বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনকে ‘বিফল’ বলে চিহ্নিত করলো ইইউ
২৩ ডিসেম্বর ২০০৯জার্মান পরিবেশমন্ত্রী নরবার্ট ব়্যটগেন-এর কথায়, ‘‘যেভাবেই হোক আমাদের ২০২০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমনের পরিমাণ ৪০ শতাংশ কমিয়ে আনতে হবে৷'' আর তাই, জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আরো বড় ভূমিকা নেওয়ার জন্যও আহ্বান করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ জানিয়েছেন সুইডেনের পরিবেশমন্ত্রী আন্দ্রেয়াস কার্লগ্রেন এবং স্পেনের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী টেরেসা রিবেরা রড্রিগজ৷ ইইউ জানিয়েছে, কোপেনহেগেনের বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে উষ্ণায়ন প্রতিরোধের প্রত্যাশিত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে৷ সম্মেলনটি ব্যর্থ হয়েছে একটি বাধ্যতামূলক চুক্তি পেশ করতে৷ অর্থাৎ, প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি ১৯৪টি জাতির এই সম্মেলনটি৷
পর্যবেক্ষকদের মতে, ২৫টি দেশ বিশ্বে উষ্ণায়নের মাত্রা দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখার ব্যাপারে যে সমঝোতায় আসে, তা খুবই হতাশাব্যঞ্জক - বিশেষ করে এশিয়ার একাধিক দেশের কাছে৷
বর্তমানে ধনী আর দরিদ্র, উত্তর আর দক্ষিণ, অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা এবং মৃত্যু বরণের মাঝে ফারাকটা ক্রমশই আরও বেশি গভীর হয়ে উঠছে৷ জলবায়ুর পরিবর্তন নিয়ে কোপেনহেগেন-এ আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে এই ফারাকটা যেন গোটা বিশ্বসমাজের শরীরে এক গভীর ক্ষতের আকার নিয়েছে৷ আর এই ক্ষতস্থানের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে মানুষের লোভ, অন্ত:সারশূন্যতা, ভয়ভীতি আর অবিশ্বাসের ছবি৷ এমনকি, চুক্তির খসড়া বয়ানে ভারতকেও আমল দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন বিজেপি নেতা অরুণ জেটলি৷ তাঁর কথায়, ‘‘এটা গরিব ও উন্নয়নমুখী দেশগুলির প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা৷''
এদিকে, কোপেনহেগেনে জলবায়ু চুক্তির প্রচেষ্টা চীনের কারণেই ভন্ডুল হয়েছে বলে ব্রিটিশ পরিবেশমন্ত্রী এড মিলিব্যান্ড যে অভিযোগ করেছিলেন, চীন তার ক্রুদ্ধ প্রতিবাদ জানিয়েছে৷ দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মুখপাত্র জিয়াং ইয়ু বলেছেন, ‘‘পশ্চিমা দেশগুলি জলবায়ু পরিবর্তনে নিজেদের দায়িত্ব এড়াতে এমন অভিযোগ করছে৷''
উল্লেখ্য, কিয়োটো চুক্তির অধীনে কোপেনহেগেন আলোচনা চলবে আগামী বছরের মেক্সিকো সম্মেলন পর্যন্ত৷ এছাড়া, জানুয়ারী মাসে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে আরো একটি শক্তিশালী চুক্তির ব্যাপারে সমবেত হতে চলেছে ইইউ-র ২৭টি সদস্যদেশের প্রতিনিধিরা৷ ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট হোসে মানুয়েল বারোসোর কথায়, ‘‘কোপেনহেগেন থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে৷ কারণ, এবার আলাপ-আলোচনার একটি নতুন অধ্যায়ের সূত্রপাত হলো৷''
প্রতিবেদক : দেবারতি গুহ, সম্পাদনা : হোসাইন আব্দুল হাই