বিশ্বের অন্যতম বড় হীরার খোঁজ
২৩ সেপ্টেম্বর ২০০৮লন্ডনভিত্তিক মাইনিং কোম্পানি জেম ডায়মন্ডস জানিয়েছে, ৮ সেপ্টেম্বর পাওয়া হীরাটির ওজন ৪৭৮ ক্যারেট৷ অমসৃণ অবস্থায় এটি বিশ্বের ২০তম বড় হীরা৷ সাদা এই রত্নটিতে রয়েছে রংয়ের বৈচিত্র্য৷ কাটার আগেই এর স্বচ্ছতা দেখে বিস্মিত বিশেষজ্ঞরা৷ তাঁদের ধারণা, কাটার পর রং,স্বচ্ছতা আর গুণগত মানের দিক থেকে হীরার জগতে নতুন রেকর্ড করবে এটি৷ মসৃণ অবস্থায় গোলাকৃতির হীরাটির ওজন দেড়শ ক্যারেট হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷
অমসৃণ অবস্থায় হীরার দাম হাঁকানো কঠিন৷ নতুন এই হীরাটির প্রতি ক্যারেট ৪৫ হাজার মার্কিন ডলারেরও বেশি দামে বিক্রি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ রং আর আকৃতির কারণে এটি হবে অন্যতম দামী হীরা৷
নতুন আবিষ্কৃত হীরাটির নাম রাখা হয়নি এখনো৷ পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য এখন এটি রয়েছে বিখ্যাত হীরা বাণিজ্য কেন্দ্র বেলজিয়ামের অ্যান্টওয়ের্প-এ৷
বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত হীরার খনি লেসোথোর লেসটেং৷ এ যাবত্কালের সবচেয়ে বড় ২০টি হীরার মধ্যে ৪টিই পাওয়া গেছে এই খনিতে৷ আর গত এক শতকেই পাওয়া গেছে তাদের ৩টি৷
আর হীরার ইতিহাসে বেশ দাপটের সঙ্গে রয়েছে আফ্রিকা৷ বিশ্বের সবচেয়ে বড় হীরাটিও পাওয়া গেছে এই আফ্রিকাতেই৷ ১৯০৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় আবিস্কার হয় কুলিনান নামের হীরাটি৷ যাকে বলা হয় দ্য গ্রেট স্টার অব আফ্রিকা৷ খনি থেকে তোলার সময় হীরাটির ওজন ছিল ৩,১০০ ক্যারেট৷ আর কাটার পর ওজন হয় ৫৩০ ক্যারেট৷ হীরার ১০৫টি খণ্ডের অধিকাংশই এখন শোভা পাচ্ছে ব্রিটিশ রাজ মুকুটে৷
তবে কাটার পর বিশ্বের সবচেয়ে বড় হীরা হলো দ্য গোল্ডেন জুবিলি৷ এটিও পাওয়া যায় দক্ষিণ আফ্রিকাতেই৷ ১৯৮৫ সালে দেশটির প্রিমিয়ার মাইনে আবিস্কার করা হয় ৭৫৫ ক্যারেটের হীরাটি৷ কাটার পর যার ওজন দাঁড়ায় ৫৪৫ ক্যারেট৷ ১৯৯৭ সালে থাই রাজা ভূমিবল আদুলিয়াদেই-এর সিংহাসনে বসার ৫০ বছর পূর্তিতে রাজাকে উপহার দেয়া হয় এটি৷ আর সেই থেকে এর নাম হয়েছে গোল্ডেন জুবিলি৷ এর আগে আননেইমড ব্রাউন হিসেবে পরিচিত ছিলো এটি৷
সবচেয়ে বড় হীরা আফ্রিকায় পাওয়া গেলেও বিশ্ববাসীকে সবচেয়ে দামী এই রত্নটি চিনিয়েছে কিন্তু ভারতবর্ষ৷ ১৭৩০ সাল পর্যন্ত হীরার একমাত্র উত্সস্থল বলতে ছিলো দক্ষিণ ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ৷ আর সেখানেই পাওয়া যায় বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন আর জগদ্বিখ্যাত হীরা কহিনূর৷ ১০৫ ক্যারেটের এই হীরার জন্য কতো না রক্ত ঝরেছে ভারতবর্ষে৷ রাজকীয় হীরাটি শোভা পেয়েছে মোঘল বাদশাহ আর সুলতানী শাসকদের মাথায়৷ উনিশ শতকে এই রত্ন দখলে নেয় ব্রিটিশ শাসকরা৷ আর আজ ব্রিটিশ রাজমুকুটে রয়েছে ভারতের বিখ্যাত সেই কহিনূর৷