বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলির সম্পদ কমছে: জাতিসংঘ
৩০ মার্চ ২০১১পৃথিবীর বেশিরভাগ দরিদ্র দেশ গত শতকে একটু ধনী হয়েছিল, মানে অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি করেছিল, কিন্তু এই ধনী হওয়াটা বেশি দিন ধরে রাখা যাচ্ছে না৷ আবারো দেশগুলো চলে যাচ্ছে দারিদ্র্যের সীমাতেই, এমনটাই জানাচ্ছে জাতিসংঘের নয় সদস্যের একটি কমিটির প্রতিবেদন৷ এই কমিটিতে সদস্য যারা আছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান জেমস ওল্ফেনসন এবং মালির সাবেক প্রেসিডেন্ট আলফা উমার কোনারে৷
ঐ প্রতিবেদনে জানানো হচ্ছে, বিশ্বের গড় মাথাপিছু আয়ের সঙ্গে তুলনা করে ১৯৭১ সালে দেখা গেছে, দরিদ্রতম দেশগুলোতে মাথাপিছু আয় ছিল আঠারো শতাংশ৷ কিন্তু ২০০৮ সালে এসে দেখা গেলো সেই হিসাব কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ শতাংশে৷ একদিকে রয়েছে তথাকথিত এলডিসি বা স্বল্পোন্নত আটচল্লিশটি দেশ, যেগুলোর অধিকাংশের অবস্থান আফ্রিকায়৷ অন্যদিকে রয়েছে মধ্যম আয়ের দেশগুলো, যারা বিশ্বের গড় আয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এগিয়ে চলেছে৷ এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মাথাপিছু আয়ের ফারাক ক্রমেই যেন বেড়ে যাচ্ছে৷
আগামী ৯ থেকে ১৩ই মে এ বিষয়ে ঐ বিশেষজ্ঞ প্যানেলের একটি সভার আগে প্রকাশিত সেই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দরিদ্রতম দেশগুলো নানা পণ্য থেকে বেশ অর্থ আয় করছে৷ কিন্তু এই অর্থ তাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য খুব একটা ব্যয় করা হচ্ছে না৷ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২০ বছরে দরিদ্রতম দেশগুলোর অর্ধেকের অর্থনীতি হয়েছে নিম্নমুখী৷ এর কারণ হিসাবে মূলত শিক্ষার অভাব, স্বাস্থ্য খাতে অনুন্নয়ন, পুষ্টির অভাব,এবং প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল অবকাঠামো, তদুপরি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের জন্য অন্য দেশের উপর নির্ভরশীলতাকেই দায়ী করছেন তারা৷
তাদের ভাষ্য, এই অবস্থার পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন নিজ নিজ দেশের নিজস্ব পরিকল্পনা৷ সেই সঙ্গে দরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা, পাচার হওয়া সম্পদ দেশে ফিরিয়ে আনা এবং দেশের নিজস্ব উৎপাদন ব্যবস্থাকে দ্বিগুণ করা৷ তারা জানিয়েছেন, উন্নত দেশ গুলো দরিদ্র দেশগুলোর জন্য সাহায্যে পরিমাণ দুই বছরের মধ্যে বাড়িয়েছে শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশ আর ২০১৫ সাল নাগাদ তা বেড়ে দাঁড়াবে ও শূন্য দশমিক ২ শতাংশ৷
প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন