বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ঘূর্ণিঝড়ের কারণ
৩ জানুয়ারি ২০২৩
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কেন এত হারিকেন ঝড় দেখা যায়? ভৌগলিক অবস্থানই এমন বিপর্যয়ের কারণ৷ হারিকেন ক্রান্তীমণ্ডলীয় অঞ্চলের ঘূর্ণিঝড়গুলির অন্যতম৷ বাতাসের চরম গতি ও প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে এমন ঝড় বিশাল ক্ষয়ক্ষতি ঘটায়৷ ফলে হারিকেন মানুষের ভয়ের কারণ৷ এমন ঘূর্ণিঝড় কয়েক'শো কিলোমিটার আকার ধারণ করতে পারে এবং কয়েক ঘণ্টা ধরে একটি জায়গায় ধ্বংসলীলা চালাতে পারে৷
বিষুবরেখার চারিদিকে পানির বিস্তৃত অংশে এমন ঝড় দানা বাঁধে৷ তবে সেখানকার তাপমাত্রা কমপক্ষে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে হবে৷ একমাত্র অ্যাটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব দিকে যে ঘুর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়, সেগুলিকে হারিকেন বলা চলে৷ জুন থেকে নভেম্বর মাস হারিকেনের মরসুম হিসেবে পরিচিত৷ সে সময়ে প্রচুর পরিমাণ পানি বাষ্পীভূত হয় এবং উষ্ণ বাতাসের সঙ্গে উপরে উঠে যায়৷
আমাদের পৃথিবী ঘুর্ণীয়মান গোলক হওয়ায় বাতাস বিষুবরেখার উত্তর ও দক্ষিণে ধেয়ে যায়৷ বাতাস ঘুরতে থাকে, দৈত্যাকার ঘুর্ণির সৃষ্টি হয়৷ ঘুর্ণির মাঝে তথাকথিত ‘আই' বা চোখ থাকে৷ হারিকেনের সেই কেন্দ্রস্থলে বাতাস বা বৃষ্টির কোনো চিহ্ন থাকে না৷
ক্রান্তিমণ্ডলীয় ও উপক্রান্তীয় অক্ষরেখা বরাবর এমন ঘুর্ণিঝড় সৃষ্টি হলে সেগুলি সাধারণত পশ্চিম থেকে উত্তর পশ্চিম দিকে ধেয়ে যায়৷ অ্যাটলান্টিক মহাসাগরে হারিকেন প্রায়ই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের কাছে এসে পড়ে৷ সেখানকার উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোত সেই হারিকেনকে আরও শক্তিশালী করে তোলে৷
২০১৭ সালে নাসার এক স্যাটেলাইট অ্যাটলান্টিকের উপর তিন-তিনটি ঘুর্ণিঝড়ের আগমনের ছবি তুলেছিল৷ মহাকাশ থেকে ইতোমধ্যে বিস্তারিতভাবে ঘুর্ণিঝড়ের উপর নজর রাখা যাচ্ছে৷ ফলে হারিকেনের উৎপত্তি ও গতিপথ নথিভুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে৷ অ্যাটলান্টিক মহাসাগরে প্রতি বছর হারিকেনের গতিপ্রকৃতিও ধরা পড়ছে৷ দেখা যাচ্ছে, বেশ কয়েকটি হারিকেন ইস্ট কোস্টের উপর দিয়ে চলে যায়৷ অন্যদিকে পশ্চিম উপকূল রেহাই পায়৷ সেখানে ঝড় পশ্চিম দিকে সমুদ্রের উপর চলে যায়৷
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়ও ঘুর্ণিঝড় দেখা যায়৷ সেখানে ঘূর্ণিঝড়ের নাম হারিকেন নয়, টাইফুন রাখা হয়েছে৷ প্রায় এক তৃতীয়াংশ ঘূর্ণিঝড় সেখানেই সৃষ্টি হয়৷ বিশ্বের অন্য কোনো অঞ্চলকে ঝড়ের এমন ধাক্কা সামলাতে হয় না৷
কর্নেলিয়া বরমান/এসবি