বিশ্বে যত কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গত হয় তার ২৮ শতাংশের জন্য দায়ী চীন৷ এই পরিস্থিতির পরিবর্তন চায় দেশটি৷ নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে ইতিমধ্যে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করেছে চীন৷
বিজ্ঞাপন
নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে চীন
05:29
বেইজিং থেকে হাজার কিলোমিটারেরও বেশি দূরে উত্তর পশ্চিম অঞ্চলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সৌরপ্যানেলের সারি গড়ে উঠছে৷ মাত্র ৬০ লক্ষ অধিবাসীর নিংজিয়া অঞ্চলে প্রচুর সূর্যের আলো ও বিশাল খোলা এলাকা রয়েছে৷ অঞ্চলটি সৌরশক্তিতে বিশ্বের সেরা হতে চায়৷
এই প্রকল্পে কাজ করেন প্রকৌশলী ঝাং চুয়ান৷ এতবড় একটি প্রকল্পে কাজ করার জন্য নির্বাচিত হতে পেরে গর্বিত এই প্রকৌশলী৷ ঝাং চুয়ান বলেন, ‘‘নবায়নযোগ্য জ্বালানি ঐতিহাসিক এক সুযোগ৷....প্রতি বছর আমরা আট লক্ষ টন কয়লার ব্যবহার কমাতে পারি, যা প্রচুর পরিমাণ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাবে৷''
প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে ঝাং ও তাঁর সহকর্মীরা বিশ লক্ষ পরিবারকে সবুজ জ্বালানি দিতে পারবেন৷ এটি চীনের এরকম বেশ কয়েকটি প্রকল্পের একটি৷
চীনে সৌরশক্তির জয়যাত্রা
চীন ২০১৭ সালের প্রথম তিন মাসে আগের বছরের তুলনায় ৮০ শতাংশ বেশি সৌরশক্তি উৎপাদন করেছে৷ সরকার আরো বেশি সৌরশক্তির ব্যবহার দেখতে চায়৷ ইতিমধ্যেই সোলার প্যানেলে ছেয়ে গেছে দেশ৷
ছবি: picture alliance/Photoshot/Zhang Hongxiang
ধীরে ধীরে...
চীনের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি উত্তর-পশ্চিমের গানসু প্রদেশের দুনহুয়াং-এ অবস্থিত৷ ২০১০ সালে এখানে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়৷ দুনহুয়াংয়ের ১০০ মেগাওয়াট সে আমলে গোটা দেশের সৌরশক্তি উৎপাদনের একটা বড় অংশ ছিল৷ তারপর থেকে চীন সৌরশক্তির উৎপাদন আরো অনেক বাড়িয়েছে৷
ছবি: Getty Images/Feng Li
‘সূর্যমুখি’
দক্ষিণ চীনের চুঝু একটি ছোট শহর৷ চুঝুর পাহাড়ি এলাকায় দক্ষিণমুখি সব ঢাল জুড়ে সোলার প্যানেল বসানো হয়েছে৷ এলাকাটি কিন্তু নানজিং মহানগরী থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে৷
ছবি: Getty Images/AFP/STR
উচ্চাকাঙ্খা
চীন ২০২০ সালের মধ্যে বছরে ২০ গিগাওয়াট সৌরশক্তি উৎপাদনের ক্ষমতা অর্জন করতে চায়৷ ২০১৬ সালে চীন সব প্রত্যাশা ছাড়িয়ে অতিরিক্ত ৩৪ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছিল৷ ২০১৭-র প্রথম তিন মাসেই গত বছরের তুলনায় সৌরশক্তির উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৮০ শতাংশ৷
ছবি: Getty Images/K. Frayer
নির্মল বাতাস
চীন যে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করছে, তার মূল কারণ হলো, দেশের বড় শহরগুলিতে ব্যাপক বায়ুদূষণ৷ ছবিতে চল্লিশ লাখ বাসিন্দার শহর উহান-এ শ্রমিকরা একটি বাড়ির ছাদে সোলার প্যানেল বসাচ্ছেন৷
ছবি: Getty Images/K. Frayer
টেসলার সঙ্গে টক্কর
চীনের শহরগুলিতে বায়ুদূষণ রোধে বিদ্যুৎ-চালিত গাড়ি একটা বড় ভূমিকা নেবে৷ কিন্তু ইলেক্ট্রোমোবিলিটির জন্যও চাই বিদ্যুৎ – তাই চীন সরকার ২০২০ সালের মধ্যে সৌরশক্তি উৎপাদনে ৩৪,৩০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে চান৷
ছবি: Getty Images/AFP/Wang Zhao
বিশ্বের বৃহত্তম সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট
চীনের দেলিঙ্ঘায় ২৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিশ্বের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ চুল্লি গড়ে তোলা হচ্ছে৷ আয়নাগুলি সূর্যরশ্মি একত্রিত করে টাওয়ারের ওপর বসানো ছয়টি ‘কলেক্টার’-এর দিকে প্রতিফলিত করবে৷ এ থেকে যে উত্তাপ সংগৃহীত হবে, তা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে৷ নির্মাণকার্য শেষ হওয়ার পর দেলিঙ্ঘা ৮১০ মেগাওয়াট অবধি বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবে৷
ছবি: picture alliance/Photoshot/Zhang Hongxiang
6 ছবি1 | 6
নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে চীন গত বছর প্রায় ৭৮ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে৷ জার্মানি করেছে মাত্র ১৩ বিলিয়ন৷ ২০২০ সালের মধ্যে চীন ৩৬১ বিলিয়ন ডলার খরচের পরিকল্পনা করছে৷ ফলে সবুজ জ্বালানি ব্যবহারে চীন সবার চেয়ে অনেক এগিয়ে যাবে৷
পুরো চীনে বায়ুচালিত শক্তিরও প্রসার ঘটছে৷ তবে এখনও কিছু সমস্যার সমাধান করতে হবে, যেমন ইস্পাতের মতো ভারি শিল্প থেকে সরে আসতে যে অর্থনৈতিক সংস্কার প্রয়োজন, তার গতি বেশ ধীর৷ তাছাড়া দেশটির মোট জ্বালানির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ আসে কয়লা থেকে৷ এক্ষেত্রে গত কয়েক বছরে প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে – যদিও এখন তা স্থিতাবস্থায় আছে৷
বেইজিংয়ে পরিবর্তন আসছে৷ সেখানে ধোঁয়া একটি বড় সমস্যা৷ শহরের চারটি কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের সবকটিই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷
মা জুম চীনের একজন প্রখ্যাত পরিবেশবাদী কর্মী৷ তাঁর কাজের কারণে মানুষের চিন্তাধারায় বিশাল পরিবর্তন এসেছে৷ তিনি বলেন, ‘‘বছর দশেক আগে আপনি যদি কোনো পথচারীকে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞেস করতেন তাহলে তিনি বলতেন যে, উন্নয়ন আগে৷ কিন্তু এখন যদি তাদের কাছে জানতে চান তাহলে বেশিরভাগই হয় বলবে, ‘‘আমরা বিশুদ্ধ পানি, বাতাস ও নিরাপদ খাবার চাই৷''
এমন সব দাবির কারণে সরকার চাপে রয়েছে৷ বেইজিংয়ের রাস্তায় এখন হাজার হাজার শেয়ারে চালানো যায় এমন সাইকেল দেখা যায়৷ অনেক কারখানাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ তবে ধোঁয়া এখনও একটি সমস্যা, বিশেষ করে যখন ভুল দিক থেকে বাতাস প্রবাহিত হয়৷
জ্বালানির যত উৎস
লন্ডন ভিত্তিক ‘ওয়ার্ল্ড এনার্জি কাউন্সিল’ বা ডাব্লিউইসি-এর ‘বিশ্ব জ্বালানি সম্পদ ২০১৬’ প্রতিবেদনে কোন জ্বালানি কী পরিমাণ ব্যবহত হচ্ছে তার হিসেব প্রকাশ করা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
১. তেল
লন্ডন ভিত্তিক ‘ওয়ার্ল্ড এনার্জি কাউন্সিল’ এর ‘বিশ্ব জ্বালানি সম্পদ ২০১৬’ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হওয়া জ্বালানি হচ্ছে তেল৷ মোট ব্যবহৃত জ্বালানির প্রায় ৩২.৯ শতাংশই হচ্ছে তেল৷ আর তেল উৎপাদনে শীর্ষ তিন দেশ হচ্ছে সৌদি আরব (বছরে ৫৬৯ মিলিয়ন টন), যুক্তরাষ্ট্র (বছরে ৫৬৭ মিলিয়ন টন) ও রাশিয়া (বছরে ৫৪১ মিলিয়ন টন)৷
ছবি: picture-alliance/dpa
২. কয়লা
২৯ শতাংশ নিয়ে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হওয়া জ্বালানির তালিকায় তেলের পরেই আছে কয়লা৷ তবে নব্বই দশকের পর ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো কয়লা উৎপাদন কমেছে৷ বিশ্বের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রায় ৪০ ভাগ কাজে কয়লা ব্যবহৃত হয়৷ শীর্ষ তিন উৎপাদনকারী দেশ হচ্ছে চীন (বছরে ২ দশমিক ৬২ হাজার এমটিওই), যুক্তরাষ্ট্র (৫৬৯ এমটিওই) ও ভারত (৪৭৪ এমটিওই)৷ উল্লেখ্য, এমটিওই মানে হচ্ছে এক মিলিয়ন মেট্রিক টন অফ ওয়েল ইকুইভ্যালেন্ট৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Roland Weihrauch
৩. গ্যাস
তিন নম্বরে আছে গ্যাস (প্রায় ২৪ শতাংশ)৷ আর বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত জ্বালানির তালিকায় কয়লার (৪০ শতাংশ) পরে আছে গ্যাস (২২ শতাংশ)৷ শীর্য তিন গ্যাস উৎপাদনকারী দেশ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র (বছরে ৬৯১ এমটিওই), রাশিয়া (বছরে ৫১৬ এমটিওই) ও ইরান (বছরে ১৭৩ এমটিওই)৷
ছবি: Imago
৪. পানিবিদ্যুৎ
নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিভিন্ন উৎসের মধ্যে পানি বা জলবিদ্যুতের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি৷ ২০১৫ সালে উৎপাদিত মোট নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের প্রায় ৭১ শতাংশই এসেছে জলবিদ্যুৎ থেকে৷ আর বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হওয়া জ্বালানির তালিকায় তেল (৩৩ শতাংশ), কয়লা (২৯ শতাংশ) ও গ্যাসের (২৪ শতাংশ) পরেই আছে পানিবিদ্যুৎ (প্রায় ৭ শতাংশ)৷ শীর্ষ তিন উৎপাদনকারী চীন (বছরে ৯৬.৯ এমটিওই), ব্রাজিল (৩২.৯ এমটিওই) ও ক্যানাডা (৩২.৩ এমটিওই)৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Jourdier
৫. পরমাণুশক্তি
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হওয়া জ্বালানির তালিকায় পাঁচ নম্বরে আছে এটি (৪ দশমিক ৪ শতাংশ)৷ অর্থাৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানির একটি উৎস পানিবিদ্যুতের (প্রায় ৭ শতাংশ) চেয়েও এর ব্যবহার কম৷ ইউরেনিয়াম উৎপাদনে শীর্ষ তিন দেশ হচ্ছে কাজাখস্তান (বছরে ২২ দশমিক ৮ হাজার টন), ক্যানাডা (৯ দশমিক ১৪ হাজার টন) ও অস্ট্রেলিয়া (৪ দশমিক ৯৮ হাজার টন)৷
ছবি: Kerry Skyring
৬. বায়ুশক্তি
বিশ্বের মোট বিদ্যুতের ৭ শতাংশ আসে বায়ুবিদ্যুৎ থেকে৷ ২০১৫ সালে ৪৩২ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছিল৷ এর মধ্যে ৪২০ গিগাওয়াট অনশোর (ভূমি) ও ১২ গিগাওয়াট অফশোর, অর্থাৎ সাগরে বসানো টারবাইনের মাধ্যমে উৎপাদিত হয়৷ বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হওয়া জ্বালানির তালিকায় ছয়ে আছে এটি (১.৪৪ শতাংশ)৷ শীর্ষ তিন বায়ুশক্তি উৎপাদনকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র (বছরে ১৫.৮ এমটিওই), চীন (১৩.৬ এমটিওই) এবং জার্মানি (৪.৯৩ এমটিওই)৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Vaughn
৭. সৌরশক্তি
২০১৫ সালে সারা বিশ্বে মোট সৌরশক্তি উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ২২৭ গিগাওয়াটে৷ ফলে মোট বিদ্যুতের এক শতাংশ এসেছিল সৌরশক্তি থেকে৷ সৌরশক্তি উৎপাদনে শীর্ষ তিন দেশ চীন (৪৩ দশমিক ১ গিগাওয়াট), জার্মানি (৩৯ দশমিক ৬ গিগাওয়াট) ও জাপান (৩৩ দশমিক ৩ গিগাওয়াট)৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Gupta
৮. অন্যান্য উৎস
জিওথার্মাল, ই-স্টোরেজ, মেরিন এনার্জি, বর্জ্য থেকে শক্তি, বায়োএনার্জি (যেমন বায়োমাস) ইত্যাদি সহ আরও অনেক উৎস দিয়েও জ্বালানি উৎপাদন করা হয়ে থাকে৷ ছবিতে আইসল্যান্ডের একটি জিওথার্মাল পাওয়ার স্টেশন দেখা যাচ্ছে৷ ডাব্লিউইসি-র প্রতিবেদনটি পড়তে ক্লিক করুন উপরের ‘+’ চিহ্নে৷
ছবি: picture-alliance/blickwinkel/McPHOTO
8 ছবি1 | 8
বিশ্বে যত কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গত হয় তার ২৮ শতাংশের জন্য দায়ী চীন৷ ১৬ শতাংশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আছে দ্বিতীয় স্থানে৷
বাতাস ও পানি দূষণ পর্যবেক্ষণকারী হাজার হাজার কেন্দ্রের কাজ দেখার অনুমতি আছে মা জুমের৷ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনকারী তিন লক্ষ কোম্পানির তথ্য আছে তাঁর কাছে৷ এ কাজে সরকারের সমর্থন আছে৷ কোন কোম্পানি আইন ভঙ্গ করেছে অনলাইনে সেটা দেখা যায়৷ কাউকে কনট্র্যাক্ট দেয়ার আগে অনেক কোম্পানি মা জুমের তথ্য দেখে নেয়৷ মা জুম বলে, ‘‘অ্যাপল, আডিডাস, ওয়ালমার্টের মতো কোম্পানি স্থানীয় সরবরাহকারী নিয়োগের আগে আমাদের তালিকা দেখে নেয় এবং আইন ভঙ্গকারীদের শুদ্ধ হতে চাপ দেয়৷''
একটি অ্যাপ ব্যবহার করে যে কেউ পরিবেশের ক্ষতির ছবি আপলোড করতে পারেন৷ সবাই সেটি দেখতে পারেন৷ আর স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে সেগুলো পাঠিয়ে দেয়া হয়৷ এটি একটি কার্যকরি টুল৷ জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানির ব্যবহার থেকে সরে আসায় চীনের প্রশংসা করলেও এখনও দেশটির জ্বালানি নীতির সমালোচনা করছে গ্রিনপিস৷ দেশে বাজার সংকুচিত হওয়ায় সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে৷
চীনের গ্রিনপিসের কর্মকর্তা লাউরি মিলিভিরতা বলেন, ‘‘ভিয়েতনাম থেকে শুরু করে আফ্রিকা, ইন্দোনেশিয়া – এ সব দেশে কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রসারে ভূমিকা রাখছে চীনা কোম্পানি ও ব্যাংকগুলো৷ এটি বেশ ক্ষতিকারক একটি বিষয়৷''
মারিও স্মিট/জেডএইচ
প্রতিবেদন সম্পর্কে কিছু বলার থাকলে লিখুন নীচে, মন্তব্যের ঘরে৷