সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষকরা বলছেন, তাঁরা এমন কিছু প্রমাণ পেয়েছেন যা দিয়ে ওয়ানাক্রাই সাইবার হামলার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ করা যেতে পারে৷
বিজ্ঞাপন
সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষকরা বলছেন, তাঁরা এমন কিছু প্রমাণ পেয়েছেন যা দিয়ে ওয়ানাক্রাই সাইবার হামলার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ করা যেতে পারে৷
দক্ষিণ কোরিয়ার ইন্টারনেট সিকিউরিটি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান হাউরি ল্যাবস-এর গবেষক সিমন চৈ বলছেন, যে কোড ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী সাইবার হামলা চালানো হয়েছে, তার সঙ্গে অতীতে যেসব হামলার জন্য উত্তর কোরিয়াকে দায়ী করা হয়, তার কিছু মিল পাওয়া গেছে৷ তিনি বলেন, সিম্যানটেক ও ক্যাসপারস্কি ল্যাবের তথ্যের সঙ্গে তাঁদের গবেষণা তথ্যের মিল পাওয়া গেছে৷ সিম্যানটেক ও ক্যাসপারস্কি সোমবার জানায়, ওয়ানাক্রাইতে ব্যবহৃত কোডের সঙ্গে লাজারাস হ্যাকার গ্রুপের ব্যবহার করা কোডের মিল রয়েছে৷ এই গ্রুপটি উত্তর কোরিয়ার বলে অনেক গবেষক মনে করেন৷
তবে সিম্যানটেক ও ক্যাসপারস্কি বলেছে, এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উত্তর কোরিয়াই ওয়ানাক্রাইয়ের জন্য দায়ী কিনা তা বলার সময় এখনও আসেনি৷ তাদের প্রমাণ টুইটারে প্রকাশ করেছেন গুগলের নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষক নীল মেহতা৷
যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ইসরায়েলের সিকিউরিটি গবেষকরাও সাম্প্রতিক সাইবার হামলার পেছনে উত্তর কোরিয়ার সংশ্লিষ্ট থাকার সম্ভাব্যতা বিষয়ে আভাস পেয়েছেন৷ তবে এখনও কোনো চূড়ান্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷
উল্লেখ্য, শুক্রবার দিনের শেষে শুরু হয়ে সপ্তাহান্তে বিশ্বের প্রায় দেড়শটি দেশে সাইবার হামলা হয়৷ সোমবারও কিছু কম্পিউটার আক্রান্ত হয়েছে৷
অর্থ আয়ের উৎস?
দক্ষিণ কোরিয়ার ইন্টারনেট সিকিউরিটি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান হাউরি ল্যাবস-এর গবেষক সিমন চৈ উত্তর কোরিয়ার হ্যাকিং দক্ষতা নিয়ে গবেষণা করছেন৷ দক্ষিণ কোরিয়ার পুলিশ ও জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরামর্শক হিসেবেও কাজ করেন তিনি৷ চৈ বলেন, উত্তর কোরিয়ার উপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা থাকায় বিদেশি মুদ্রা আয়ের পথ হিসেবে গত কয়েকবছর ধরে সাইবার হামলা চালাচ্ছে দেশটি৷ গতবছর তিনি উত্তর কোরিয়ার একজন হ্যাকারের সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ করতে সমর্থ হয়েছিলেন বলে জানান৷ ঐ হ্যাকার তখন জানিয়েছিলেন, উত্তর কোরিয়া ব়্যানসমওয়্যার হামলা চালানোর চেষ্টা চালাচ্ছে৷ তিনি উত্তর কোরিয়ার একটি অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে জড়িত এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় চালানো কয়েকটি সাইবার হামলার জন্য তিনি ও তাঁর সহকর্মীরা দায়ী বলে জানান গবেষক চই৷
জেডএইচ/ডিজি (রয়টার্স, এএফপি)
তথ্য গোপন রাখার সাতটি সহজ উপায়
আধুনিক প্রযুক্তির কারণে মানুষের সুযোগ-সুবিধা যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে তথ্য চুরির ঘটনা৷ ফোর্বস জানাচ্ছে কোন সাতটি উপায়ে আপনি খুব সহজেই ব্যক্তিগত তথ্য রক্ষা করতে পারেন৷
ছবি: Fotolia/davidevison
পাসওয়ার্ড নিজের কাছে রাখুন
কম্পিউটার, স্মার্টফোন বা ট্যাবলেটের পাসওয়ার্ড যেন কখনই এক না হয়৷ আর ব্যাংক কার্ড-এর সঙ্গে যেন এই পাসওয়ার্ডের মিল না থাকে৷ এছাড়া কম্পিউটার, স্মার্টফোন বা ট্যাবলেটে কোনো পাসওয়ার্ড লিখে রাখবেন না৷ এর ফলে আপনার তথ্য চুরির সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়৷ বাড়ির বাইরে গেলে এগুলি ‘লক’ করে যাবেন৷
ছবি: Sergey Nivens - Fotolia.com
নামে ‘গুগল অ্যালার্ট’ ব্যবহার করুন
এটা খুব সহজ পন্থা, আপনি যদি দেখতে চান ইন্টারনেটে আপনার সম্পর্কে সবাই কী বলছে৷ সোজা এই ঠিকানায় যান – http://www.google.com/alerts এবং আপনার নাম লিখুন৷ তারপর আপনার নামের বিভিন্ন ধরন লিখে, তার আগে ও পরে ‘কোটেশন মার্ক’ জুড়ে দিন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/O. Berg
ব্যবহারের পর লক্ষ্য রাখা
আপনি যদি অন্য কারো কম্পিউটার বা ট্যাবলেট ব্যবহার করেন, তবে একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ জিনিস লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন৷ আপনার পর যিনি সেটা ব্যবহার করবেন, তিনি যাতে আপনার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে না পারে – সেটা খেয়াল রাখুন৷ আপনি যদি এটা করতে ভুলে যান, তাহলে ফলাফল ভয়াবহ হতে পারে৷
ছবি: AFP/Getty Images
ফোন, ই-মেল বা জিপ কোড ব্যবহার করতে না দেয়া
অচেনা কোনো মানুষ এই নম্বরগুলো জানতে চাইলে, আপনারা দেবেন না৷ দেখা যায় কোনো অফিস তাঁর কর্মীর কাছ থেকে এ সব তথ্য চাইলে, অনেকেই সেচ্ছ্বায় তা দিয়ে দেয়৷ বহু অফিস এ নিয়ে একটি প্রোফাইল তৈরি করে৷ আপনার কিন্তু এ সব তথ্য না দেয়ার অধিকার আছে৷ তাই আপনি যদি এতে স্বাচ্ছ্বন্দ্যবোধ না করেন, তবে দেবেন না৷
ছবি: picture-alliance/ZB
কার্ড নয় ক্যাশ
আপনি যদি চান আপনি যে পণ্যটি কিনছেন, সেই কোম্পানি আপনারা পরিচয় না জানুক, তবে নগদ অর্থে জিনিস কিনুন৷
ছবি: AP
ফেসবুকে নিরাপত্তার জন্য ‘ফ্রেন্ডস’ ব্যবহার করুন
ফেসবুকে সবসময় ‘সিকিউরিটি’ বা নিরাপত্তা পরীক্ষা করুন৷ পোস্ট করার পর লক্ষ্য রাখুন আপনি আপনার ছবি বা মন্তব্য ‘ফ্রেন্ডস’ করে রেখেছেন, নাকি ‘পাবলিক’ করেছেন৷ আপনি যদি ‘স্পেশ্যাল’ নির্বাচন করেন এবং ঠিক করে দেন কে কে আপনার পোস্ট দেখতে পাবে, তবে সেটা আপনার তথ্য নিরাপত্তার জন্য তুলনামূলকভাবে ভালো৷
ছবি: picture-alliance/dpa/T. Bozoglu
‘হিস্ট্রি’ এবং ‘কুকিস’ মুছে ফেলুন
আপনি সবশেষ কবে এটা করেছেন? আপনি যদি নিশ্চিত না হন, ব্রাউজারে গিয়ে এটা পরিবর্তন করুন৷ ব্রাউজারের ‘প্রাইভেসি সেটিংস’-এ যান, সেখানে ‘নেভার রিমেমবার হিস্ট্রি’ নির্বাচন করুন৷ এর ফলে ইন্টারনেটে আপনাকে ‘ট্র্যাক’ করাটা হ্যাকারদের জন্য কঠিন হবে৷ এছাড়া আপনি ‘অ্যাড অন’-ও ব্যবহার করতে পারেন৷