বিশ্ব শ্রম সংস্থা বা আইএলও-র নতুন রিপোর্ট অনুযায়ী, ফেয়ার জব বা ন্যায্য মজুরির কাজকর্মই একমাত্র উন্নয়ন বয়ে আনে৷ অর্থাৎ কম বা নিম্ন মজুরি এবং কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতা সমাজ ও অর্থনীতির জন্য কখনই মঙ্গলকর নয়৷
বিজ্ঞাপন
উন্নয়নশীল দেশগুলিতে ১.৫ বিলিয়ন মানুষ কাজ করেও জীবিকা নির্বাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে৷ অনেককেই দিনমজুর হিসাবে ও ছুটা কাজ করে বাঁচতে হচ্ছে৷ এই সব তথ্য জানা গিয়েছে বিশ্ব শ্রম সংস্থার সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে৷
উন্নয়নের চাবিকাঠি – কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ
এতে বলা হয়েছে, কাজে সুষ্ঠু পরিবেশ ও ন্যায়সঙ্গত শর্তাবলী থাকলে উন্নয়নও ত্বরান্বিত হয়৷ বিষয়টি খতিয়ে দেখতে আইএলও-র এক কর্মীগ্রুপ ১৪৫টি উন্নয়নশীল ও বিকাশমান দেশে গিয়েছিলেন৷ তাঁদের অভিমত, যে সব দেশে ন্যায়সঙ্গত শ্রম আইন রয়েছে এবং সামাজিকসিস্টেমে কর্মীদের অধিকার ও নিরাপত্তা সুরক্ষিত, সেসব দেশের সামগ্রিক উন্নয়নেও নিম্ন মজুরির দেশগুলির তুলনায় একটা ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা যায়৷
উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুণগত মানটাই মুখ্য, বলেন আইএলও-র মোয়াজ্জেম মাহমুদ৷ ‘‘শুধু রপ্তানির মাধ্যমে নয়, বরং কাজের গুণগত মানের কারণেই কয়েকটি দেশ দীর্ঘমেয়াদে উঁচু আয়ের দেশে পৌঁছাতে পেরেছে'', বলেন মাহমুদ৷ এর ফলে ভালো কর্মক্ষেত্র তৈরি হয়, শিক্ষা ও উৎপাদন ব্যবস্থায় উন্নয়ন হয়৷ বৃদ্ধি পায় নিরাপত্তা, যা আবার একটি দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করে৷ ‘‘জাতীয় অর্থনীতি ন্যায্য বেতনের ভিত্তিতে গড়ে উঠলে অভ্যন্তরীণ বাজারেও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সম্ভব'', বলেন মাহমুদ৷
মলদোভার নিঃসঙ্গ শিশুরা
মলদোভার হাজার হাজার শিশু বাবা, মা ছাড়া একাকী বসবাস করে, যখন ওদের মা, বাবা ওদেরই জন্য বিদেশে কাজ করতে যায়৷ ফটোগ্রাফার আন্দ্রিয়া ডিফেনবাখ এরকম বেশ কিছুকে কাছে থেকে দেখেছেন৷
ছবি: Andrea Diefenbach
পিতামাতাহীন দেশ
ওলগা, সাবরিনা এবং ক্যারোলিনা তিন বছর একা ছিল৷ ওদের মা তখন বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের সেবিকা হিসেবে কাজ করতো এবং একটি ইতালিয় পরিবারের সাথে বড় একটি ঘরের ছোট্ট একটি ভাজ করা খাটে ঘুমাতো৷ ‘পিতামাতাহীন দেশ’ নামক একটি ফটো সিরিজে আন্দ্রিয়া ডিফেনবাখ মলদোভার এরকম শিশু এবং বাবা মায়ের দূরে থাকার সম্পর্ক বর্ণনা করেন৷
ছবি: Andrea Diefenbach
বারো বছর বয়সেই সংসারের কর্তী
সবচেয়ে বড় বোন ওলগা পুরোপুরো মায়ের ভূমিকাই পালন করতো৷ পনির বানাতো, রুটি তৈরি করতো,এমনকি ছোট দুই বোন ঠিকমতো স্কুলে গেলো কিনা সেদিকেও খেয়াল রাখতো৷ বিজবাডেনের ফটোগ্রাফার ডিফেনবাখ বলেন, ‘এই পরিস্থিতি তাঁকে গভীরভাবে স্পর্শ করে’৷
ছবি: Andrea Diefenbach
মা, আমাদের ভুলে যেওনা!
ওলগার ছোট বোন ওর মার সাথে টেলিফোনে কথা বলার সময় প্রায় প্রতিবারই একথাটা মনে করিয়ে দিত৷ যদিও ওদের দেখে মনে হতো ওরা এই পরিস্থিতির সাথে ভালোভাবেই খাপ খাইয়ে নিয়েছিল৷ ডিফেনবাখ আরো বলেন, পরিবার যে ভেঙে গেছে তা হয়ত লক্ষ্য করা যাবে আরো ২০ বছর পরে যখন বাচ্চারা বড় হয়ে যাবে৷
ছবি: Andrea Diefenbach
দাদা দাদীর সাহায্য
কাটালিনার বাবা, মাও বিদেশে কাজ করে কিন্তু এই মেয়েটি ভাগ্যবতী কারণ ওর সাথে থাকার জন্য ওর দাদী অন্য গ্রাম থেকে চলে এসেছে৷ সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র মলদোভার অনেক পরিবারই এভাবে ভেঙে গেছে৷ বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী মলদোভার জনসংখ্যার প্রায় এক চতুর্থাংশ কাজ করে বিদেশে৷ এরকম অভিবাসী অনেক শ্রমিকেরই বৈধভাবে সেখানে থাকার অনুমতি নেই৷
ছবি: Andrea Diefenbach
দূর থেকে ভালোবাসার প্রকাশ
বাবা-মায়েরা বিদেশ থেকে নিয়মিতই বাচ্চাদের জন্য প্যাকেট পাঠাতো৷ মাঝে মাঝে সেসব প্যাকেটে ইতালির সুপার মার্কেট থেকে কেনা পপকর্ন বা আপেলও থাকতো৷ ডিফেনবাখ বলেন ওগুলো হয়তো মলদোভার আপেলের মতো সুস্বাদু বা তাজা নয়, কিন্তু এই প্যাকেটি ছিল দূর থেকে সন্তানদের প্রতি পিতামাতার ভালোবাসা দেখানোর মাধ্যম৷ যেন ডাকে পাঠানো ‘ভালোবাসার বাক্স’৷
ছবি: Andrea Diefenbach
দীর্ঘদিনের বিচ্ছেদ
লাডমিলা ইতালির ৬টি বিভিন্ন এলাকায় ক্লিনার হিসেবে কাজ করতো এবং তার ছেলে স্লাভেকের কাছ থেকে ৭ বছর দূরে ছিল৷ সীমান্তে বৈধভাবে থাকার অনুমতি দেখাতে হতো বলে তখন যারা অবৈধভাবে বিদেশে থাকতো তারা সন্তানদের দেখতে যেতে পারতো না৷ এখন লাডমিলার থাকার জন্য বৈধ অনুমতি পাওয়ায় সে তার ছেলেকে নিজের কাছে নিয়ে এসেছে৷
ছবি: Andrea Diefenbach
বিদেশে কঠোর পরিশ্রম
ডিফেনবাখ পিতামাতাদের ভাগ্যের একটি বর্ণনা দেন৷ আলজোনা এবং ভাঞ্জা মেলনের ক্ষেতে কাজ করে যা রোজগার করেন তা তাদের দু’টি সন্তানের লালনপালনের জন্য যথেষ্ট৷ তারা প্রতিদিন দেশে টেলিফোনও করেন৷ তবে বৃষ্টির সময় ক্ষেতে কাজ হয়না বলে তাদের আয় কমে যাওয়ায় তখন চলতে অসুবিধা হয়৷
ছবি: Andrea Diefenbach
সহানুভূতির জন্য আবেদন
ডিফেনবাখ বলছেন, আমি আশাকরি আমার তোলা ছবিগুলো পশ্চিম ইউরোপের মানুষদের উৎসাহিত করবে, যাদের বাড়িতে বিদেশি মহিলারা কাজ করেন এবং যাদের সন্তান রয়েছে, তাদের কষ্ট এবং জীবনযাত্রা সম্পর্কে বুঝতে৷ ‘সন্তানকে ভালোবাসেন এমন পিতামাতার প্রতি যে কেউ সহানুভূতিশীল হতে পারেন’৷
ছবি: Andrea Diefenbach
ছবিই সম্বল
বাচ্চাদের ছবি দেখে প্রতিরাতেই বাবা-মায়ের ওদের কথা খুব মনে পড়ে৷ দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণেই এই বাবা-মায়েরা বিদেশে কাজ করতে বাধ্য হয়৷ ডিফেনবাখ বলেন, এইসব বাবা মায়েরা জানেন না কিভাবে তারা সন্তানদের স্কুলের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনবেন৷ মলদোভা ইউরোপের একটি গরীব দেশ, যে দেশের মানুষের গড় আয় মাসে ২০০ ইউরোর নীচে৷
ছবি: Andrea Diefenbach
মিথ্যে করুণা নয়
‘পিতামাতাহীন দেশ’ প্রকল্পের অধীনে ডিফেনবাখ পূর্ব ইউরোপের ওপর একটি বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরির জন্য একটি পুরস্কার লাভ করেন৷ হানোফারের ফটো সাংবাদিকতার প্রফেসর ও প্রামাণ্য ফটোগ্রাফির বিচারক লার্স বাউয়ার স্মিড্ট বলেন এই ফটোগুলোতে করুণা প্রকাশ করা হয়নি, ইউরোপের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিই ফুটে উঠেছে৷
ছবি: Andrea Diefenbach
জীবন ছেলে খেলা নয়
মলদোভার জনসাধারণও ডিফেনবাখের বইটি দেখার সুযোগ পায়৷ অনেকেই বিদেশে তাদের আত্মীয়স্বজনদের এত কষ্টে জীবন কাটানোর কথা জানতে পেরে বিস্মিত হয়৷ ডিফেনবাখ বলেন, তারা শুধু জানতো মাঝে মাঝে বিদেশ থেকে খাবার ও কাপড়ের প্যাকেট আসতো৷ তাঁর এই বইয়ের ছবিগুলো বিজবাডেনের সিটি মিউজিয়ামে দেখা যাবে আগামী ১২ মে পর্যন্ত৷
ছবি: Andrea Diefenbach
11 ছবি1 | 11
দারিদ্র্যমোচনে প্রয়োজন সর্বক্ষেত্রে সমন্বয়
আইএলও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ স্পষ্ট: শুধু রপ্তানি অর্থনীতি নয় বরং অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদা, কর্মীদের ক্রয়ক্ষমতা ও রপ্তানি বাণিজ্যের সমন্বয়ই দারিদ্র্য বিমোচনের দ্বার খুলে দেবে৷
আইএলও বিশেষজ্ঞ মোয়াজ্জেম মাহমুদ বহু উন্নয়নশীল ও বিকাশমান দেশের প্রশংসনীয় অগ্রগতির কথা উল্লেখ করেন৷ সেসব দেশে কর্মবাজারে পরিবেশের উন্নয়ন হচ্ছে৷ অন্যদিকে ইউরোপের বহু শিল্পোন্নত দেশ ভুল পথে এগিয়ে যাচ্ছে৷ স্বল্পমেয়াদী, খণ্ডকালীন এবং নিম্নমজুরির কাজের প্রসার বাড়ছে৷
যুব বেকারত্বের হার উদ্বেগজনক
আইএলও-এর রিপোর্টে অনেক দেশে যুব বেকারত্বের ব্যাপারে সতর্ক করে দেওয়া হয়৷ আগামী পাঁচ বছরে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে (২০০ মিলিয়ন) ২০ কোটিরও বেশি মানুষ কর্মবাজারে ভিড় করবে৷
এখনই দরিদ্র দেশগুলিতে বয়স্কদের তুলনায় যুব বেকারত্বের হার তিনগুণ বেশি৷ উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে প্রতি তিন জনে একজন তরুণ বেকার৷ এর প্রভাব সমাজের ওপরও পড়বে বলে সতর্ক করে দেয় আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থা৷
বাংলাদেশে গৃহকর্মীদের দুর্দশার কথা
পশ্চিমা বিশ্ব যখন ঘরের কাজে রোবট ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে, বাংলাদেশে তখনও ঘরের কাজ করছেন গৃহকর্মীরা৷ মাসে তাঁদের গড় বেতন ৫১০ টাকা, কাজ করতে হয় কমপক্ষে দশ ঘণ্টা৷ আর ঘুমাতে হয় রান্না ঘরের মেঝেতে৷ এই বিষয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছবি: picture-alliance/Godong
মাসিক বেতন ৫১০ টাকা
পশ্চিমা বিশ্ব এখন ঘরের কাজে রোবট ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে৷ এই নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা৷ তবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভিন্ন৷ সেদেশে ঘরের কাজের জন্য অধিকাংশ বাড়িতে রয়েছেন গৃহকর্মী৷ যাঁদের মাসিক গড় বেতন ৫১০ টাকা৷ আর দিনে কাজ করতে হয় কমপক্ষে দশ ঘণ্টা৷
ছবি: imago/Michael Westermann
৮৩ শতাংশ নারী
ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশন বা আইটিইউসি ২০১২ সালে বাংলাদেশের গৃহকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন তথ্য প্রকাশ করেছে৷ এতে দেখা যাচ্ছে, শুধুমাত্র ঢাকা এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে গৃহকর্মীর সংখ্যা বিশ লাখের মতো৷ এঁদের মধ্যে ৮৩ শতাংশ নারী, যাঁদের অনেকে বয়সে শিশু কিংবা তরুণী৷
ছবি: imago/imagebroker
মেঝেতে ঘুমানো
আইটিইউসি-র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গৃহকর্মীদের মধ্যে ৩৩ শতাংশ রাতে রান্নাঘরে ঘুমান৷ এছাড়া বসার এবং শোয়ার ঘরের মেঝেতে ঘুমান গড়ে ২০ শতাংশ করে গৃহকর্মী৷ কারো কারো আবার ঘুমাতে হয় স্টোর রুমে৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
অন্যায়, নির্যাতন
অধিকাংশ গৃহকর্মী বা কাজের মেয়ে পড়ালেখার সুযোগ পান না৷ বিনোদনেরও অভাব রয়েছে৷ কমপক্ষে ৫৩ শতাংশ গৃহকর্মীর সঙ্গে বাজে ভাষায় কথা বলা হয়৷ কাজ হারানোর আতঙ্কও কাজ করে তাঁদের মধ্যে৷ যৌন নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মীর সংখ্যা ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: Fotolia/Miriam Dörr
প্রাণহানি
২০০১ থেকে ২০১০ সাল সময়কালের মধ্যে বাংলাদেশে নির্যাতনের শিকার হয়ে কমপক্ষে ৩৯৮ গৃহকর্মী প্রাণ হারিয়েছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ লেবার স্টাডিজ বা বিলস৷ এছাড়া নির্যাতনে আহত গৃহকর্মীর সংখ্যা ২৯৯৷ আইটিইউসি-র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বাংলাদেশ বিষয়ক বিভিন্ন তথ্যের উৎস বিলস এবং ‘গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক’৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: Fotolia/GrafiStart
জনসচেতনতা সৃষ্টি
গৃহকর্মীদের অধিকারের বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে বিভিন্ন উদ্যোগও রয়েছে বাংলাদেশে৷ ‘গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক’ এক্ষেত্রে সক্রিয়৷ এই নেটওয়ার্ক ১৪ বছরের কম বয়সিদের গৃহকর্মী হিসেবে নিয়োগ দেয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে৷
ছবি: imago/epd
ঘরে আটকে রাখা নয়
বাংলাদেশের বিভাগীয় শহরগুলো অনেক সময় গৃহকর্মীদের ঘরের মধ্যে রেখে বাইরে থেকে বাড়িতে তালা দিয়ে রাখা হয়৷ ‘গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক’ এই কাজের তীব্র বিরোধীতা করেছে৷ গৃহকর্মীদের সুরক্ষা নীতির আওতায় এ ধরনের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে নেটওয়ার্কটি৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: TAUSEEF MUSTAFA/AFP/Getty Images
শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি
গৃহকর্মী বা গৃহশ্রমিকদের ‘শ্রমিক হিসেবে’ স্বীকৃতি ও শ্রম আইনে তাঁদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করারও দাবি জানিয়েছে ‘গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক’৷ ‘বাংলাদেশ লেবার অ্যাক্ট-২০০৬’-এ গৃহকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি৷
ছবি: picture-alliance/Godong
8 ছবি1 | 8
শ্রম নীতিমালার প্রয়োগ
‘গ্লোবাল ইউনিয়ন ফেডারেশন ইন্ডাস্ট্রিয়াল'-এর মনিকা কেম্পেরলে বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থার নীতিমালা মেনে চললে কয়েকটি সমস্যা একবারে সমাধান করা যায়৷ স্বল্প মজুরির দেশগুলিতে দৈনিক ১২, ১৪ এমনকি ১৬ ঘণ্টা কাজ করাও একান্ত স্বাভাবিক ব্যাপার৷ কিন্তু আইএলও-র বিধি অনুযায়ী, সপ্তাহে খুব বেশি হলে ৪৮ ঘণ্টা কাজ করা যাবে৷ মনিকা কেম্পেরলের মতে, ‘‘জীবন ধারণ করার মতো বেতন দিলে, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে৷ তরুণরাও কাজ পাবে৷''
ক্যাম্পেরলে মনে করেন, অবশ্য শুধু শ্রমিক ইউনিয়ন একা কাজে ন্যায়সঙ্গত শর্তাবলী তৈরি করতে পারবে না৷ অনেক দেশে তো শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠারই অনুমোদন দেওয়া হয় না৷ ভালো হয় যদি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা বা ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন-এর মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাতেও এই সব শ্রমনীতিমালা গ্রহণ করা হয়৷
আইএলও বিশেষজ্ঞ মোয়াজ্জেম মাহমুদ বলেন, ‘‘শুধু সুষ্ঠু কাজের পরিবেশের মাধ্যমেই প্রতিযোগিতায় দক্ষতা অর্জন করা যায়৷ শ্রমঅধিকারকে দুর্বল করে নয়৷''