1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত এক প্রতীকের ১২৫ বছর

২৮ অক্টোবর ২০১১

নিউ ইয়র্কের ‘স্ট্যাচু অফ লিবার্টি'ই হল এই প্রতীক৷ আজ শুক্রবার এই বিশ্বখ্যাত এই মূর্তির ১২৫ তম জন্মদিন পালন করছে মহানগরী নিউ ইয়র্ক৷

In this June 2, 2009 photo, the Statue of Liberty is seen in New York harbor. The crown is set to open July 4 after being closed since shortly after the Sept. 11, 2001, terrorist attacks. (AP Photo/Richard Drew)
স্ট্যাচু অফ লিবার্টিছবি: AP

বলা হয়ে থাকে দুনিয়ার সব প্রতীকেরই জননী হলো এই ‘স্ট্যাচু অফ লিবার্টি'৷ এ ছিল মুক্ত অ্যামেরিকার জনগণের প্রতি ফরাসি জনগণের উপহার৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘লেডি লিবার্টি' অর্থাৎ আলোর মশালধারী এই নারীমূর্তি মুক্তি আর গণতন্ত্রের প্রতীক  - লক্ষ লক্ষ অভিবাসী মানুষের মনে উন্নততর জীবনের আশা লালন করে এই মূর্তি৷

ফরাসি রাজনীতিক এদুয়ার ল্যফেব্র দ্য লাবুলায়ে'র মাথা থেকেই আসে এই কিংবদন্তীসম উপহারের ধারণা৷ ফ্রান্সে তখন সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়নের স্বৈরাচারী শাসন৷ লাবুলায়ে ছিলেন অ্যামেরিকার মুক্তি আর স্বাধীনতার আদর্শের প্রবল উৎসাহী সমর্থক৷ তাঁর মনে হয়েছিল, অ্যামেরিকার শততম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মুক্তির প্রতীক হিসেবে এরকম একটি মূর্তি যদি ফরাসি জনগণের তরফ থেকে দেয়া যায় তাহলে স্বৈরাচারী নেপোলিয়ন তা থেকে একটা বার্তা পেয়ে যাবেন৷

মূল মূর্তির অনুকরণে জাপানের এই মূর্তি ভূমিকম্প সত্ত্বেও দাঁড়িয়ে রয়েছেছবি: AP

লাবুলায়ে তাঁর প্রস্তাব তুলে ধরেন ১৮৬৫ সালে৷ দুই দেশের জনগণের এক যৌথ প্রকল্প হিসেবেই তিনি এটাকে তুলে ধরেন৷ ঠিক হয় এই উপহার দেয়া হবে ১৮৭৬ সালের চৌঠা জুলাই৷ তার তখনও ১১ বছর বাকি৷ ভাস্কর ফ্রেদেরিক-অগুস্ত  বার্তল্দি সঙ্গে সঙ্গে কাজে লেগে পড়েন৷ তিনি সুয়েজ খালের উদ্বোধন উপলক্ষে একটি নারীর অবয়বে বিশাল এক বাতিঘরও তৈরি করতে চেয়েছিলেন৷ কিন্তু সে-প্রকল্প আর বাস্তবায়ন করা যায় নি৷ ভাস্কর বার্তল্দি তাঁর পরিকল্পনা পাল্টান৷ ‘মিসর আলো বয়ে আনছে এশিয়ায়' - এরকম এক কল্পিত মূর্তির রূপান্তর ঘটান তিনি৷ বেরিয়ে আসে ‘‘লিবার্টি আলোকপ্রাপ্ত করে তুলছে বিশ্ব'৷

লিবার্টি নারীমূর্তির জন্য বার্তল্দি মডেল হিসেবে ব্যবহার করেন তাঁর মায়ের মুখ৷ এই বিশাল মূর্তির জন্য বিপুল অর্থ খরচ করতে হয়৷ ফরাসিরা চাঁদা সংগ্রহ করে৷ এই পরিকল্পিত মূর্তির নকল বিক্রি করা হয়৷ অপেরা রচয়িতা শার্ল গুনদ টাকা তুলতে রচনা করেন সংগীত৷ ইতোমধ্যে বার্তল্দি মূর্তির জন্য উপযুক্ত জায়গাও খুঁজে পান৷ নিউ ইয়র্ক পোতাশ্রয়ের ঠিক প্রবেশমুখে - আজকের লিবার্টি আইল্যান্ড৷ মূর্তির কিছু অংশ বিভিন্ন প্রদর্শনীতে দেখানো হয়৷ তারপর জাহাজে চাপিয়ে মূর্তি পাঠানো হয় অ্যামেরিকায়৷

বার্লিনে বিক্ষোভকারীদের হাতে মূর্তির প্রতীকছবি: AP

প্রথম দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই লিবার্টি মূর্তি নিয়ে উদ্দীপনাটা ছিল বেশ চাপা৷ স্বাধীনতা দিবসের উপহার হলেও তা বসানোর খরচ যোগাতে হয়েছিল অ্যামেরিকানদেরই৷ প্রকাশক জোসেফ পুলিৎজার'এর আবেদনে সাড়া দেয় মানুষ৷ ওঠে ১ লাখ ২ হাজার ডলার৷ অর্থের ৮০ শতাংশই আসে এক ডলার করে দেয়া চাঁদা থেকে৷ আয়ওয়া রাজ্যের এক দল শিশু পাঠায় ১ ডলার ৩৫ সেন্ট৷

শেষ পর্যন্ত মূর্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসে পৌঁছয় - তবে দশ বছর পর৷ ১৮৮৬ সালের ২৮শে অক্টোবর ‘স্ট্যাচু অফ লিবার্টি'কে স্বাগত জানানো হয় প্যারেড ক'রে৷ শুধুমাত্র আমন্ত্রিত অতিথিরা আইল্যান্ডে উপস্থিত ছিলেন৷ নারী অতিথি ছিলেন মাত্র দু'জন৷ নারী অধিকারবাদীরা নৌকায় চেপে ঘিরে রাখেন ঐ দ্বীপ৷ জানান অশ্রুতপূর্ব এক দাবি - ভোটের অধিকারের দাবি৷

‘স্ট্যাচু অফ লিবার্টি' আজ প্রতীক হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত৷ লাইসেন্স প্লেটে, মুদ্রার ওপর, ডাকটিকিটে মুক্তির প্রতীক এই নারীমূর্তি উপস্থিত৷ তা হয়ে উঠেছে যেন পপ সংস্কৃতির এক বাহন৷

প্রতিবেদন: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ