1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চিকিৎসায় সোশ্যাল মিডিয়া

লিডিয়া হেলার / এসি২৭ অক্টোবর ২০১৩

সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যাবহার আজকাল ঘরে ঘরে৷ শুধু যোগাযোগ রাখাই নয়, কোন ওষুধ কোথায় পাওয়া যাচ্ছে, তা যাচাই করা, কিংবা ফেসবুকে রোগী ‘দেখা’: এভাবেই জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া ধীরে ধীরে নিজের স্থান করে নিচ্ছে৷

‘স্টপস্টকআউটস ডট অর্গ' এর স্ক্রিনশটছবি: stopstockouts.org

বিশ্ব স্বাস্থ্য এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম: বার্লিনে পঞ্চম ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য শীর্ষ বৈঠকে' সেটাই মূল আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ উদাহরণের কোনো অভাব নেই৷ আফ্রিকার কথাই ধরা যাক৷ ম্যালেরিয়ার রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে অনেক সময় দেখা যায়, হাসপাতালের স্টকে ম্যালেরিয়ার ওষুধ নেই৷ এনজিও-দের পরিভাষায় এই ধরনের পরিস্থিতিকে বলে ‘স্টকআউট'৷

২০০৯ সালেই আফ্রিকায় কর্মরত বিভিন্ন এনজিও একটি অভিযান শুরু করে, যার উদ্দেশ্য ছিল, বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ওষুধগুলোর স্টকআউটের হিসেব রাখা: অর্থাৎ সেই ওষুধগুলো কোথায় পাওয়া যাচ্ছে এবং কোথায় পাওয়া যাচ্ছে না, তার খবর রাখা৷ অভিযানের ভিত্তি ছিল সোশ্যাল মিডিয়ার ভাষায় যাকে বলা হয় ‘ক্রাউডম্যাপিং'৷ এই ক্রাউডম্যাপিং করে মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যে কেনিয়া, মালাউয়ি, উগান্ডা ও জাম্বিয়া, এই চারটি দেশে আড়াইশোর বেশি স্টকআউটের খবর পাওয়া গিয়েছিল৷

ছবি: Fotolia/Victoria

পদ্ধতিটা সহজ: স্বেচ্ছাসেবীরা গ্রামে-গ্রামে, শহরে-শহরে ঘুরে কোথায় কোন ওষুধের অনটন, তার খোঁজ করেছেন এবং সংগৃহীত তথ্য এসএমএস মারফৎ ‘স্টপস্টকআউটস ডট অর্গ', এই ঠিকানায় পাঠিয়ে দিয়েছেন৷ সেখানে এই সব খবরাখবর নিয়ে কোথায় কোন ওষুধের ঘাটতি কিংবা বাড়ন্ত, অথবা কোথায় কোন ওষুধ কী পরিমাণে মজুদ, তার একটি মানচিত্র তৈরি করা হয়েছে, যা ইন্টারনেটে দেখতে পাওয়া যায়৷

স্টকআউটের ‘‘রাজনীতি''

দাউদি ভেরে নাইরোবিতে উশাহিদি নামের একটি কোম্পানির হয়ে কাজ করেন৷ স্টপস্টকআউটস ডট অর্গ যে সফটওয়্যারের উপর ভিত্তি করে তৈরি, সেটা ডেভেলপ করায় সংশ্লিষ্ট ছিলেন দাউদি৷ বার্লিনের বিশ্ব স্বাস্থ্য শীর্ষবৈঠকে তিনি জানান, স্টপস্টকআউটস ডট অর্গ-এর আগে সরকার দাবি করতো, দেশের কোথাও কোনো ওষুধের অভাব নেই৷ এখন সেই ওষুধের থাকা-না-থাকার পরিসংখ্যান মানচিত্রের আকারে ইন্টারনেটে প্রকাশিত হওয়ায় সরকারের আগের সেই অজুহাত দেবার উপায় নেই৷

শুধু তাই নয়, সরকারকে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হয়েছে, আলোচনায় বসতে হয়েছে৷ ওষুধের স্টকআউট হচ্ছে কেন? সমস্যাটা কোথায়? অর্থসংস্থান? সরবরাহ কিংবা বণ্টন ব্যবস্থা নিয়ে কি কোনো গোলমাল আছে? সরকারের সঙ্গে এ সব বিষয়ে সরাসরি আলাপ-আলোচনা সম্ভব হয়েছে৷ এ ছাড়া সরকার নিজেই ক্রাউডম্যাপিং ভিত্তিক তথ্য থেকে জানতে পারছেন, ঠিক কোথায় কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত৷

হাইতি থেকে ফুকুশিমা: ক্রাউডম্যাপিং সর্বত্র

হাইতি-তে ২০১০ সালের বিধ্বংসী ভূমিকম্পের পর যে ইন্টারনেট সাইট-টি কোথায়, কোন স্থানে কী ধরনের সাহায্য দরকার, তার খবরাখবর দিয়েছিল, সেই সাইট-টিও তৈরি হয়েছিল উশাহিদি কোম্পানির সফটওয়্যার-কে ভিত্তি করে৷ হাইতি-র এই ‘ত্রাণচিত্র'-টির জন্য ভূমিকম্প-পীড়িত গ্রাম ও শহরগুলি থেকে মোট চল্লিশ হাজার পোস্টিং এসেছিল৷ করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা এবং ত্রাণকর্মীরা৷

ছবি: Global Polio Eradication Initiative

২০১১ সালে ফুকুশিমা বিপর্যয়ের পর সিনসাই.ইনফো ক্রাউডম্যাপিং সাইটটি ঠিক এ ভাবেই গোটা অঞ্চলে কোথায় তেজস্ক্রিয়তা কতোটা, তার তথ্য দিয়েছিল৷ তবে শুধু আপৎকালীন উপযোগিতাই নয়, মানুষজনকে বিশেষ বিশেষ রোগের সংক্রমণ সম্পর্কে সচেতন করে দেওয়াটাও ইন্টারনেটের মাধ্যমে সম্ভব৷ চীনের গুয়াংঝু প্রদেশে সমকামীদের এইডস-এর বিপদ সম্পর্কে সাবধান করে দেওয়ার জন্য এ ধরনের একটি ওয়েবসাইট চালানো হয়৷ অন্যান্য যৌন রোগ – যেমন সিফিলিসের ক্ষেত্রে যে সব গোষ্ঠী বিশেষভাবে ঝুঁকিতে থাকে, তাদের কাছে প্রয়োজনীয় তথ্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য ঢাক পিটিয়ে কিছু করার দরকার নেই: সংশ্লিষ্টরা নিজেরাই ওয়েবসাইটে গিয়ে নিজেদের প্রয়োজনীয় তথ্য বার করে নিতে পারেন৷ ইন্টারনেটের এটাই হল সবচেয়ে বড় সুবিধা৷

যেখানে সুবিধে, সেখানেই বিপদ

বিভিন্ন জরিপ অনুযায়ী, মিলেনিয়ামের আশেপাশে যাদের জন্ম, সেই প্রজন্মের শতকরা পঁচাত্তর ভাগ দিনে একাধিকবার ফেসবুক, টুইটার ও অন্যান্য নেটওয়ার্ক দেখে থাকে৷ অন্যদিকে ‘‘স্বাস্থ্য'' অথবা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলি সার্চ ইঞ্জিনগুলিতে যেসব বিষয়ে সবচেয়ে বেশি খোঁজখবর করা হয়, তাদের মধ্যে পড়ে৷ মুশকিল এই যে, ইন্টারনেটের মাধ্যমে যেমন জনসাধারণকে সচেতন কিংবা উৎসাহিত করা সম্ভব, তেমনই ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোনো ওষুধ কিংবা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অভিযানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধও গড়ে তোলা সম্ভব৷ ২০০৩ সালে নাইজেরিয়ায়, কিংবা আজও পাকিস্তানে পোলিও-র টিকার বিরুদ্ধে যে অভিযান চলেছে, তার মাধ্যমও অংশত ঐ ইন্টারনেট৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ