হেংকিন দ্বীপ চীনের অন্যতম সমৃদ্ধশালী একটি নগরী৷ সেখানে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অ্যাকোয়ারিয়াম, যেখানে গেলে দেখতে পাওয়া যাবে ৬৩ মিটার দৈর্ঘ্যের এক বিশাল নীল তিমির স্ট্যাচু৷
বিজ্ঞাপন
ভাস্কর্যটি যেন হেংকিনের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিরই প্রতীক৷ অ্যাকোয়ারিয়ামে পানি রয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টন৷ এ বছরের মার্চেই এটি জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হয়৷ সেইসাথে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসেও স্থান করে নেয় এটি৷ নানা ধরনের মাছের পাশাপাশি, অ্যাকোয়ারিয়ামে আছে নীল সেইলফিশ, হাঙর ইত্যাদি৷ এর প্রবেশ মূল্য ৫০ ডলার৷
যেখানে যেতে ভালোবাসেন জার্মানরা
জার্মানরা অত্যন্ত ভ্রমণবিলাসী৷ আর কোনো জাতি এদের মতো দুনিয়া ঘোরে না৷ চলতি গ্রীষ্মে জার্মানরা তাহলে কোথায় কোথায় বেড়াতে যাচ্ছেন? আমাদের এই ছবিঘরে পাবেন উত্তর৷
ছবি: Fotolia/m.schuckart
নিজের উঠোন
নিজের দেশে অসংখ্য সুন্দর জায়গা থাকতে বিদেশে যেতে হবে কেন? প্রতি চারজনের একজন জার্মান এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজেন৷ ফলে জার্মানির মধ্যেই ছুটি কাটানোর ঠিকানা খোঁজেন তাঁরা৷ বাভারিয়ার পাহাড়ে চড়া, বাল্টিক এবং নর্থ সি’র সমুদ্র সৈকতে বিশ্রাম কিংবা রাতের বার্লিন উপভোগ – জার্মানদের সামনে সুযোগ অনেক৷
ছবি: Fotolia/Picturenick
স্পেনের সমুদ্র সৈকতে পার্টি
স্পেনের দ্বীপগুলো অনেক জার্মানের কাছেই প্রিয়৷ বিশেষ করে ভূ-মধ্যসাগরে অবস্থিত মায়োর্কা৷ ‘ফাউন্ডেশন ফর ফিউচার স্টাডিজ’-এর এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, চলতি বছর প্রায় আট শতাংশের মতো জার্মান স্পেন ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছেন৷ জার্মান পর্যটকদের ব্যাপক ভিড়ের কারণে অনেকে মজা করে মায়োর্কাকে জার্মানির সপ্তদশ রাজ্যও বলেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
তুরস্কে বিশ্রাম
তুর্কিদের বন্ধুভাবাপন্নতা জার্মানদের বিশেষ আকৃষ্ট করে৷ আর তাই এ বছর পাঁচ শতাংশের মতো জার্মান ছুটি কাটাতে যাচ্ছেন তুরস্কে৷ দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সমুদ্র উপকূলের বালুর সৈকত জার্মানদের পছন্দ৷ মোটের উপর তুরস্কে ভ্রমণ খুব একটা ব্যয়বহুল নয় এবং জার্মানি থেকে সেদেশ খুব দূরেও নয়৷ সম্ভবত সেসব কারণেই গত বছরের তুলনায় এবার আরো বেশি সংখ্যক জার্মান যাচ্ছেন তুরস্কে৷
ছবি: picture alliance/Friedel Gierth
ইটালির সঙ্গে জার্মানদের প্রণয়
ভেনিস, ফ্লোরেন্স, রোমের মতো ঐতিহাসিক এবং সুন্দর শহরগুলো পর্যটকদের ইটালিতে টেনে নিয়ে যায়৷ জার্মানরা ইটালিয়ানদের সহজ জীবনযাপন পছন্দ করে৷ এ বছর পাঁচ শতাংশের কিছু কম জার্মান সেদেশে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ক্রোয়েশিয়া: ইয়াখ্টিং, স্কুবা ডাইভিংসহ আরো কিছু
ক্রোয়েশিয়াকে কিছু জার্মান মনে করেন ‘‘সস্তা ইটালি’’৷ গত কয়েক বছরে পর্যটকদের গন্তব্যস্থান হিসেবে ক্রোয়েশিয়ার কদর বেশ বেড়েছে৷ ২০১৩ সালে ২.৪ শতাংশ জার্মান সেদেশে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত৷ স্বচ্ছ সমুদ্রজলে স্কুবা ডাইভিং অথবা নৌকা-ভ্রমণ অনেকের প্রথম পছন্দ৷
ছবি: picture-alliance/dpa
অস্ট্রিয়ার মন জুড়ানো পাহাড়ি বাতাস
অস্ট্রিয়ায় কোনো সমুদ্র সৈকত না থাকলেও দুই শতাংশ জার্মান পর্যটক সেদেশ ভ্রমণ করতে চান৷ তাঁরা মূলত আল্পস পর্বতে চড়তে বা সাল্সবুর্গের মতো সুন্দর শহর ভ্রমণেই আগ্রহী৷ অস্ট্রিয়া শুধু জার্মানির প্রতিবেশি দেশই নয়, সেদেশের মানুষ জার্মান ভাষাতে কথাও বলেন৷ ফলে অনেক বয়োজ্যেষ্ঠ জার্মান – যাঁরা কখনো ইংরেজি শেখেননি – ছুটি কাটাতে অস্ট্রিয়াকে বেছে নেন৷
ছবি: Fotolia/Jakob Radlgruber
ফ্রান্স – এই তো জীবন!
মার্সেই, বর্দো অথবা প্যারিস – এ সব যেন এক-একটা আলোর শহর, জীবনের প্রতিভূ৷ এছাড়া, ফ্রান্সে সংস্কৃতি আর শিল্পকলার কোনো অভাব নেই৷ তারওপর ফ্রান্সের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সমুদ্র উপকূলও অনেকের প্রিয়৷ তাই চলতি বছর দুই শতাংশের কিছু কম জার্মান সেদেশ সফরের পরিকল্পনা করছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
স্ক্যান্ডিনেভিয়ার শেষ না হওয়া গ্রীষ্মের দিন
খুব বেশি ব্যয়বহুল না হলে সম্ভবত আরো অনেক বেশি জার্মান স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দেশগুলো ভ্রমণ করতেন৷ তারপরও ডেনমার্ক, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনের অসাধারণ প্রকৃতি দেখতে খানিকটা বেশি টাকা খরচ করতে ১.৫ শতাংশ জার্মানের কোনো আপত্তি নেই৷
ছবি: Fotolia/World Images
গ্রিসের অসংখ্য দ্বীপ
গ্রিক দ্বীপে ছুটি কাটানোটা জার্মানদের জন্য বেশ কঠিন, কেননা এক হাজারেরও বেশি দ্বীপের মধ্য থেকে পছন্দেরটি বাছাই করা সহজ কথা নয়! তবে একটি বিষয় মাথায় রাখলে বিষয়টি সহজ৷ আর তা হচ্ছে, এসব দ্বীপের প্রায় সবকটিতে চমৎকার সৈকত রয়েছে৷ বর্তমানে অবশ্য আর্থিক মন্দার কারণে জার্মানিতে গ্রিকদের ভাবমূর্তি খানিকটা পড়তির দিকে৷ তারপরও এক শতাংশের কিছু কম জার্মান চলতি বছর গ্রিস সফরে আগ্রহী৷
ছবি: picture-alliance/Oliviero Oliv
আরো যা পছন্দ
আফ্রিকায় শিকার অভিযান, ক্যানাডায় ভালুক দেখা, দক্ষিণ অ্যামেরিকার রেনফরেস্ট কিংবা চীনের গ্রেট ওয়াল পরিদর্শন – চলতি বছর মাত্র আট শতাংশ জার্মান এরকম দূরের গন্তব্যে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন৷ স্বাভাবিকভাবেই, এ ধরনের ভ্রমণের খরচ নিজ দেশে ছুটি কাটানোর চেয়ে আড়াই গুন বেশি৷
ছবি: Fotolia/m.schuckart
10 ছবি1 | 10
হেংকিন একসময় জেলেদের গ্রাম হিসেবেই সুপরিচিত ছিল৷ বর্তমানে এটি অর্থনৈতিক শক্তিশালী একটি এলাকা হিসেবে গড়ে উঠেছে৷ তৈরি হয়েছে অনেক বহুতল ভবন৷ শিক্ষা, শিল্প কারখানা, পর্যটনের জন্য চীনের মধ্যবিত্তদের কাছে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এলাকাটি৷
হেংকিনের সরকার প্রধান নিউ জিং সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘‘হেংকিনের অবস্থানটা একেবারে ভিন্ন একটি জায়গায়, যেখানে প্রচুর সুযোগ সুবিধা রয়েছে, পাশে আছে ম্যাকাও ও হংকং৷''
দ্বীপটিকে পর্যটকদের কাছে আরও জনপ্রিয় করতে চীনা সরকার সেখানে নিষেধাজ্ঞা থাকা বিদেশি ওয়েবসাইটগুলো ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হবে বলে গত বছর জানিয়েছিল সরকার সমর্থিত একটি পত্রিকা৷ ফলে চীনের মূল ভূখণ্ডের নাগরিকরা ফেসবুক, টুইটার ও ইউটিউব ব্যবহার করতে না পারলেও হেংকিনে গেলে সেগুলো ব্যবহার করতে পারার কথা৷
তবে এএফপি-র সংবাদদাতা জানিয়েছেন এখনো সেখানে ফেসবুক, টুইটার ব্যবহার করা যাচ্ছে না৷ এ ব্যাপারে হেংকিন প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা মন্তব্য করতে রাজি হয়নি৷