মিস্টার ইউটিউব
১৩ আগস্ট ২০১৩![Kenya's Julius Yego competes in the men's javelin throw final at the athletics event of the London 2012 Olympic Games on August 11, 2012 in London. AFP PHOTO / FRANCK FIFE (Photo credit should read FRANCK FIFE/AFP/GettyImages)](https://static.dw.com/image/17013223_800.webp)
দলের সতীর্থদের কাছে ইয়েগো ‘‘মিস্টার ইউটিউব'' নামেই পরিচিত৷ বল্লম ছোঁড়ার কাজটা যে মাসাইদের জানা নেই, এমন নয় – তারা মাঠ-ঘাট পেরিয়ে, সিংহ বা চিতাবাঘের থাবা এড়িয়ে মাইলের পর মাইল দৌড়তে অভ্যস্ত৷ কিন্তু জ্যাভেলিন ছোঁড়ার যে স্পোর্টটি আছে - বলতে কি, গ্রিক আমলের আদত অলিম্পিক থেকেই – তার সঙ্গে কেনিয়ার স্পোর্ট জগতের বিশেষ সম্পর্ক নেই৷ কাজেই ইয়েগো স্বদেশে ট্রেনার পর্যন্ত খুঁজে পাননি৷ কুছ পরোয়া নেই: ইন্টারনেট আছে কি করতে? ইউটিউব আছে কি করতে?
ইউটিউব দেখে অলিম্পিক কি বিশ্ব অ্যাথলেটিক চ্যাম্পিয়নশিপসের কোনো ডিসিপ্লিনে দড় হওয়াটা যারা অসম্ভব বলে মনে করেন, তাদের বলে রাখা দরকার, ইয়েগো গতবছর লন্ডন অলিম্পিক্সে ফাইনাল রাউন্ড অবধি পৌঁছেছিলেন! এবং সেটা নিশ্চয় শুধু ইউটিউবের কৃতিত্ব নয়৷ মস্কোতেও যে ইয়েগোর একেবারে কোনো চান্স নেই, সেটা আর যেই ভাবুক, ইয়েগো ভাবেন না৷ মস্কোয় কেনিয়া থেকে যে দল গেছে, তা দৌড়বীরে ভরপুর, এবং তাদের অর্ধেকেরই কোনো না কোনো মেডেল জেতার সম্ভাবনা আছে৷ তার মধ্যে এক ট্রেনারবিহীন, ইউটিউব দেখে বল্লম ছুঁড়তে শেখা জ্যাভেলিন থ্রোয়ার যে কি করছে, তা নিয়ে হাসিঠাট্টা হয় বৈকি৷ ‘ঐ দেখো, যাচ্ছে মিস্টার ইউটিউব!'
ইয়েগো ব্যাপারটাকে সহজভাবেই নেন: ‘‘এর মানে হল, আমাকে বিশেষ প্রচেষ্টা করতে হবে৷ আমার তো কেউ নেই, যে আমাকে সাহায্য করবে৷ কিন্তু সেটাই আমার কাছে প্রেরণা, আরো একটু কষ্ট করার৷'' কিন্তু ইন্টারনেট থেকে জ্যাভেলিন থ্রো'এর টেকনিক শেখাটা কি সম্ভব? ইয়েগো বলেন: ‘‘ইউটিউবে আমি প্রতিবারেই কিছু না কিছু নতুন জিনিষ খুঁজে পাই৷ শুধুমাত্র গতবছর কিছুদিনের জন্য আমার একজন ট্রেনার ছিলেন – ফিনল্যান্ডে৷ তিনি আমাকে যা শিখিয়েছিলেন, তা আমার আজও মনে আছে৷''
মাসাই যোদ্ধারা লম্বা লম্বা পা ফেলে সেরেঙ্গেটির মুক্ত প্রান্তর পার হয়ে যাচ্ছে, কারো মুখে কথা নেই, হাতে ধরা বল্লমগুলো সেই তালে-তালে উঠছে-নামছে... এ সব দৃশ্যের রোমাঞ্চের সঙ্গে জুলিয়াস ইয়েগো-র জ্যাভেলিন ছোড়ার কতোটা সাদৃশ্য আছে, তা বলা শক্ত৷ তবে ইউটিউবের ভিডিও দেখে যে মানুষ ৮২ মিটার জ্যাভেলিন ছুঁড়তে পারেন, তাকে অবজ্ঞা করার ক্ষমতা বড় বড় দৌড়বীরদেরও নেই৷ তাই গোটা কেনিয়া দল ইয়েগোর পিছনে৷ এমনকি ইয়েগো-কেই দলের ক্যাপ্টেন করা হয়েছে৷ ইয়েগো বলেন:
‘‘আমার নিজেকে একা মনে হয় না৷ আমার দৌড়বীর সতীর্থেরা আমাকে সবসময়েই উৎসাহ দেন৷''
ইয়েগো মস্কোয় কী করবেন, সেটা তাঁর খুব ভালোই জানা আছে৷ ৮৫ মিটার জ্যাভেলিন ছুড়বেন৷ বাকিটা হবে ইতিহাস৷