জার্মানির কিন্ডারগার্টেনগুলিতে আন্তঃসাংস্কৃতিক শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না৷ এমনটাই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা৷ কারণ মাত্র এক তৃতীয়াংশ কিন্ডারগার্টেন নাকি অন্যান্য সংস্কৃতি থেকে আসা বাচ্চাদের চাহিদা নিয়ে মাথা ঘামায়৷
বিজ্ঞাপন
জার্মানিতে পাঁচ বছরের নীচে প্রতি তিনজন শিশুর একজন এসেছে অভিবাসী পরিবার থেকে৷ বার্লিনের একটি শহরাংশ বার্লিনার ভেডিং-এ প্রায় অর্ধেক বাসিন্দাই বিদেশি বংশোদ্ভূত৷ ৯৮ শতাংশ বাচ্চা অভিবাসীর সন্তান বা নাতি-নাতনি৷ বেশিরভাগই তুরস্ক ও আরব দেশগুলি থেকে আসা৷ ‘‘অনেক ভুল বোঝাবুঝিও হয় এখানে'', বলেন বার্লিনার ভেডিং-এর ভাটস্ট্রেসে কিন্ডারগার্টেনের প্রধান এফা লিবকে৷ ‘‘অনেক মা-বাবা নানা রকম ফর্ম পূরণ করতে গিয়ে হিমশিম খান৷ অনেকে কিন্ডারগার্টেনের বিজ্ঞপ্তি বুঝতে না পেরে অসুবিধায় পড়ে যান৷''
সমস্যা হয়
অন্যদিকে কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষিকারাও ‘পেরেন্টস-ডে'-র আলাপ-আলোচনায় এসে সমস্যায় পড়েন৷ কেননা খুব কম মা-বাবাই প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনায় যোগ দেন৷ এর ফলে বাচ্চাদের মঙ্গলের জন্য সহযোগিতামূলক কাজকর্মের পরিবেশ গড়ে উঠতে পারে না৷
জার্মানিতে বিদেশি বংশোদ্ভূত শিশুরা
ফটোগ্রাফার মার্টিনা হেন্সকে ও লেখক টাটিয়ানা লাইশারিং জার্মানির বিভিন্ন জায়গা স্কুল ঘুরে বিদেশি বংশোদ্ভূত শিশুদের ছবি তুলেছেন৷ এই ছবিঘরে সেই শিশুরাই জানাচ্ছে ওরা কিভাবে জার্মানির জীবনধারার সাথে একাত্ম বোধ করে৷
ছবি: Martina Henschke
আমার দেশ খুবই সুন্দর!
লাউরা ওর নিজের দেশ পর্তুগালকে নিয়ে খুব গর্ব বোধ করে৷ ‘‘টেলিভিশনে পর্তুগালের ছবি দেখে আমার সেখানে যেতে ইচ্ছে করে৷’’ লাউরার জন্ম জার্মানিতে হলেও ও পর্তুগালে গিয়ে পর্তুগিজ ভাষা শিখেছে৷ তবে ওর বাবা ওকে পর্তুগিজে প্রশ্ন করলে লাউরা জার্মানে উত্তর দেয়৷ জার্মানিতে জন্ম নেওয়া বেশিরভাগ বাচ্চার ক্ষেত্রেই এ কথা প্রযোজ্য৷ ঠিক এ বিষয়টিই হিল্ডেসহাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রদর্শনীতে দেখানো হয়েছে৷
ছবি: Martina Henschke
‘সোমালিয়া আমার জীবনের অঙ্গ’
দিকার ভাষায়, ‘‘আমি সোমালীয়, ইংরেজি, জার্মান ভাষা জানি, জানি কিছুটা ফ্রেঞ্চ, আরবী এবং অল্প কিছুটা তুর্কি ভাষাও৷’’ দিকার মতে, ভাষগুলোর মধ্যে কিছুটা মিল রয়েছে৷ তাছাড়া ও এটাও লক্ষ্য করছে যে, ওর পরিবারের মানুষজন আফ্রিকান এবং আরবী – এই দুই ভাষা মিলিয়ে কথা বলে৷
ছবি: Martina Henschke
মাঝে মাঝে অসুবিধা হয়
বিভিন্ন ভাষা জানার যে বিশেষ সুবিধা রয়েছে, সে কথাই বোঝানো হয়েছে হিল্ডেসহাইম বিশ্ববিদ্যলয়ের এই প্রদর্শনীটিতে৷ ফেরিদে অনেকগুলো ভাষা শোনার মধ্য দিয়েই বেড়ে উঠছে৷ ওর ভাষায়,‘‘জার্মান এবং তুর্কি ভাষা আমি জানি আর ইংরেজি জানি সামান্য, স্কুলে শিখছি৷’’ মায়ের সাথে ফেরিদে খুব কমই তুর্কি ভাষায় কথা বলে৷ ভাই-বোনদের সাথে তুর্কি/জার্মান দুটোই আর তুর্কি বংশোদ্ভূত জার্মান বন্ধুদের সাথে শুধু জার্মান ভাষায় কথা বলে সে৷
ছবি: Martina Henschke
খেলার মাঠে ভাষা চর্চা
বাড়ির কাছেই খেলার মাঠে বিভিন্ন দেশের মানুষ একসাথে হলে তাদের নানা অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা হয়৷ ইব্রাহিমের কিন্তু এভাবেই ভাষা শেখার প্রতি আগ্রহ বেড়েছে৷ ইব্রাহিম বসনীয় এবং জার্মান – এই দুই ভাষার মধ্য দিয়েই বড় হচ্ছে৷ তবে ইটালিয়ান ভাষা শিখতে ইব্রাহিম খুবই আগ্রহী, কারণ ওর বেশিরভাগ বন্ধুই যে এই ভাষায় কথা বলে!
ছবি: Martina Henschke
‘আমি কিন্তু সুপারম্যান হতে চাই’
রামসেস বাড়িতে ওর মায়ের সাথে স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলে৷ তবে ওর দুটো পাসপোর্ট – জার্মান এবং কলোম্বিয়ান৷ রামসেস-এর ভাষায়, ‘‘আমার জন্ম যেখানেই হোক না কেন, আমি মনে করি আমি জার্মানিতেই জন্মেছি, ভাষা নিয়ে আমার কোনো মাথা ব্যথা নেই৷’’ তবে ওর সমস্ত ভাবনা জুড়ে রয়েছে শুধু একটাই, রামসেস-এর ভাষায়, ‘‘আমি সুপারম্যান হয়ে আকাশে উড়ার স্বপ্ন দেখি৷’’
ছবি: Martina Henschke
স্বপ্ন দুই ভাষায়ই দেখি
এরমালের জন্ম জার্মানির ফ্রাংকফুর্ট শহরে৷ ও এখন ক্লাস ওয়ানে পড়ে৷ এরমানের সবচেয়ে ভালো লাগে বই পড়তে আর অঙ্ক করতে৷ ‘‘আমার নিজের কোনো বই নেই, তবে আমি প্রতি সপ্তাহেই লাইব্রেরি থেকে একসাথে অনেকগুলো ডাইনোসরাসের বই নিয়ে আসি৷’’ এরমাল ওর বাবা-মায়ের সাথে বেশিরভাগ সময় আলবেনীয় ভাষায় কথা বললেও ও স্বপ্ন দেখে জার্মান এবং আলবেনীয় ভাষাতে৷ ‘‘আমি তো এর চেয়ে বেশি ভাষা জানি না’’, বলে এরমাল৷
ছবি: Martina Henschke
‘‘আমি কিন্তু কিছুটা জার্মান’’
হাজার নামের এই মেয়েটির স্বপ্ন যে, ও বড় হয়ে ডাক্তার অথবা উকিল হবে৷ হাজার ওর ভাই-বোন এবং স্কুলের বন্ধুদের সাথে জার্মান ভাষায় কথা বলেলেও বাবা-মায়ের সাথে সে কথা বলে বার্বার ভাষায়৷ স্কুলে অবশ্য ইংরেজি শিখছে হাজার৷ ওর জন্ম জার্মানিতে, তবে বাবা-মা এসেছেন মরক্কো থেকে৷ হাজার নিজের সম্পর্কে বলে, ‘‘আমি মরোক্কান হলেও এখন অবশ্যই কিছুটা জার্মান৷’’
ছবি: Martina Henschke
‘আমার বন্ধুরা টিউনিশিয়ায়’
ইহেব্স-এর বাবা এসেছে টিউনিশিয়ায় থেকে আর মা ও নানা জার্ডান থেকে৷ ইহেব্স-এর আরবী ভাষা জানা থাকায় টিউনেশিয়ায় অনেকের সাথে ওর বন্ধুত্ব হয়েছে৷ ওর ভাষায়, ‘‘আমি আসলে টিউনেশিয়ান, জার্মান নই৷’’ ওর ধারণা ও যেহেতু সবসময় জার্মান ভাষায় কথা বলে না, তাই সে জার্মান নয়৷ ভাষার মাধ্যমেই নিজের পরিচয় দিতে পছন্দ করে ইহেব্স৷ তবে ও সারা জীবন পরিবারের সাথে জার্মানিতেই কাটাতে চায়৷
ছবি: Martina Henschke
সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে
ইওয়ানে-র প্রিয় বিষয় জার্মান ভাষা আর সাঁতার কাটা৷ ওর মতে, জার্মান ভাষাটাই ও ভালো জানে৷ এর কারণ, ইওয়ানে-র জন্ম জার্মানিতে৷’’ ও কখনো থাইল্যান্ডে না গেলেও মায়ের সাথে থাই ভাষাতেই কথা বলে৷ তবে ওদের পরিবারের লোকজন বিশ্বের নানা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে৷ ফলে সবার সাথে যোগাযোগ রাখাটা প্রায় সম্ভবই হয়ে ওঠে না৷ ‘‘আমার ‘কাজিন’ থাকে লন্ডনে, আর আমি জার্মানিতে৷ কাজেই আমরা একে অপরের সাথে নিয়মিত কথা বলতে পারি না৷
ছবি: Martina Henschke
জায়গা পরিবর্তন
ক্রিস্টিয়ান প্রথমে নাস্তা করে, তারপর দাঁত ব্রাশ করে তার দিন শুরু করে৷ পরে আবারো বিছানায় শুয়ে আরাম করে একটু গড়িয়ে নেয়৷ আচ্ছা, ‘‘জার্মান বলতে আসলে কাদের বোঝায়? যাঁদের জন্ম জার্মনিতে আর যাঁদের বাবা-মা জার্মান, তাঁদের?’’ প্রশ্ন তার৷ এর ব্যাতিক্রমও রয়েছে কিন্তু বলে সে৷ ক্রিস্টিয়ান লক্ষ্য করেছে, অনেকেই অন্যান্য দেশ থেকে জার্মানিতে আসেন, টাকা-পয়সা রোজগার করে ভালোভাবে জীবন কাটাতে৷
ছবি: Martina Henschke
10 ছবি1 | 10
শিক্ষা বিশেষজ্ঞ মোহিনি লোখান্ডে জার্মান কিন্ডারগার্টেনে আন্তঃসাংস্কৃতিক পরিবেশের ব্যাপারে গবেষণা করেছেন৷ ফলাফল: মাত্র এক তৃতীয়াংশ কিন্ডারগার্টেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশ থেকে আসা বাচ্চাদের চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করে থাকে৷ শিক্ষক/ শিক্ষিকা ও কর্মীদের আন্তঃসাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে জ্ঞানের অভাব রয়েছে৷ এছাড়া মা-বাবাদের কিন্ডারগার্টেনের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত করার সুযোগ থাকে কম৷
একটি ব্যতিক্রম
ভাটস্ট্রাসের কিন্ডারগার্টেনটি এক্ষেত্রে একটি ব্যতিক্রম৷ বির্গ্যুল ডোগান কিন্ডারগার্টেনের রঙচংয়ে ভবনে তাঁর ছোট্ট মেয়েটির কাছ থেকে বিদায় নেন৷ টুকটাক কথা বলেন শিক্ষিকা বারবারা ব্যার্গারের সঙ্গে৷ ‘‘আমরা আমাদের বাচ্চাদের শিক্ষিকার সঙ্গে সব বিষয়ে কথাবার্তা বলতে পারি৷'' বলেন এই চটপটে তরুণী মা৷ ভেডিং-এ বড় হয়েছেন তিনি৷
ভাষাগত সমস্যা হলে দোভাষী হিসাবে বির্গ্যুলের মতো জার্মানিতে বড় হয়ে ওঠা মা-বাবার ডাক পড়ে৷ কিছুদিন আগে একটি বাচ্চা ছেলে নতুন গ্রুপে অস্বস্তি বোধ করছিল, তার মায়ের সাথে কথা বলার জন্য বির্গ্যুল ডোগানের সাহায্য চাওয়া হয়৷ এই রকম ঘটনা ঘটে প্রায়ই৷
মা-বাবারা দাপ্তরিক বা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে তাদের বিশ্বস্ত দোভাষী সাথে নিয়ে আসতে পারেন৷ এই কিন্ডারগার্টেনটিতে আন্তঃসাংস্কৃতিক পরিবেশ লক্ষ্য করা যায়৷
‘শিশু কাঁদলে, তাকে কোলে তুলে নিন’
বাচ্চা কাঁদলে কোলে তুলে নেয়াটাই স্বাভাবিক, বিশেষ করে উপ-মহাদেশের বাবা-মা এবং পরিবারের মানুষদের কাছে৷ এ নিয়ে তাঁদের মনে কোনো প্রশ্ন নেই৷ কিন্তু জার্মানিতে? চলুন বিস্তারিত জানা যাক এই ছবিঘর থেকে৷
ছবি: Fotolia/st-fotograf
শিশুরা কাঁদে কেন?
যে কোনো শিশুই চিৎকার করে কেঁদে তার ভূমিষ্ঠ হওয়ার খবর জানিয়ে দেয়৷ তারপরও কারণে-অকারণেই ওরা কাঁদে৷ এই সুন্দর ভুবনের সাথে মানিয়ে নিতে ওদের যেমন কিছুটা সময় লাগে, তেমনই নতুন মা-বাবারও লাগে খানিকটা সময় সব কিছু গুছিয়ে নিতে৷ যা খুবই স্বাভাবিক৷
ছবি: Fotolia/S.Kobold
আমার কান্না কেউ কি শুনছে না?
মাঝে মাঝে শিশুরা চিৎকার করে ওঠে, বিশেষ করে কাছাকাছি অনেকক্ষণ কোনো শব্দ শুনতে না পেলে৷ অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্যই হয়ত তখন কাঁদে তারা৷ মজার ব্যাপার, ঐ মুহূর্তে কেউ কাছে গিয়ে কথা বললে বা কোলে তুলে নিলে সাথে সাথেই শিশুদের কান্না থেমে যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বাঙালি বাবা-মায়ের সন্তান
দেশে সন্তান জন্মের পর থেকেই সে বাচ্চা কোলে কোলে থাকে৷ বাচ্চা কাঁদুক আর না কাঁদুক৷ নতুন মা সারাক্ষণই তাঁর শিশুটিকে নিয়ে ব্যস্ত আর সেই শিশু সর্বক্ষণই পেয়ে থাকে মায়ের শরীরের উষ্ণতা৷ শিশুকে কোলে নেওয়ার জন্য বাবা-মা ছাড়াও আত্মীয়স্বজন থাকেন৷ এছাড়া, বাচ্চাকে শুধু দেখাশোনা করার জন্য আলাদা লোকও অনেক সময় রাখা হয়৷
ছবি: picture-alliance/Joker
জার্মান শিশু
জার্মানিতে কোনো শিশু কাঁদলেই চট করে কোলো তুলে নেওয়া হতো না কয়েক বছর আগ পর্যন্তও৷ শিশু কাঁদলে ওকে শুইয়ে রাখা হতো৷ এক সময় সেই ছোট্ট শিশু কেঁদে কেঁদে ঘুমিয়ে পরতো৷ কারণ, মা সারাক্ষণ বাচ্চাকে কোলো নিলে বাড়ির অন্য কাজ কে করবে? রাতে প্রতিদিন ঘড়ি ধরে একই সময়ে বাচ্চাকে বিছানায় শুইয়ে দেওয়া হতো ঘর অন্ধকার করে৷ বলা বাহুল্য জার্মানিতে গ্রীষ্মকালে প্রায় ১১টা পর্যন্ত বাইরে সূর্যের আলো থাকে৷
ছবি: Getty Images/Afp/Timothy Clary
সময় পাল্টেছে, বদলেছে চিন্তাধারা
একদিকে যেমন জার্মানির মতো উন্নত দেশগুলিতে প্রযুক্তি দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, তেমনই অন্যদিকে উন্নয়নশীল দেশেরও কিছু বিষয় গ্রহণ করতে শুরু করেছে তারা৷ শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. গেন কামেদা বলেন, পশ্চিমের সংস্কৃতিটা এমন যে শিশুরা মায়ের শরীরের উষ্ণতা কম পায়, কারণ এ দেশে বাচ্চারা বিছানায় বেশি সময় থাকে আর এটাই হয়ত শিশুদের রাতে কান্নাকটি করার বড় কারণ৷
ছবি: Yuri Arcurs/Fotolia
নতুন বাবা-মা
নতুন মা-বাবার নানা প্রশ্ন, শিশুটির কান্নার কারণ তাঁরা বুঝতে পারেন না৷ ক্ষুধা, শরীর খারাপ, ক্লান্ত নাকি আদর, কি চায় বেবিটি? আসলে শরীরের উষ্ণতা পেলে শিশুরা সব কিছুই ভুলে যায়, যদি না বড় কোনো শারীরিক কষ্ট থেকে থাকে, বলেন ডা. কামেদা৷ তাঁর পরামর্শ, পিতা-মাতা হলে অনেককিছুই বাদ দিতে হয়, তাই বাইরে গেলে শিশুকে কোলে করে সঙ্গে নেবার চেষ্টা করবেন – যাতে শিশুটি শরীরের উষ্ণতা পায়৷
ছবি: Fotolia/detailblick
ডাক্তারের পরামর্শ
নতুন বাবা-মায়ের জন্য ডাক্তার কামেদার আরো পরামর্শ, শিশুর কাছাকাছি থাকুন, শিশুকে সময় দিন, কোলে তুলে নিন৷ অল্প কিছুদিন পরেই দেখবেন, শিশু শুধু কাঁদেই না, বরং খুব শীঘ্রই তারা হাসতে শিখবে, হাসাবে মা-বাবাকেও৷
ছবি: Fotolia/st-fotograf
7 ছবি1 | 7
রোজার কারণে কোনো অনুষ্ঠান পিছিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে৷ বড়দিনের মতো ঈদের অনুষ্ঠানের আয়োজনও করা হয় কিন্ডারগার্টেনে৷ শিক্ষিকারা জানেন, হিজাব মানেই পরনির্ভরতা নয়৷ তুর্কি, আরব বা জার্মান, সব জাতি গোষ্ঠীতেই ভালো-মন্দ রয়েছে৷ বিভিন্ন পরিবারের সঙ্গে আস্থার সম্পর্ক গড়ে তোলা হয়৷ ‘‘তাই কোনো মাকে যদি আমরা জার্মান কোর্স করতে বলি, তিনি তা নির্দেশ বলে মনে করেন না৷ অনেকে তো উদ্দীপিত বোধ করেন৷'' বলেন এভা লিবকে৷
প্রয়োজন সহযোগিতামূলক কর্মর্সূচি
মা-বাবা ও শিক্ষিকারা সহযোগিতামূলক কাজকর্ম করতে পারলে বাচ্চারাই তো লাভবান হয়৷ ব্রিটেনে এই ধরনের কর্মসূচিতে সুফল দেখা গিয়েছে৷ জার্মানির ১৪টি রাজ্য একত্রে কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষিক শিক্ষিকার প্রশিক্ষণে একটি পাঠ্যসূচি গ্রহণ করার ব্যাপারে একমত হন৷ যার কেন্দ্রস্থলে রয়েছে ‘কিন্ডারগার্টেন মা-বাবা ও সহযোগিতা'৷ কিন্তু কিন্ডারগার্টেনের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে শিক্ষিকদের ব্যতিব্যস্ত থাকতে হয়, বাচ্চাদের পাশাপাশি মা-বাবার বিশেষ চাহিদার দিকে নজর দেওয়ার সময়ই থাকে না৷
বাচ্চাদের মঙ্গলের জন্য মা-বাবার আন্তঃসাংস্কৃতিক শিক্ষা প্রয়োজন৷ আর এ জন্য প্রয়োজন বিভিন্ন অভিবাসী সংগঠন, পরামর্শ কেন্দ্র ও স্থানীয় উদ্যোগের মধ্যে সহযোগিতামূলক কর্মসূচি৷ বলেন শিক্ষা গবেষক মোহিনি লোখান্ডে৷ এই সংগঠনগুলি মা-বাবার আস্থা গড়ে তুলতে কিন্ডারগার্টেনগুলিকে সহায়তা করতে পারে৷ কিংবা মা-বাবাদের জন্য পরামর্শ ও কোর্সের আয়োজন করতে পারে৷ রাস্তার উল্টো দিকে অবস্থিত পারিবারিক কেন্দ্রটি না থাকলে ভাটস্ট্রাসের কিন্ডারগার্টেনটির পক্ষে অনেক কাজ করাই কঠিন হয়ে পড়তো৷