বিশ্ব শান্তির আহ্বানে হিমালয়ের পথে পুস্কর শাহ
১০ এপ্রিল ২০১০চলতি সপ্তাহেই হিমালয়ের চূড়ায় চারটি মহাদেশের মোট দেড়শ' দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবেন শাহ৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি বিশ্ব ভ্রমণের সময় যেসব পতাকা সংগ্রহ করেছি, সেগুলো হিমালয়ের চূড়ায় সাজিয়ে দিতে চাই৷'' ‘‘শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া এবং বিশ্বকে দেখাটাই ছিল আমার লক্ষ্য,'' বলেন শাহ৷
বিশ্ব ভ্রমণ শেষ করে অবশ্য পুস্কর শাহ স্বগতোক্তি করেছেন এই বলে যে, তাঁর পাগুলো সম্ভবত যথেষ্টই শাস্তি পেয়েছে৷ তবুও তাঁর বিশ্বাস,
গোটা বিশ্ব জুড়ে চলমান যুদ্ধের বিরুদ্ধে তাঁর শান্তিপূর্ণ লড়াইয়ের চূড়ান্ত পরিণতিই হবে মাউন্ট এভারেস্টে এই পতাকাগুলো স্থাপন৷ বিশ্ব শান্তির প্রচারাভিযানে তাঁর এমন দুঃসাহসিক যাত্রার পেছনে আরেকটি ঘটনা তাঁকে উৎসাহ জুগিয়েছে৷ তা হলো, একজন গোর্খা যোদ্ধা হিসেবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে তাঁর পিতার খুন৷
তাঁর নিজের গ্রামে পুস্কর শাহের পরিচিতি রয়েছে ‘জীবন্ত শহীদ' হিসেবে৷ কারণ ১৯৯০ সালে মাত্র বিশ বছর বয়সে নেপালের তৎকালীন রাজার বিরুদ্ধে বিক্ষোভের সময় গুলি খেয়েছিলেন তরুণ শাহ৷ এতে তিনি এতোটাই মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন যে, তাঁর বেঁচে ওঠার ব্যাপারে কারো আশা ছিল না৷ অবশ্য ঐ বিক্ষোভের সফল পরিণতি ছিল নেপালে গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা৷
পুস্কর শাহ'র সাইকেল ভ্রমণের শুরুটা ছিল বেশ উদ্বেগজনক৷ কারণ তিনি বিভিন্ন দেশের এক গোছা মানচিত্র আর নগদ মাত্র ১০০ নেপালি রুপি নিয়ে শুরু করেন এই বিশ্ব ভ্রমণ৷ ১০০ নেপালি রুপি হলো মাত্র ১.০৪ ডলার৷ তিনি বলেন, ‘‘এটা কোন আরামদায়ক ভ্রমণ ছিল না৷ পথিমধ্যে আমি যেসব মানুষের সাথে সাক্ষাৎ করেছি তাঁদের বদান্যতা আর অনুগ্রহ আমাকে এগিয়ে নিয়েছে এতটা পথ৷'' জানা গেছে, শাহ প্রতিদিন ১০ ঘণ্টা করে সাইকেল চালাতেন৷ সাইকেল চালিয়ে পেরিয়েছেন মোট দুই লক্ষ বিশ হাজার কিলোমিটার৷
প্রতিবেদক: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী