পশ্চিমে অ্যামেরিকা থেকে পূর্বে জাপান – সর্বত্র ধস নেমেছে শেয়ার বাজারে৷ বাদ যায়নি ভারতীয়শেয়ার বাজারও৷ সাধারণ আমানতকারীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ৷
বিজ্ঞাপন
২০১১ সালের পর এত বড় ধস দেখেনি ওয়াল স্ট্রিট৷ শেয়ার বাজার নিয়ে চিন্তার ভাঁজ বিশ্বের সর্বত্র৷ বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, একদিনে মার্কিন শেয়ার বাজার ১৬০০ পয়েন্ট নেমে গিয়েছে৷ যা শুধু চিন্তার নয়, রীতিমতো আতঙ্কের৷
বিশ্ব জুড়ে শেয়ারের ব্যাপারীরা ওয়াল স্ট্রিটের শেয়ার পয়েন্টের দিকে তাকিয়ে থাকেন৷ কারণ, অ্যামেরিকার শেয়ারের উপর নির্ভর করে বিশ্বের প্রায় সমস্ত রাষ্ট্রের শেয়ার সূচক৷ ফলে ওয়াল স্ট্রিটে ধস নামার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই জাপান শেয়ার বাজারেও লাল সংকেত জারি হয়৷ সেখানকার শেয়ার সূচক ‘নিক্কেই' নেমে যায় বছরের সবচেয়ে কম পয়েন্টে৷ সূত্রের খবর দিনের শেষে সেখানকার শেয়ার সূচক ৪ দশমিক ৬ শতাংশ কমে গিয়েছে৷
শুধু অ্যামেরিকা বা জাপান নয়, শেয়ার বাজারে ধস নেমেছে এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলি এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াতেও৷ অস্ট্রেলিয়ার শেয়ার সূচক কমে গিয়েছে ৩ শতাংশ৷ দক্ষিণ কোরিয়ায় নেমেছে ২ শতাংশ৷ গত ১০০ দিনের মধ্যে এত বড় ধস ঘটেনি দক্ষিণ কোরিয়ায়৷
উপমহাদেশে ভারতের শেয়ার বাজার গুরুত্বপূর্ণ৷ বস্তুত, গত কয়েক বছরে ভারতের শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে৷ বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ওয়াল স্ট্রিট এবং নিকেইয়ের ধসের সরাসরি প্রভাব পড়েছে ভারতের শেয়ার সূচকেও৷ যার ফলে প্রায় ৪ দশমিক ৯৫ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে একদিনেই৷ ভারতের শেয়ার সূচক সেনসেক্স এবং নিফটি দিনের শেষে নেমে লাল সংকেতের নীচে গিয়ে পৌঁছেছে৷ মাথায় হাত বিনিয়োগকারীদের৷
সোমবারের এই বিপুল ধস ভারতের বহু বিনিয়োগকারীকেই ২০০৮ সালের কথা মনে পরিয়ে দিচ্ছে৷ বিশ্ব জুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে সে বছরও মার্কিন শেয়ার সূচক ধসে গিয়েছিল৷ ভারতের বহু বিনিয়োগকারী সে সময় বিপুল পরিমাণ আর্থিক মন্দার সম্মুখিন হয়েছিলেন৷
সুমেরু সাগরেও চীনের বাণিজ্য!
গোটা বিশ্বের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে নতুন পথ খুঁজছে চীন৷ এবার সুমেরু সাগরেও ‘পোলার সিল্ক রোড’ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করলো বেইজিং৷ তবে চীনের ভূমিকা নিয়ে সংশয় কম নয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Qnb/Imaginechina
বিশ্ব বাণিজ্যে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা
বিশেষ করে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে আরও দ্রুত ও নিবিড় যোগাযোগ গড়ে তুলতে তায় চীন৷ তার অবকাঠামো গড়তে বেশ কয়েকটি দেশে বিশাল মাত্রায় বিনিয়োগ করছে চীন৷ ফিনল্যান্ড থেকে রেলপথে পণ্য পরিবহণের পরীক্ষামূলক যাত্রা তার একটা দৃষ্টান্ত৷ সুমেরু সাগরে চীনের পরিকল্পনা নিয়ে প্রকাশিত শ্বেতপত্রে সেই ভাবনার প্রতিফলন ঘটেছে৷
ছবি: picture-alliance/Photoshot/S. Hong
বাণিজ্যের নতুন পথ
বাণিজ্যের পথে ভৌগোলিক বাধা মেনে নিতে প্রস্তুত নয় চীন৷ সে দেশের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জলে-স্থলে নতুন পথ সৃষ্টি করতে যে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছেন, তা এতকাল মূলত স্থলপথের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল৷ পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে আরব সাগরের নাগাল পাওয়া এই উদ্যোগের অন্যতম লক্ষ্য৷
ছবি: DW
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সুবিধা
উত্তাপ বেড়ে চলায় বরফ গলে উত্তরমেরু সংলগ্ন অঞ্চল আগের তুলনায় সুগম হয় পড়ছে৷ বেসরকারি সংস্থাগুলিকে সেখানে অবকাঠামো তৈরি করে পরীক্ষামূলক যাত্রা চালাতে উৎসাহ দিচ্ছে চীন৷ এই ‘পোলার সিল্ক রোড’ সৃষ্টি হলে সুয়েজ প্রণালী এড়িয়ে জলপথে আরও দ্রুত চীনে পৌঁছানো সম্ভব হবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে সংশয়
উত্তর মেরু অঞ্চলের দেশ না হয়েও সেখানে চীনের এমন তৎপরতা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিচ্ছে৷ ২০১৩ সালে আর্কটিক কাউন্সিলের পর্যবেক্ষক সদস্য হয়েছে সে দেশ৷ বাণিজ্যের নতুন যাত্রাপথ ছাড়াও সেই এলাকার প্রাকৃতিক সম্পদের দিকে চীনের নজর রয়েছে৷ তবে আঞ্চলিক দেশগুলির সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমেই অগ্রসর হবার আশ্বাস দিয়েছে চীন৷
ছবি: Arctic Council
জ্বালানির নতুন উৎস
রাশিয়ার ইয়ামাল তরল গ্যাস প্রকল্পে বড় আকারে বিনিয়োগ করে বছরে ৪০ লক্ষ টন এলএনজি আমদানি করতে চায় চীন৷ উত্তর মেরু অঞ্চলের মাছ ধরার দিকেও চীনের নজর রয়েছে৷ তবে চীন জানিয়েছে, লাগামহীনভাবে সেই অঞ্চলের সম্পদ কাজে লাগানো, পরিবেশের ক্ষতি করা ও স্থানীয় ভাবাবেগে আঘাত করবে না সে দেশ৷
ছবি: picture -alliance/dpa/Sputnik/E. Biyatov
5 ছবি1 | 5
বহু নতুন শেয়ার শূন্যে গিয়ে পৌঁছেছিল৷ অর্থনৈতিক ক্ষতি স্বীকার করেও রাতারাতি শেয়ার তুলে নেওয়ার হিরিক পড়ে গিয়েছিল৷ ফলে শেয়ার বাজার আরো নিম্নমুখী হয়েছিল৷ ২০০৮ সালের সেই ধস সামলাতে বহু সময় লেগে গিয়েছিল৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, সময়টা প্রায় তিন বছর৷ তবে ২০১১ সালের ওয়াল স্ট্রিটের ধস সেভাবে প্রভাব ফেলেনি ভারতের বাজারে৷ কিন্তু এবারের ধসে ভারতের বাজার খুবই টালমাটাল৷
গত কয়েকবছরে ভারতের সাধারণ মানুষ আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বিনিয়োগ করতে শুরু করেছেন শেয়ার বাজারে৷ তার সবচেয়ে বড় কারণ, ভারত সরকার খোলা বাজারে বিনিয়োগকে গুরুত্ব দিচ্ছে৷ ব্যাংকগুলোর আমানতে আগের চেয়ে সুদ অনেকটাই কমে গিয়েছে৷ চার-পাঁচ বছর আগেও যেখানে স্থায়ী আমানত বা ফিক্সড ডিপোসিটে ব্যাংকগুলো ৯ থেকে ১০ শতাংশ বার্ষিক সুদ দিত, গত দু'বছরে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৬ শতাংশের কাছাকাছি৷ ব্যাংকের সেভিংস অ্যাকাউন্টের সুদও চোখে পড়ার মতো কমেছে৷ কমে গেছে রেকারিং আমানতে সুদের পরিমাণও৷ এমতাবস্থায়, সরাসরি শেয়ার কেনাবেচার দিকে না গেলেও মিউচুয়াল ফান্ড বা সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্টে জোড় দিয়েছেন সাধারণ মানুষ৷ যা সরাসরি শেয়ার বাজারের সঙ্গে জড়িত৷ ব্যাংকগুলোও মিউচুয়াল ফান্ড বিক্রি করতে শুরু করেছে৷ ফলে সাধারণ মানুষের আমানত এখন গিয়ে জমা হচ্ছে খোলা বাজারে৷ শেয়ারের ওঠা-পড়ার সঙ্গে সুদের পরিমাণ নির্ভর করছে৷
এত মানুষের আমানতের জন্য গত কয়েক বছরে ভারতীয় শেয়ার বাজারও স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল৷ বড় সড় ধস নামেনি বহুদিন৷ কিন্তু সোমবারের ধস সাধারণ মানুষের কপালেও চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে৷ অনেকেই মনে করছেন, ওয়াল স্ট্রিট দ্রুত ধসের মেরামত করতে না পারলে ভারতের বাজার আরো বিপর্যস্ত হবে৷ এবং সেক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের খোলা বাজারে টাকা জমানোর প্রবণতাও খানিকটা বাধাপ্রাপ্ত হবে৷ দেশের অর্থনীতির জন্য মোটেই তা খুব মঙ্গলের হবে না৷
ময়লা দিয়ে ব্যবসা করেন তাঁরা
বর্জ্য, বিশেষ করে প্লাস্টিক বর্জ্যকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই ব্যবসা করছেন৷ এতে একদিকে যেমন পরিবেশের ভাল হচ্ছে, তেমনি কিছু মানুষের কর্মসংস্থানও হচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Frentzen
বিলিকিস আদেবিয়ি-আবিওলা
যুক্তরাষ্ট্রে এমবিএ করার পর আইবিএম-এ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পাঁচ বছর কাজ করার পর নিজ দেশ নাইজেরিয়ায় গিয়ে বর্জ্য নিয়ে ব্যবসা করছেন৷ দেশটির সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা অধ্যুষিত শহর লাগসের ময়লা নিয়ে ব্যবসা করছেন৷ কোম্পানির নাম ‘উইসাইকেলার্স’৷ তাদেরকে আবর্জনা দেয়ার মাধ্যমে স্থানীয়রা ‘উপহার’ পেয়ে থাকেন৷ আর আবিওলার কোম্পানি ঐ আবর্জনা থেকে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করে৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: WeCyclers
থাটো গাটহানিয়া ও রেয়া এনগোয়ানে
দক্ষিণ আফ্রিকার এই দুই তরুণী প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে স্কুল ব্যাগ তৈরি করেন৷ দরিদ্র শিক্ষার্থীদের এগুলো দেয়া হয়৷ এ সব ব্যাগে সোলার প্যানেল বসানো আছে৷ ফলে শিক্ষার্থীরা হেঁটে স্কুলে যাওয়া-আসার ফলে প্যানেলগুলো যে চার্জ পায় তা দিয়ে রাতের বেলায় আলো জ্বলে৷ ফলে মোমবাতি না জ্বালিয়ে শিশুরা পড়তে পারে৷ ছবিতে একেবারে ডানে রেয়া আর বাম থেকে তিন নম্বরে থাটোকে দেখা যাচ্ছে৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: repurposeschoolbags.com/Screenshot
অ্যান্ড্রু মুপুয়া
মাত্র ১৬ বছর বয়সে স্কুলে পড়ার সময় বাবা-মা দু’জনই যখন চাকরি হারিয়ে ফেলেন তখন অ্যান্ড্রু কাগজের ব্যাগ তৈরির ব্যবসা শুরু করেন৷ পুঁজি জোগাড় করতে ৭০ কেজি প্লাস্টিক বোতল বিক্রি ও শিক্ষকের কাছ থেকে টাকা ধার নেন তিনি৷ ব্যাগ তৈরি শিখতে ইন্টারনেট আর ভিডিওর সাহায্য নেন তিনি৷ বর্তমানে ২৪ বছর বয়সি অ্যান্ড্রুর অধীনে ২০ জন কাজ করছেন৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: DW
লরনা রুট্ট
ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে কেনিয়ার নাইরোবিতে প্লাস্টিক রিসাইক্লিং ফ্যাক্টরি গড়ে তোলেন তিনি৷ এসব প্লাস্টিক দিয়ে তাঁর কোম্পানি বেড়া তৈরি করে৷ ঘরবাড়ি সহ সংরক্ষিত এলাকায় বেষ্টনী দিতে তাঁর বেড়া ব্যবহৃত হয়৷ কাঠের বদলে এ সব বেড়া খুব দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: L. Rutto
বেথেলহেম টিলাহুন আলেমু
আফ্রিকার ফুটওয়্যার ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে ইথিওপিয়ার ‘সোলরেবেলস’ বিশ্বে অনেক জনপ্রিয়৷ আলেমু’-র উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিটি গাড়ির পুরনো টায়ার, ফেলে দেয়া জামাকাপড় ব্যবহার করে জুতা তৈরি করে৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Frentzen
বাংলাদেশে রিসাইক্লিং ব্যবসা
প্লাস্টিক বোতল রিসাইকেল করে এমন অনেক কারখানা গড়ে উঠেছে ঢাকায়৷ তাদের হয়ে পরিত্যক্ত বোতল সংগ্রহ করছেন অনেকে৷ এতে তাদের দারিদ্র্যতা দূর হচ্ছে৷ বোতলগুলো মেশিন দিয়ে টুকরো করে প্লাস্টিক পণ্য বানায় এমন কোম্পানির কাছে বিক্রি করা হয়৷ কিছু অংশ বিদেশে, বিশেষ করে চীনেও রপ্তানি হয়ে থাকে৷ আরও জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: Getty Images/AFP/M.Uz Zaman
ওয়েস্ট কনসার্ন
বেশ কয়েক বছর ধরে ঢাকার বর্জ্য থেকে কমপোস্ট সার তৈরি করছে ওয়েস্ট কনসার্ন নামের একটি কোম্পানি৷ তাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোম্পানিটি এক লক্ষ মেট্রিক টনের বেশি বর্জ্য রিসাইকেল করেছে৷ বিস্তারিত জানতে উপরে ‘+’ চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: wasteconcern.org
7 ছবি1 | 7
এসজি/ডিজি (রয়টার্স, এএনআই, টাইমস অফ ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস)