনে একমাত্র কারণ জলবায়ু পরিবর্তন, তা নয়৷ কয়লা, তেল ও গ্যাসের বাড়াবাড়ি ব্যবহারের ফলে গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমনও একটি কারণ৷

জলবায়ু পরিবর্তন আবহাওয়ার সম্পর্ক

জলবায়ু পরিবর্তন পানিকে দ্রুত বাষ্পে পরিণত করে এবং এর ফলে, বায়ুমণ্ডলে আরো বাড়ে বাষ্পের পরিমাণ৷ এই কারণে, একদিকে যেমন বাড়ে বৃষ্টি, বন্যা, অন্য অংশে বাড়ে খরার আশঙ্কাও৷

সাগরের তাপমাত্রা বাড়লে সেটি এই প্রক্রিয়াকে আরো তীব্র করে তোলে ও সার্বিক তাপমাত্রাও বেড়ে যায়৷

এই প্রবণতা পৃথিবীর আবহাওয়ায় চরম প্রভাব ফেলে৷ সিলভা বলেন, ‘‘শুধু যে এই প্রবণতার তীব্রতা বাড়ছে, তা নয়৷ কোন কোন সময় বা কতক্ষণের জন্য এই প্রবণতা থাকছে, সেই বিবেচনাও প্রয়োজন৷ চরম প্রবণতা এতটাই ঘন ঘন দেখা যাচ্ছে এখন আমরা আর বলতে পারি না কোনটি স্বাভাবিক আর কোনটি নয় ৷''

ভারতের দাবদাহের যে কারণ

চলতি বছরের এপ্রিল ও মে মাসে ভারতসহ এশিয়ার বেশ কিছু জায়গায় চরম দাবদাহ দেখা যায়৷ ভারতের কোনো কোনো অংশে তাপমাত্রার পারদ পৌঁছে ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, প্রাণ হারান অনেকে, জনজীবনও থমকে যায়৷

তাপপ্রবাহের প্রভাব পড়ে নির্বাচনেও, বলছেন বিশেষজ্ঞরা৷ অতিরিক্ত গরমে নির্বাচনি প্রচারের সময় মঞ্চে অজ্ঞান হন দেশটির সড়ক মন্ত্রী নীতিন গড়কড়ি৷

সুইডেনের একটি গণতন্ত্রবিষয়ক বেসরকারি সংস্থার গবেষক লীনা রিকিলা-তামাং বলেন, ‘‘ঠাটা রোদে প্রায় ৯০ কোটি ভোটারদের লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে৷ ২০১৯ সালের নির্বাচনের তুলনায় ভোটদানের হারের নিম্নগামী হার স্পষ্ট৷''

ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন সংস্থার মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ভারতে দাবদাহের সম্ভাবনা বেড়েছে ৪৫গুণ৷ মানুষের জীবনযাপনের পরিবেশের ওপর প্রভাবকে খতিয়ে দেখে এই সংস্থা৷ সংস্থাটির প্রধান ফ্রিডেরিকে ওটো বলেন, ‘‘আমরা যদি এভাবেই জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করতে থাকি ও সাথে বায়ুমণ্ডলে আরো বেশি গ্রিনহাউস গ্যাস ভরতে থাকি, তাহলে এমন দাবদাহ আরো ঘন ঘন দেখা যাবে ও আরো বেশি সময়ের জন্য তা চলবে৷ এবিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷''

তিনি আরো যোগ করেন. ‘‘ভারতের মতো দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলি, যেখানে অসংখ্য মানুষ বাসার বাইরে কাজ করেন, তারা জলবায়ুর ছোট ছোট পরিবর্তনজনিত বিপদের বাড়তি ঝুঁকিতে৷''

বিশ্বের অন্যত্র যেমন চিত্র

ব্রাজিলের চরম আবহাওয়ার পেছনে শুধু জীবাশ্ম জ্বালানি নেই৷ এল নিনো জলবায়ু ধারার নিত্যনতুন রূপও এর পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে বলে মত, ফ্রিডেরিকে ওটোর৷ কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন একে আরো ভয়াবহ আকার দিচ্ছে বলে জানান তিনি৷

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলতি বছরে একাধিক ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়েছে৷ এর কারণ নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়, কারণ সেগুলি বিচ্ছিন্ন, স্থানীয় প্রবণতা৷

উত্তর অ্যাটলান্টিকের গ্রীষ্মপ্রধান সাইক্লোন ছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাতাসের গতি বাড়তে পারে, এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানান ওটো৷

তিনি বলেন, ‘‘অন্য কোনো বাতাস বা ঝড়ের ক্ষেত্রে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না৷ তাই আমি এক্ষেত্রে ব্যাপক কোনো পরিবর্তন দেখছি না, কিন্তু এটা একেক ধরনের ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষেত্রে আলাদা রকম হতে পারে৷''

বিজ্ঞানীরা এখনও নিশ্চিতভাবে বলতে পারছেন না এই ঝড়ের পেছনে জলবায়ু পরিবর্তনের আদৌ কোনো প্রভাব রয়েছে কি না৷

চরম আবহাওয়া কি আগেও হতো?

শিল্প বিপ্লবেরও আগে, যখন জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের চল ছিল না, সেই সময় থেকেই বিশ্বে চরম আবহাওয়ার উদাহরণ রয়েছে৷ এমন প্রবণতা এক সময় স্বাভাবিক মনে হলেও জলবায়ু পরিবর্তন এটিকে আরো ভয়াবহ, ক্ষতিকর ও বাস্তব করে তুলেছে বলে বিশেষজ্ঞদের মত৷

১৯৯০ সালের আগে, বছরে ৭০ থেকে ১৫০টি আবহাওয়াঘটিত দুর্যোগের কথা শোনা যেত৷ ২০০০ সাল থেকে, এমন প্রায় তিনশটি ঘটনা বছরে দেখা যায়৷ ডাব্লিউএমওর সিলভার মতে, অতীতে এসব ঘটনা তেমনভাবে নথিভুক্ত না করা হলেও ‘‘তখন আর এখনকার পার্থক্য প্রশ্নাতীত৷''

অ্যালিস্টেয়ার ওয়ালশ/এসএস

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ