দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৯৩ সালের ২ এপ্রিল বিদেশের মাটিতে সেনা পাঠানোর পরিকল্পনার অনুমোদন দেয় জার্মান সরকার৷ সেটা ছিল ন্যাটোর মিশন৷ গন্তব্য সাবেক যুগোস্লাভিয়া৷

বিদেশে জার্মান সেনা মোতায়েন অবৈধ বলে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর দাবির প্রেক্ষিতে জার্মানির সাংবিধানিক আদালত এক রায়ে বলে যে, সেটা আইন বিরোধী নয়৷ তবে এর আগে জার্মান সংসদের অনুমতি নেয়ার কথা বলেছে ঐ আদালত৷

ন্যাটোর হয়ে ১৯৯৯ সালে জার্মান সেনারা কসোভো যুদ্ধের সময় সার্বিয়ার অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট লক্ষ্যগুলোতে হামলা করে৷ এটা ছিল বিতর্কিত একটা হামলা, কেননা নিজেদের রক্ষার্থে এই হামলা করেনি জার্মান সেনারা৷ তাছাড়া এ ব্যাপারে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সমর্থন ছিল না৷

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বের নিউ ইয়র্কের টুইন টাওয়ারে হামলার পর শুরু হওয়া ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’-এ অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জার্মানি৷

২০০২ সাল থেকে ন্যাটোর নেতৃত্বাধীন আইসাফ বাহিনীর হয়ে আফগানিস্তানে রয়েছে জার্মান সেনারা৷ এখন পর্যন্ত আফগান যুদ্ধে ৫২ জন জার্মান সেনা নিহত হয়েছে৷

২০০৯ সালের ৪ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় কুন্দুজ শহরে জার্মান কর্নেল গিওর্গ ক্লাইন-এর নির্দেশে দুটি তেলের ট্যাঙ্কারে বোমা হামলা চালানো হয়৷ এতে শিশু সহ প্রায় ১০০ নিহত হয়৷ বিদেশে জার্মান সেনাদের হাতে নিহত হওয়ার এটাই সবচেয়ে বড় ঘটনা৷

গত বছর ডিসেম্বরে তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বসায় জার্মানি৷ সিরিয়ায় চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষিতে নিজেদের রক্ষায় ন্যাটোর কাছে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্থাপনের অনুরোধ জানায় সংগঠনের অন্যতম সদস্য তুরস্ক৷ সেই থেকে জার্মানির ২৯৮ জন সেনাও সেখানে রয়েছে৷

১৯৯৩ সাল থেকে বিদেশে কাজ করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০ জন জার্মান সেনা নিহত হয়েছে৷ তাদের স্মরণে ২০০৮ সালে বার্লিনে একটি স্মৃতিস্মারক স্থাপন করা হয়৷