ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য ডেইলি স্টার'-এ প্রকাশিত খবর বলছে, আগামী বোরো মরসুমে গোল্ডেন রাইসের পরীক্ষামূলক চাষ শুরুর জন্য সরকারের কাছ থেকে অনুমতি পাওয়া গেছে৷
আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিনপিসের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা প্যাট্রিক মুর খবরটি টুইটারে শেয়ার করে লিখেছেন, ‘‘বাংলাদেশ এখন জিএম উন্নয়নের ক্ষেত্রে নেতা৷''
উন্নয়নশীল দেশের মানুষের ভিটামিন এ-র অভাব দূর করতে গোল্ডেন রাইস সহায়ক বলে মনে করা হয়৷
যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউস এবং গেটস ফাউন্ডেশন গোল্ডেন রাইসের সমর্থক৷ তাই এই ধানের উদ্ভাবকদের পুরস্কৃত করে হোয়াইট হাউস৷ আর এই ধানের গবেষণা এগিয়ে নিয়ে যেতে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে গেটস ফাউন্ডেশন৷
তবে পরিবেশ ও মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য গোল্ডেন রাইস ক্ষতিকর বলে মনে করে গ্রিনপিস৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি অ্যান্ড ফার্মাকোলজি বিভাগের শিক্ষক যোবায়ের আল-মাহমুদও জিএম খাবারের সমর্থক নন৷
তবে ডানিয়েল ওকাম্পো মনে করেন, গোল্ডেন রাইস চাষের ব্যাপারে কৃষকদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ কোনো সরকার কিংবা বহুজাতিক কোম্পানির কৃষকদের উপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া উচিত হবে না৷
বছরের প্রায় ছয়মাস চলনবিল পানিতে ডুবে থাকে৷ তবে শীতকালে শুকানোর পর সেই বিলের জমিতে বোরো আবাদ করেন কৃষকরা৷ কদিন আগে ধান ঘরে তুলেছেন তাঁরা৷ চলনবিলে ধান কাটার উৎসব নিয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছবি: DW/M. Mamunবাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিল চলনবিলে বোরো ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষক৷ গ্রামে ধান কাটায় এখনো আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার খুব একটা দেখা যায় না৷ ছবিটি সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বিল নাদুয়া থেকে তোলা৷
ছবি: DW/M. Mamunচলনবিলে ফসল কাটার মাঝে সকালের খাবার খাচ্ছেন কৃষকরা৷ সাধারণত সূর্য ওঠার আগে থেকেই এখানে ধান কাটা শুরু হয়৷ তাই কৃষকরা সকাল আর দুপুরের খাবার সঙ্গে নিয়ে আসেন৷ কাজের ফাঁকে মাঠেই সেরে ফেলেন খাবার পর্ব৷
ছবি: DW/M. Mamunচলনবিলের রাস্তাঘাট এখনো খুবই অনুন্নত৷ একটু বৃষ্টি হলেই হাঁটু কাদায় ভরে যায় কাঁচা সড়কগুলো৷ এ অঞ্চলে মাঠ থেকে ধান আনার জন্য তাই মহিষের গাড়ির কদর বেশি৷
ছবি: DW/M. Mamunচলনবিলের ভেতর থেকে মহিষের গাড়ি বোঝাই কাটা ধান নিয়ে বাড়ি ফিরছেন মজুররা৷ ফসল তোলার সময় এসব মজুররা ধান কাটার জন্য আসেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ ও রাজশাহীর গোদাগাড়ী অঞ্চল থেকে৷ সঙ্গে নিয়ে আসেন নিজেদের মহিষের গাড়িও৷ সাধারণত এক বিঘা জমির ধান কেটে কৃষকের বাড়ি পৌঁছে দিলে এসব মজুররা দেড়মন ধান পেয়ে থাকেন৷
ছবি: DW/M. Mamunচলনবিলে ধান বহনের জন্য মহিষের গাড়ি ব্যবহারের অন্যতম আরেকটি কারণ হলো এ বাহনটিতে অনেক বেশি মাল বোঝাই করা যায় এবং এতে কোনো জ্বালানি খরচ নাই৷ মোটের উপর পরিবেশবান্ধব এক বাহন এটি৷ অধিকন্তু কাঠের চাকা হওয়ায় যে-কোনো দুর্গম রাস্তাতেই চলতে সক্ষম এ বাহন৷
ছবি: DW/M. Mamunধানের মাঠ থেকে যে কৃষকদের বাড়ি অপেক্ষাকৃত কম দূরত্বে তাঁরা মাথায় করেই নিয়ে আসেন কাটা ধান৷
ছবি: DW/M. Mamunচলনবিলে ধান কাটার পর মাড়াই পর্বটা সম্পন্ন হয় বাড়ির আঙিনাতেই৷ এ কাজে বাড়ির পুরুষদের পাশাপাশি নারী সদস্যদের ভূমিকাও থাকে অনেক বেশি৷ আগে এ অঞ্চলে গরু কিংবা হাত দিয়েই মাড়াই করা হতো৷ কিন্তু বর্তমানে স্থানীয় পর্যায়ে তৈরি যন্ত্র দিয়ে ফসল মাড়াই করা হয়৷
ছবি: DW/M. Mamunমাড়াই শেষে ধান থেকে ময়লা সরাচ্ছেন চলনবিলের গৃহিনীরা৷ মাঠ থেকে ধান কেটে আনার পর চাল তৈরি পর্যন্ত সবকটি পর্যায়েই নারী সদস্যদের ভূমিকা থাকে বেশি৷
ছবি: DW/M. Mamunধান মাড়াই শেষে সিদ্ধ করছেন চলনবিলের গৃহিনীরা৷ এ কাজটিও মূলত বর্তায় গৃহিনীদের উপরই৷ ধান সিদ্ধ করার কাজে ব্যবহৃত জ্বালানিও আসে ধান থেকেই৷ এক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় ধানের খড় কিংবা তুষ৷
ছবি: DW/M. Mamunসবশেষে ধান ভাঙানোর কাজ চলছে চলনবিলের একটি বাড়িতে৷ ফসল কাটার মৌসুমে ধান ভাঙানোর ভ্রাম্যমাণ কল নিয়ে বাড়িতেই হাজির হন অনেকে৷ এক মন ধান ভাঙাতে কৃষকদের গুনতে হয় ২০-২৫ টাকা৷
ছবি: DW/M. Mamun
সংকলন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ
‘গোল্ডেন রাইস' – ভালো, না খারাপ? আপনার কী মনে হয়? জানিয়ে দিন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷