বিশ্বের সবচেয়ে গভীর সুইমিংপুল
৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১৪৫.৪ মিটার৷ এটাই বিশ্বের সবচেয়ে গভীর সুইমিংপুল৷ পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশর দক্ষিণে মিশচনোভ এলাকায় গত নভেম্বরে এটি চালু হয়৷ ডাইভারদের কাছে এটি যেন খেলার মাঠ৷ ডাইভিংয়ে প্রশিক্ষণ নিতে আগ্রহী থেকে শুরু করে পেশাদার ডাইভার- সবাই সেখানে অনুশীলন করতে পারেন৷
স্কুবা ডাইভার লুকাস সিমানস্কি বলেন, ‘‘পূর্ব ইউরোপে শীতকালটা একটু বেশিই ঠাণ্ডা হয়ে থাকে৷ এই সময় অনুশীলন করা খুব কঠিন৷ তবে এই পুলে সারা বছর প্র্যাকটিস করা যাবে৷ ফলে যখন গ্রীষ্মকাল আসবে তখন আমরা যে-কোনো আবহাওয়ায় ডাইভিংয়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে পারব৷''
কেউ যদি শরীর না ভিজিয়ে পুলে যেতে চায়, সেটাও সম্ভব৷ কারণ সেখানে পানিরপাঁচ মিটার গভীরে একটি টানেল তৈরি করা হয়েছে৷ যেন একটা অ্যাকুরিয়াম৷
পুলের পরিকল্পনাকারী মিশাল ব্রুসিনস্কি৷ তিনি বলেন, ‘‘টানেলের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো, এটি ২০ মিটার লম্বা৷ এছাড়া এটি এমনভাবে বানানো হয়েছে, যেন কোনো বাধা ছাড়াই পুল দেখা যায়৷''
অন্ধকার গুহার মধ্যে ডাইভিংয়ের প্রশিক্ষণও নেয়া যায়৷ তবে সেজন্য আপনাকে অভিজ্ঞ ডাইভার হতে হবে৷ পুলের সব জায়গায় ভিজিবিলিটি দারুণ৷ আর পানির তাপমাত্রা সবসময় ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নির্দিষ্ট করা থাকে৷
স্কুবা ডাইভার লুকাস সিমানস্কি বলেন, ‘‘পুলে চারটি স্তর আছে৷ অসাধারণ৷ আমার জন্য গভীরতার বিষয়টি তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়৷ কেভ সিস্টেমটা দারুণ৷''
পুলের মূল অংশটুকু ২০ মিটার গভীর৷ কম অভিজ্ঞ ডাইভারদের এই গভীরতা পর্যন্ত যেতে দেয়া হয়৷
মিশাল ব্রুসিনস্কি বলেন, ‘‘নিজ সীমার বাইরে যাওয়ার বিষয় আমরা সমর্থন করিনা৷ ডাইভারদের নিজেদের ক্ষমতা মাথায় রাখতে হবে৷ অবশ্য প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে তারা আরও গভীরে যেতে পারেন৷''
ফিলিপ জাকুবিয়াক ফ্রিডাইভিংয়ের একজন প্রশিক্ষক৷ অক্সিজেন যন্ত্র ছাড়াই তিনি পুলের একেবারে গভীরে যেতে চান৷
সেজন্য তাকে প্রায় দেড় মিনিট দম বন্ধ রাখতে হবে৷
এই ‘ডিপস্পট' ফ্রিডাইভারদের জন্য প্রশিক্ষণের আদর্শ জায়গা৷ ফ্রিডাইভার ফিলিপ জাকুবিয়াক বলেন, ‘‘এখানে আপনি শুধু ৪৫ মিটার পর্যন্ত যেতে পারেন৷ কিন্তু একজন ফ্রিডাইভার এরচেয়েও গভীরে যায়৷ এক্ষেত্রে রেকর্ড হচ্ছে, একবার দম নিয়ে ১৩০ মিটার পর্যন্ত গিয়ে আবার ফিরে আসা৷ আর এক দমে সবচেয়ে গভীরে যাওয়ার রেকর্ডটা ২৪০ মিটারের৷''
সাগরের চেয়ে এখানে ডাইভিংকরার কয়েকটি সুবিধা আছে৷
মিশাল ব্রুসিনস্কি বলেন, ‘‘সাগরের চেয়ে এখানে ট্রেনিংয়ের সুবিধা হচ্ছে, এখানে ২৪ ঘণ্টাই প্রশিক্ষণ নেয়া যায়৷ কারণ আলো আর তাপমাত্রা সবসময় নির্দিষ্ট থাকে৷ এছাড়া আছে সর্বাধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা৷ ট্রেনাররা সবসময় লাইফগার্ড নিয়ে উপস্থিত থাকেন৷''
ডাইভিংয়ের জন্য আদর্শ জায়গা৷ অবশ্য আপনি যদি মাছ আর কোরাল রিফের অভাব অনুভব করেন তাহলে আপনাকে সাগরেই যেতে হবে৷
ইয়েনা ওর্টেল/জেডএইচ