বিষাক্ত গুঁড়ো দুধ খেয়ে ৫৪ হাজার শিশু অসুস্থ
২৩ সেপ্টেম্বর ২০০৮এদিকে চীনের সরকারী বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, গত ডিসেম্বর মাস থেকেই গুঁড়ো দুধের ব্যাপারে ভোক্তারা অভিযোগ করলেও তা আমলে নেয়নি চীনা কোম্পানি৷
চীনে তৈরি গুঁড়ো দুধ ও তা দিয়ে তৈরি শিশুদের খাবারের বেশীরভাগ ক্রেতাই হচ্ছে উন্নয়নশীল বিশ্বের দেশগুলো৷ বিশেষ করে দাম কম হওয়ায় উন্নয়নশীল বিশ্বের মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত জনগন চীনা পণ্যের ওপর বেশী নির্ভরশীল৷ কিন্তু এসব দুধ ও শিশু খাবারে রাসায়নিক পদার্থ মেলামাইন পাওয়ার ঘটনায় গত কয়েকদিন ধরে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে এসব দেশে৷
তবে এ ঘটনায় চীন নিজেই সবচে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে৷ এ পর্যন্ত বিষাক্ত দুধ খেয়ে সেখানকার চার শিশুর মৃত্যু ঘটেছে৷ মোট ৫৪ হাজার শিশু অসুস্থ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে যাদের মধ্যে ১৩ হাজার শিশু এখনও হাসপাতালে ভর্তি৷ এছাড়া বিষাক্ত দুধ ও খাবার খেয়ে শতাধিক শিশুর কিডনীতে পাথর জমে যাওয়ার খবরও জানিয়েছেন চিকিত্সকরা৷
তবে অবাক ব্যাপার হচ্ছে গুঁড়ো দুধ খেয়ে বাচ্চাদের অসুস্থ হয়ে যাওয়ার খবর আরও অনেক আগেই জানতে পেরেছিলো সংশ্লিষ্ট একটি কোম্পানি৷ চীনের সরকারী টেলিভিশন জানিয়েছে, গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকেই সানলু গ্রুপ তাদের ভোক্তাদের কাছ থেকে খাবারে বিষাক্ত পদার্থ থাকার অভিযোগ পেয়ে আসছিলো৷ কিন্তু তারা গত ২রা আগস্ট এ ব্যাপারে সিজিয়াঝুয়াং এলাকার কর্মকর্তাদের অবহিত করে৷
চীনের মন্ত্রী পরিষদের এক তদন্ত কমিটির উদ্ধৃতি দিয়ে সরকারী টেলিভিশন জানায়, আট মাস ধরে সানলু গ্রুপ কোন পদক্ষেপ নেয়নি এবং সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্মকর্তাদেরও কিছু জানায়নি৷ এছাড়া ক্রেতাদের অভিযোগ পাওয়া সত্ত্বেও জুন মাসের আগ পর্যন্ত দুধ পরীক্ষা করে দেখেনি সানলু গ্রুপ৷ এক্ষেত্রে ওই এলাকার কর্মকর্তারাও তাদের উর্ধ্বতন মহলকে বিষয়টি জানাতে ঢিলেমি করেছে বলে তদন্ত কমিটি জানতে পেরেছে৷
গুঁড়ো দুধ কেলেঙ্কারির ঘটনায় এই প্রথম এ ব্যাপারে চীন সরকার কোন অবহেলার কথা স্বীকার করলো৷
এদিকে এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে চীন সরকার৷ চীনের কৃষি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে দুধ সংগ্রহ থেকে শুরু করে রপ্তানি পর্যন্ত সকল স্তরে কড়া নিয়ম মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছে৷ চীনা কৃষিমন্ত্রী সুন চংছাই এ ঘটনায় দায়ী ব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার কথা জানিয়েছে৷
এদিকে চীনের গুঁড়ো দুধ কেলেঙ্কারির প্রতিক্রিয়ায় আরও বেশ কয়েকটি দেশ চীনা পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে৷ ফিলিপিন চীন থেকে দুগ্ধজাত সকল পণ্য আমদানি বন্ধ ঘোষণা করেছে৷ অপরদিকে মালয়েশিয়া দুধ ছাড়াও চকলেট ও ক্যান্ডির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে৷