বিশ্বে খাদ্যের দাম দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন: এফএও
৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
২০২১ সালের মার্চের পর জাতিসংঘের খাদ্য সূচক সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে৷ কিন্তু ভারতের রপ্তানি বন্ধের কারণে চালের দাম রেকর্ড বেড়েছে৷
বিজ্ঞাপন
বিশ্বের প্রধান খাদ্যপণ্যগুলোর দাম গত দুই বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে এখন সর্বনিম্ন৷ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা-এফএও এর আগস্টের সূচক এমন তথ্যই দিচ্ছে৷ সংস্থাটির খাদ্য মূল্যসূচক আগস্টে ১২১ দশমিক চার-এ নেমে এসেছে, যা গত মাসে ছিল ১২৪ পয়েন্ট৷ ২০২১ সালে মার্চের পর এই সূচক এতটা আর কমেনি৷
এর আগে ২০২২ সালের মার্চে খাদ্য সূচক সর্বকালের রেকর্ড ছুঁয়েছিলো৷ সেই তুলনায় আগস্টে সার্বিক সূচক ২৪ শতাংশ কমেছে৷ দুগ্ধজাত পণ্য, তেলবীজ, মাংস, দানাজাতীয় খাদ্যপণ্যসহ প্রায় সব ধরনের খাবারের দামই কমেছে৷ ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে শস্যচুক্তি বাতিল হওয়ার পরও গম বা ভুট্টার বাজারে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি৷ ব্রাজিলের উদ্বৃত্ত উৎপাদন আর যুক্তরাষ্ট্রে ফসল তোলার সময় ঘনিয়ে আসায় এই দুই খাদ্যের দামই বরং কমেছে৷ ভোজ্য তেলের দাম কমেছে তিন দশমিক এক শতাংশ৷ আর দুগ্ধজাত পণ্যের দাম চার শতাংশ কমেছে৷
তবে ব্যতিক্রম চালের বাজার৷ ভারতের রপ্তানি বন্ধের ঘোষণায় বিশ্ববাজারে এর দাম ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে৷ জুলাইর তুলনায় আগস্টে চালের দাম ১০ শতাংশ বেড়েছে৷ এক দশমিক তিন শতাংশ দাম বেড়েছে চিনির৷ আগের বছরের তুলনায় চিনির দাম বৃদ্ধির হার ৩৪ শতাংশে ঠেকেছে৷
বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান
ব্রিটিশ সাপ্তাহিক ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ প্রতিবছর বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তা সূচক বের করে৷ ছবিঘরে ২০২২ সালের সূচকের তথ্য থাকছে৷
ছবি: Rajib Paul/DW
বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তা সূচক
ব্রিটিশ সাপ্তাহিক ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ প্রতিবছর বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তা সূচক বের করে৷ ২০২২ সালের সূচকে ১১৩টি দেশের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে৷ চারটি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সূচকটি তৈরি করা হয়৷ এগুলো হচ্ছে খাবার কেনার ক্ষমতা; খাবারের প্রাপ্যতা; মান ও নিরাপত্তা; এবং একটি দেশের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং তা মোকাবিলা করা ক্ষমতা৷
ছবি: Rajib Paul/DW
বাংলাদেশের অবস্থান ৮০
বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তা সূচক ২০২২-এ ১১৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৮০৷ দক্ষিণ এশিয়ায় এই সূচকে সবার আগে আছে ভারত (৬৮)৷ তারপর নেপাল (৭৪), শ্রীলঙ্কা (৭৯) ও পাকিস্তান (৮৪)৷
ছবি: Rajib Paul/DW
খাদ্য নিরাপত্তা আইনে বাংলাদেশের অবস্থান
সূচকে চারটি বিবেচ্য বিষয়ের একটি খাদ্যের মান ও নিরাপত্তা৷ এই বিভাগে ১১৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭১৷ একটি দেশে খাদ্য নিরাপত্তা আইন আছে কিনা, এবং সেটি গত ৫-১০ বছরে হালনাগাদ করা হয়েছে কিনা তারও স্কোর দিয়ে থাকে ইকোনমিস্ট৷ এতে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের স্কোর ৫০, যা বৈশ্বিক গড়ের (৭০.৮) চেয়ে কম৷
ছবি: Rajib Paul/DW
ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও নেপালের অবস্থান
বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তা সূচকের মান ও নিরাপত্তা বিভাগেও দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত এগিয়ে আছে (৬৭)৷ এরপরেই আছে বাংলাদেশ (৭১), তারপর নেপাল (৭২), শ্রীলঙ্কা (৮১) ও পাকিস্তান (৯৭)৷ এর মধ্যে পাকিস্তান কোনো খাদ্য নিরাপত্তা আইন নেই বলে জানিয়েছে দ্য ইকোনমিস্ট৷
ছবি: Rajib Paul/DW
বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা আইন
২০১৩ সালে নিরাপদ খাদ্য আইন পাস হয়৷ এরপর ২০১৫ সালে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠিত হয়৷ তবে পুরোদমে কাজ শুরু করে ২০২০ সালে৷
ছবি: Rajib Paul/DW
যেমন চলছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ
জনবল সংখ্যা ১৫০ জনের মতো৷ উপজেলা তো দূরের কথা সব জেলায়ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের অফিস নেই৷ সংস্থার সচিব আব্দুন নাসের খান বলেন, ‘‘শুধু হোটেল নয়, সবধরনের খাদ্যই আমরা দেখি৷ তবে জেলা পর্যায় পর্যন্ত আমরা যেতে পেরেছি৷ তাও জেলায় একজন কর্মকর্তা ও একজন অফিস সহায়ক নিয়ে কাজ করতে হয়৷ আমরা অন্যান্য দপ্তরের সহায়তা নিই৷ সেটাও সবসময় পাওয়া যায় না৷’’