প্রথমে করোনাভাইরাস মানুষের অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতায় ফাটল ধরিয়েছিল। আর এখন ইউক্রেন যুদ্ধ নিত্যপণ্যের বাজারে ধস নামাচ্ছে। এই বিষয়গুলো আমাদের ডি-গ্লোবালাইজেশনের কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে৷
বিজ্ঞাপন
বিশ্বায়নের কথা তো কম বেশি সবাই জানে। কিন্তু অবিশ্বায়ন বা ‘ডিগ্লোবাইলেজশন’ সম্পর্কে কয়জনই বা জানে? সরবরাহ খাতে বিশৃঙ্খলা, পণ্যের ঘাটতি এবং ঊর্ধগতি এসব যে প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত, সেটাই ডিগ্লোবালাইজশন৷
বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করছেন, করোনা মহামারির পর, ইউক্রেন যুদ্ধ এই দুয়ে মিলে ‘ডি গ্লোবালাইজেশন যুগের’ সূচনা করবে৷
কিন্তু এই নতুন পৃথিবীটা কেমন হবে?
বিশ্বায়নের সংজ্ঞা
বিশেষজ্ঞরা সাধারণত তিন ধরনের বিশ্বায়নের কথাবলে থাকেন৷ অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক।
অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের ফলে বিশ্ব অর্থনীতি টিকে আছে৷ এর ফলে সাধারণ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা সম্ভব হয়েছে।
জার্মান অর্থনীতিবিদ কোরা ইয়ুং ব্লুথ বলেন, “বিশ্বায়নের প্রভাব সমাজ এবং পরিবেশের উপরও পড়ে। উচ্চ আয়ের দেশগুলোর কর্মীরা কাজ করতে নিম্ন আয়ের দেশে চলে যাচ্ছেন এবং সেখান থেকে বহুজাতিক কর্পোরেশনগুলি উৎপাদনের জন্য অন্যরকম পদক্ষেপ নিয়েছে, যার ফলে পরিবেশে এর প্রভাব পড়েছে।“
যুক্ত্ররাষ্ট্রের ডার্ট্মাউথ কলেজের অর্থনীতির প্রভাষক ডগলাস আরউইন ব্যাখ্যা করেছেন, “১৯৯০ এবং ২০০০ এর দশকে বিশ্বজুড়ে জিডিপিতে রপ্তানির অনুপাত বেশ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছিল। কিন্তু ২০০৮ এবং ২০০৯ সালের অর্থনৈতিক মন্দার পর তাতে সমতা এসেছে বা কমে গেছে।“
হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের অর্থনীতিবিদ মেগান গ্রেনে বলেন, “এরকম সংকট সরবরাহের ধারায় মৌলিক পরিবর্তন সৃষ্টি করেছে। এই মহামারিতে মজুদের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে যাতে বিশ্বব্যাপী সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটলেও কাউকে বিপদে পড়তে না হয়।“
এরপর শুরু হলো ইউক্রেন যুদ্ধ
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর রাশিয়ার কৃষি এবং জ্বালানি খাতে নিষেধাজ্ঞার পর এর প্রভাব টের পেলেন বিশ্ববাসী৷
রাশিয়া এবং ইউক্রেন গম এবং সূর্যমূখী তেল রপ্তানিতে বিশ্বের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি দেশ।
অর্থনীতিবিদ থেসিস পিটারসেন মনে করেন, “জ্বালানি আমদানিতে আমাদের ঘাটতি রয়েছে কারণ ইউরোপ রাশিয়ার জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল এবং পুরো বিশ্বের রাশিয়া এবং ইউক্রেনের কৃষিজাত পণ্যের প্রয়োজন রয়েছে।“
শুধু নিম্ন আয়ের দেশগুলিতেই নয়, বিশ্বের উচ্চ আয়ের দেশগুলিতেও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঘাটতি এবং মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব অনুভব করা যাবে। অর্থনীতিবিদদের আশংকা “গম এবং তেলের উপর নির্ভরশীল দেশগুলো তে দুর্ভিক্ষও দেখা যেতে পারে।“
যেভাবে তুরস্কের অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে চান এর্দোয়ান
১৯ বছর ধরে ক্ষমতায় এর্দোয়ান৷ তবে আগের ১৮ বছরে এত সংকট দেখেনি তুরস্ক৷ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ১১ বছর, তারপর প্রেসিডেন্ট হিসেবে ৮ বছর পার করা এর্দোয়ান অবশ্য সংকট থেকে উত্তরণের চেষ্টা করছেন৷ ছবিঘরে বিস্তারিত...
ছবি: Dilara Senkaya/REUTERS
যে কারণে সংকট
করোনাকালে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশই সংকটে পড়েছে৷ সেই সংকট কাটিয়ে উঠছে অনেক দেশ৷ তুরস্কও বেশ সামলে নিচ্ছিলো৷ কিন্তু গত বছর ব্যাংকে সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত নিলেন এর্দোয়ান৷ অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, এই সিদ্ধান্ত তুরস্কের অর্থনৈতিক বিপর্যয়কে ত্বরান্বিত করেছে৷ গত দু বছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তিনজন গভর্নরকে সরিয়েছেন এর্দোয়ান৷ তিনজনই ছিলেন সুদের হার কমানোর বিপক্ষে৷
ছবি: DW/U. Danisman
মুদ্রাস্ফীতি
ইতিমধ্যে তুরস্কে বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতি প্রায় ৫০ শতাংশে পৌঁছেছে৷ ডলারের তুলনায় তুর্কি লিরার দাম অতি নিম্নগামী৷ ২০২১-এর শেষ দিকে লিরার দাম ৪৪ শতাংশ কমে যায়৷
ছবি: Getty Images/C. McGrath
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য এবং ওষুধের দাম বাড়ছে দ্রুত৷ মূল্যস্ফীতি এখন প্রায় ৩৭ শতাংশ৷ গত ২০ বছরে আর কখনো মূল্যস্ফীতি এ পর্যায়ে যায়নি৷ বিশ্বের অনেক দেশেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সুদের হার বাড়ানো হয়৷ তাতে মানুষের ঋণ নেয়ার প্রবনতা কমে, হাতে টাকা কমে যায় আর টাকা কম থাকলে কেউ কম প্রয়োজনীয় বা অপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে চায় না৷ এর ফলে অনেক পণ্যের দাম কমে যায়৷ এর্দোয়ান সুদের হার কমানোয় উলটো ফল হয়েছে৷
ছবি: DW
আমদানি-ব্যয় বৃদ্ধি
তুরস্কের অর্থনীতি প্রধানত আমদানিনির্ভর৷ কিন্তু ডলারের বিপরীতে তুর্কি লিরার দাম কমে যাওয়ায় অনেক পণ্যের আমদানি-ব্যয় বেড়ে গেছে৷ তাতে স্থানীয় বাজারেও বেড়েছে পণ্যের দাম৷ অনেক পণ্যের দামই এখন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে৷
ছবি: Tolga Ildun/ZUMA/picture alliance
এর্দোয়ানের যুক্তি
ক্ষমতায় আসার পর থেকে এর্দোয়ান বিভিন্ন সময় সুদের হার কমিয়ে মূলত শিল্পপতিদের ঋণ নেয়ায় উৎসাহিত করেছেন৷ এর ফলে অতীতে শিল্পের বিকাশ হয়েছে, প্রবৃদ্ধিও এসেছে৷ এর্দোয়ান মনে করেন, সুদের হার কমালে সাধারণ মানুষও ঋণ নেবে, সেই ঋণের টাকায় তারা খাবার এবং নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কিনবে, তাতে বাজার চাঙা থাকবে, কর্ম সংস্থান বাড়বে৷ কিন্তু করোনাকালে নানাভাবে ভুগতে থাকা মানুষের জীবনে এমন পরিবর্তন এখনো দেখা যায়নি৷
ছবি: Irina Yakovleva/ITAR-TASS/imago images
দানা বাঁধছে ক্ষোভ
অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত মানুষেরা ইতিমধ্যে ছোট ছোট মিছিলে বিক্ষোভ জানাতে শুরু করেছে৷ নার্স, খাবার সরবরাহকারীসহ অনেক পেশার মানুষ শরিক হচ্ছেন সেই মিছিলে৷
ছবি: Dilara Senkaya/REUTERS
এর্দোয়ান সরকারের আশা
তবে প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ান এবং অর্থমন্ত্রী নুরেদ্দিন নেবাতি মনে করেন, জনগণ আর কয়েকটা মাস ধৈর্য ধরলেই সংকট কেটে যাবে৷ ধারণা করা হচ্ছে, লিরার দরপতন রুখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডিসেম্বরে ২০ বিলিয়ন ডলার এবং জানুয়ারিতে ৩ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে৷ তাছাড়া আগামী মে নাগাদ তুরস্কে পর্যটকদের ভিড় আবার হয়ত বাড়বে৷ এর্দোয়ানের তাই আশা- সংকট কাটিয়ে উঠতে আর বেশি সময় লাগবে না৷
ছবি: Dilara Senkaya/REUTERS
সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ
অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠা-না-ওঠার ওপর অনেকটাই নির্ভর করছে এর্দোয়ানের ভবিষ্যৎ৷ ২০২৩ সালে আবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন৷ দেশের অর্থনীতির প্রভাব তো নির্বাচনে পড়তেই পারে!
ছবি: Sertac Kayar/REUTERS
8 ছবি1 | 8
বিশ্বায়ন যুগের অবসান
অর্থনীতিবিদ গ্রিনে উল্লেখ করেন, “বিশ্বায়ন পরিমাপের কোন সূচক নেই। বিশ্বায়নের সুসময় এখন আর নেই। কিন্তু আমি বলবো, এই প্রক্রিয়া এখন আরো ধীরগতিতে চলছে। আমরা এখনো অবিশ্বায়নের পর্যায়ে চলে যাইনি।“
সাহসী নতুন সংযোজন
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, “রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এবং চীন থেকে মূলধন অপসরণ একটি প্রবণতাকে নির্দেশ করছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, দেশগুলি তথাকথিত সংকটপূর্ণ নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা করছে, যা অবিশ্বায়নের দিকে পরিচালিত করতে পারে।“
অর্থনীতিবিদরা বিশ্বাস করেন যে বিশ্ব বর্তমানে দুটি স্বতন্ত্র অর্থনৈতিক দলের দিকে যাচ্ছে: একটি দল গণতান্ত্রিক অর্থনীতির দেশ (যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ওশেনিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ অ্যামেরিকা) এবং আরেকটি দল স্বৈরাচারী রাষ্ট্রগুলির (চীন, রাশিয়া এবং তাদের অংশীদারেরা)।
ইতিহাসবিদ আন্দ্রেয়াস ভিরশিং বলেন, “আমরা নতুন যুগের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌছেছি কিনা এটা বর্তমানে একটি জনপ্রিয় আলোচ্য বিষয়। করোনা মহামারি এবং এখনকার যুদ্ধ নিয়ে একসাথে চিন্তা করলে বোঝা যায় যে বিশ্বে মৌলিকভাবে কিছু একটা পরিবর্তন ঘটছে।“
সোনিয়া অ্যাঞ্জেলিকা দিন/এএস
বাক্সবন্দি
শুধু একটা স্টিলের বাক্স, কিন্তু তার কল্যাণে বিশ্ববাণিজ্যের চেহারাই বদলে গেছে, সম্ভব হয়েছে বিশ্বায়ন৷ বিশ্বের পণ্যের ৯৫ শতাংশই কোনো না কোনো সময় কনটেইনার হয়ে আসে৷
গত শতাব্দীর ত্রিশের দশকের শেষদিক৷ ম্যালকল্ম ম্যাকলিন নামের এক মার্কিনি তাঁর তুলোর গাঁটগুলো বার বার তুলতে, নামাতে, প্যাক করতে করতে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছিলেন৷ তখন তাঁর মাথায় আইডিয়া আসে: তুলোর গাঁটগুলো স্টিলের কনটেইনারে ভরে ট্রাকে বা জাহাজে তুলে পাঠালে কেমন হয়? সে কল্পনা বাস্তবে পরিণত করতে আরো বিশ বছর লেগে গিয়েছিল৷
ছবি: bremenports/BLG
সূচনায়
পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি ম্যাকলিন (ছবিতে যাকে দেখা যাচ্ছে) তাঁর লরির বহর বেচে একটি ছোট শিপিং কোম্পানির দায়িত্ব নেন৷ একটি ট্যাংকার জাহাজের রদবদল করে তাতে নেওয়ার্ক থেকে হুস্টনে কনটেইনার পাঠানো হয় ১৯৫৬ সালের এপ্রিল মাসে৷ কনটেইনার শিপিং-এর সেই সূচনা৷ প্রথমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপসাগরীয় উপকূল ধরেই কনটেইনার জাহাজ চলত, পরে তা সারা পৃথিবীতে চালু হয়৷
ছবি: Maersk Sealand
বড় বাক্সে, ছোট বাক্সে নয়
ক্রেট বা বাক্সে করে মাল পাঠানোর প্রথা আজকের নয়৷ ম্যাকলিনের ধারণার অভিনবত্ব ছিল সেই বাক্সের সাইজ৷ ১৯৬১ সালে বিশ্বব্যাপি কনটেইনারের সাইজ নির্দিষ্ট করা হয়: তথাকথিত ২০ ফুট কনটেইনার, পরিভাষায় যাকে বলে ‘টোয়েন্টি-ফুট ইকুইভ্যালেন্ট ইউনিট’ বা টিইইউ৷ জাহাজও মাপা হয় টিইইউ-তে৷
ছবি: Imago
আইডিয়াটা সহজ, কিন্তু দারুণ!
সারা বিশ্বে একই সাইজের আধার চালু হওয়ার ফলে মাল একই কনটেইনারে প্রেরকের কাছ থেকে প্রাপক অবধি চলে যায়, যার ফলে পরিবহণের খরচাও কমে৷ আগে যেখানে ৮০ টন মাল নাড়চাড়া করতে ১৮ জন লোক লাগত, আজ ন’জন মাত্র মানুষ একের পর এক কাজ করে দু’হাজার টন মাল লোড করতে পারেন৷
ছবি: HHLA
সব কনটেইনার এক নয়
২০ টিইইউ-এর একটি কনটেইনারের আকার হলো কম-বেশি ছয় মিটার বাই আড়াই মিটার বাই আড়াই মিটার৷ এতে দশ হাজার জিন্স বা বিশ হাজার হাতঘড়ি ধরে৷ খাবারদাবার রাখার জন্য রেফ্রিজারেটেড বা হিমায়িত কনটেইনার আছে (যেমন ছবিতে); ট্যাংক কনটেইনারে তরল পদার্থ পরিবহণ করা চলে; আবার ভেন্টিলেটেড বা বাতাস যুক্ত কনটেইনারও আছে৷ একটি সাধারণ স্টিলের কনটেইনার বছর তেরো অবধি কাজ দেয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Ressing
ইউরোপের পথে
৬০ বছর আগে জার্মানিতে প্রথম কনটেইনার আসে৷ তারিখটা ছিল ১৯৬৬ সালের ৫ই মে: সেদিন ম্যাকলিন শিপিং কোম্পানির ‘ফেয়ারল্যান্ড’ জাহাজটি ১১০টি কনটেইনার নিয়ে ব্রেমেনে এসে পৌঁছয়৷ সবাই তখন ‘পাগল অ্যামেরিকান সাহেবের’ কথাই বলেছিলেন৷ আজ সেই কনটেইনার শিপিং ছাড়া দুনিয়া চলে না৷
স্বভাবতই বন্দরগুলোকে কনটেইনার তোলা বা নামানোর জন্য কিছু কিছু রদবদল করে নিতে হয়েছে৷ গোড়ায় কোনো নির্ভরযোগ্য প্রণালী না থাকায় কনটেইনার অনেক সময় ‘হারিয়ে’ যেত – অর্থাৎ সেটা কোথায় রাখা হয়েছে, তা গোলমাল হয়ে যেত৷ পরে কনটেইনার ব্রিজ তৈরি হওয়ার ফলে তোলা-নামানোর কাজ অনেক সহজ হয়েছে৷ এছাড়া নতুন যে কনটেইনার শিপগুলো তৈরি হয়েছে, বন্দরে সেগুলোর জন্যও নোঙর ফেলার ব্যবস্থা রাখতে হয়েছে৷
ছবি: HHLA
ম্যাকলিনের ম্যাজিক
গোড়ায় জাহাজের মালিক থেকে শুরু করে বন্দর কর্তৃপক্ষ, রেলওয়ে কোম্পানি বা শ্রমিক সংগঠন, সকলেরই আপত্তি ছিল৷ শ্রমিকদের ভয় ছিল, তাদের চাকরি যাবে, নয়ত নতুন সব ক্রেন, ট্রাক ও কনটেইনার নিয়ে কাজ করাটা অনেক বেশি শক্ত হবে৷ কিন্তু ম্যাকলিন তাদের সব ভয় দূর করতে সমর্থ হন৷ কনটেইনারের জনক যখন অবশেষে ২০০১ সালে পরলোকগমন করেন, তখন তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর৷