1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিশ্বভারতীতে ছুটির দিন পরিবর্তন নিয়ে বিতর্ক

পায়েল সামন্ত কলকাতা
২৮ ডিসেম্বর ২০১৯

বুধ ও বৃহস্পতিবার ছুটির দিন নির্ধারণ করেছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর৷ তা বদল করলে কবিগুরুর ভাবধারাকে আঘাত দেওয়া হবে বলে মত একাংশের৷

Indien Westbengalen | Visva-Bharati Universität
ছবি: DW/P. Samanta

রবি ঠাকুরের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান একুশ শতকে একটি পূর্ণাঙ্গ শিক্ষাকেন্দ্রের চেহারা নিয়েছে৷ ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মিশেলে বিশ্বভারতী পরিচিত হয়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র হিসেবে৷

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন ব্রাহ্ম ধর্মের অনুসারী৷ আর ব্রাহ্ম ধর্মের উপাসনার দিন হওয়ায় বুধবার এই প্রতিষ্ঠানের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ৷ তাই বুধবার ও তার পরের দিন বৃহস্পতিবার ছুটি থাকে বিশ্ববিদ্যালয়৷ সম্প্রতি সেই পরম্পরা থেকে বেরিয়ে আসার ব্যাপারে আলোচনা করছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ৷ সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক কমিটি এগজিকিউটিভ কাউন্সিল ছুটির দিন বদলে শনি ও রবিবার করার পরিকল্পনা করছে৷ এর জেরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক৷

‘ছুটির দিনটি রবীন্দ্রনাথ ঠিক করেছিলেন’

This browser does not support the audio element.

সহজপাঠ-এ কে না পড়েছে, আজ বুধবার, আজ ছুটি৷ বিশ্বভারতীতে বুধবারই ছুটির দিন৷ সপ্তাহে পাঁচ দিন কর্মদিবস হওয়ায় বুধ ও বৃহস্পতিবার ছুটি থাকে৷ শুধু শিক্ষা নয়, সাধারণভাবে সরকারি ও বেসরকারি যে কোনো ধরনের প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে রবিবার অথবা শনি ও রবি, এই দুদিন৷ বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, কর্তৃপক্ষ চাইছেন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শনি ও রবিবার ছুটি ঘোষণা করতে৷ অবশ্য এখনও এ নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি কর্তৃপক্ষ৷

এতে একাধিক সুবিধা রয়েছে বলে বিশ্বভারতীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাংশের মত৷ প্রথমত, সপ্তাহে চার দিন বিশ্বভারতীর সঙ্গে অন্য প্রতিষ্ঠানের যোগাযোগের কোনো অবকাশ থাকে না৷ সেই বাধা দূর হবে৷ দ্বিতীয়ত, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা হয়ে থাকে সপ্তাহান্তে বা রবিবার৷ বিশ্বভারতীর পড়ুয়ারা সেই পরীক্ষায় অংশ নিতে চাইলে ক্লাস কামাই ছাড়া পথ থাকে না তাঁদের৷ তৃতীয়ত, শনি ও রবিবার ছুটি হলে ব্যবহারিক জীবনেও অন্যান্য প্রয়োজন মেটাতে সুবিধা হবে৷

এসব যুক্তিই অবশ্য খারিজ করে দিচ্ছেন অন্য পক্ষ৷ তাঁদের মতে, এগুলো পরম্পরা ভাঙার মতো জোরালো যুক্তি নয়৷ পাঠভবনের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সুপ্রিয় ঠাকুরের বক্তব্য, ‘‘বুধবার ব্রাহ্মধর্মে প্রার্থনার দিন৷ ওই দিন মন্দিরে প্রার্থনা হয়, তাই বুধবার ছুটি থাকে৷ কিন্তু, তার থেকে গুরুত্বপূর্ণ, এই ছুটির দিনটি রবীন্দ্রনাথ ঠিক করেছিলেন৷ সেটা বদলে দেওয়া একেবারেই উচিত নয়৷’’

তাঁর মতে, ‘‘রবিবার কেউ পরীক্ষায় বসতে চাইলে একটি দিন ক্লাস না করলেই পারে৷ কেউ কি ১০০ শতাংশ হাজিরা দেয় ক্লাসে? এই যুক্তিতে এত দিনের পরম্পরা ভেঙে ফেলা যায় না৷ অন্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ সপ্তাহের বাকি দিনও হতে পারে৷ তাতেও সমস্যা হওয়ার কথা নয়৷''

‘বুধবার ছুটি বলে আমাদের কখনো তেমন অসুবিধা হয়নি’

This browser does not support the audio element.

বিশ্বভারতীর পড়ুয়ারাও এ নিয়ে দোটানায় রয়েছেন৷ ১৯০১ সাল থেকে চলে আসা প্রথা ভাঙার পক্ষে নন কেউ কেউ, অনেকে আবার রবিবারের ছুটির প্রয়োজনীয়তাও অস্বীকার করতে পারছেন না৷ ছোট থেকে পাঠভবনে পড়েছেন প্রত্যুষ মুখোপাধ্যায়৷ ভূগোল বিষয়ে স্নাতক পড়া এই ছাত্র বলেন, ‘‘বুধবার ছুটি বলে আমাদের কখনো তেমন অসুবিধা হয়নি৷ ক্লাস কামাই করেই রবিবারের কাজ সেরেছি৷ বুধবারের ঐতিহ্য বজায় রাখা উচিত৷ শোনা যাচ্ছে, বুধ ও রবিবার ছুটি হবে৷ তাহলে আবাসিক পড়ুয়ারা বাড়ি যাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়বেন৷’’

বিশ্বভারতীর শিক্ষকদের একাংশ অবশ্য ছুটি পরিবর্তনে বিশ্বকবির পরম্পরা নষ্ট হবে বলে মানছেন না৷ তাঁদের বক্তব্য, রবীন্দ্রনাথ যখন বুধবার ছুটির কথা বলেছিলেন, তার সঙ্গে এই সময়ের অনেক পার্থক্য রয়েছে৷ ছুটির থেকে তিনি কাজকেই বেশি অগ্রাধিকার দিয়েছেন বলে এই বিপুল সৃষ্টি রেখে গিয়েছেন৷ ফলে, ছুটি পরিবর্তনে তাঁর ভাবধারা আহত হয়েছে, এই যুক্তি ঠিক নয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ