২০১৭ সালে বিশ্বজুড়ে ৬৫ জন গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন৷ এঁদের মধ্যে ৫০ জনই পেশাদার সাংবাদিক৷ তবে গত ১৪ বছরের মধ্যে এই সংখ্যাটা কম বলে জানিয়েছে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স আরএসএফ৷
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আরএসএফ৷ নিহতের সংখ্যা কম হওয়ার পেছনে কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছর ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো এড়িয়ে চলেছেন সাংবাদিকরা, অর্থাৎ তারা এমন সব স্থানে রিপোর্টিং এ যাননি, যেখানে প্রাণ হারানোর ভয় রয়েছে৷
আরএসএফ বলছে, এ বছর সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ ছিল সিরিয়া৷ যেখানে ১২ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছে৷ মেস্কিকোতে হত্যা করা হয়েছে,১১ জনকে৷ এর মধ্যে মেক্সিকোর প্রখ্যাত সাংবাদিক হাভিয়ের ভাল্দেজ, যিনি সেখানকার মাদক চোরাচোলান নিয়ে প্রতিবেদন করতে গিয়ে আততায়ীদের গুলিতে প্রাণ হারান৷ তিনি সংবাদ সংস্থা এএফপি-র হয়ে কাজ করছিলেন৷
সাংবাদিকদের জন্য এশিয়ায় এ বছর সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ ছিল ফিলিপাইন্স৷ গত বছর সেখানে পাঁচজন সাংবাদিককে গুলি করা হয়৷ যাঁদের মধ্যে চারজন এ বছর মারা গেছেন৷ ৬৫ জন গণমাধ্যমকর্মীর মধ্যে ৩৯ জন দায়িত্বপালন করার সময় প্রাণ হারান৷ এঁদের কেউ মারা গেছেন গুলিতে বা আত্মঘাতী হামলায়৷
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পেশাদার সাংবাদিকদের জন্য এ বছর ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় কারাগার' হয়ে উঠেছে তুরস্ক৷ এ বছর ৪২ জন সাংবাদিক এবং একজন গণমাধ্যমকর্মীকে আটক করেছে তারা৷ সরকারের সমালোচনা করায় এদের বেশিরভাগকে কারাভোগ করতে হচ্ছে৷ অন্যদিকে, চীনে ব্লগে লেখালেখি করার জন্য ৫২ জন সাংবাদিক ও ব্লগারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷
এদিকে, আট মাস কারাবন্দি থাকার পর সোমবার তুরস্কের কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছেন জার্মান সাংবাদিক মেজালে টোলু৷ জঙ্গি সংগঠনের সদস্য হওয়ার অভিযোগ এনে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল গত বছরের জুলাইতে৷ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল টোলুকে সাধুবাদ জানিয়েছেন৷
এপিবি/ডিজি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)
যে দেশের গণমাধ্যমের কোনো স্বাধীনতা নেই
না দেশটা বাংলাদেশ নয়৷ তবে বাংলাদেশের অবস্থা যে খুব একটা সুবিধাজনক তাও নয়৷ চলুন দেখে নেই, প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্স অনুযায়ী কোন দেশের গণমাধ্যম কতটা স্বাধীন৷
ছবি: DW/D. Olmos
ইরিত্রিয়া
রিপোটার্স উইদাউট বর্ডার্সের প্রকাশিত ২০১৬ প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্স অনুযায়ী, যে দেশটিতে গণমাধ্যমের কোনোই স্বাধীনতা নেই, সেটি হচ্ছে ইরিত্রিয়া৷ গত ২০ বছরের বেশি সময় ধরে স্বৈরশাসকের কবলে থাকে দেশটির কমপক্ষে ১৫ সাংবাদিক এই মুহূর্তে জেলে আছেন৷ প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে ১৮০টি দেশের মধ্যে সবার নীচে আছে ইরিত্রিয়া৷
ছবি: Getty Images/AFP/P. Lopez
উত্তর কোরিয়া
ইরিত্রিয়ার পরই নীচের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে উত্তর কোরিয়া৷ কিম জুন-উনের নেতৃত্বাধীন দেশটি গত ১৫ বছর ধরেই প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সের একেবারে নীচের দিকে অবস্থান করছে৷ দেশটিতে বিদেশি সাংবাদিকদের ভিসা তেমন দেয়া হয় না, যদিও বা কেউ ভিসা পান, তাঁকে রাখা হয় কড়া নজরদারিতে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Yonhap/Kcna
তুর্কমেনিস্তান
এই দেশটিকে বলা হয় পৃথিবীর অন্যতম তথ্য কৃষ্ণ গহ্বর৷ স্বাধীনভাবে কোনো সাংবাদিক কাজ করতে চাইলে তাঁর জন্য মোটামুটি কারাভোগ এবং নির্যাতন নিশ্চিত দেশটিতে৷ ইনডেক্সে তাদের অবস্থান নীচের দিক থেকে তৃতীয়৷
ছবি: Stringer/AFP/Getty Images
ফিনল্যান্ড
এবার যাওয়া যাক, তালিকার উপরের দিকের অবস্থা৷ গত পাঁচবছর ধরেই প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সের শীর্ষে অবস্থান করছে ফিনল্যান্ড৷ দেশটির গণমাধ্যম সবচেয়ে বেশি স্বাধীনতা উপভোগ করে৷ তবে সেদেশের অধিকাংশ পত্রিকা দু’টি মিডিয়া গ্রুপের মালিকানায় রয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/van Weel
নেদারল্যান্ডস
প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে গত একবছরে দু’ধাপ এগিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে চলে এসেছে নেদারল্যান্ডস৷ দেশটির গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আইনিভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে৷
ছবি: Imago/SylviaxLederer
বাংলাদেশ
বাংলাদেশে গতবছর চারজন ব্লগার এবং প্রকাশক খুন হওয়ার পরও প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে কিঞ্চিৎ উন্নতি ঘটেছে৷ আগের বছরের তুলনায় দুই ধাপ এগিয়ে দেশটির অবস্থান এখন ১৪৪তম, তবে গ্লোবাল স্কোর কমেছে মাইনাস ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ৷