1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিস্ময়কর জিব্রা মাছে আলো দেখছেন গবেষকরা

২৫ জানুয়ারি ২০২২

জার্মানিতে গবেষকরা জিব্রা মাছের মস্তিষ্ক ও হৃদযন্ত্রের ক্ষত সারিয়ে নেয়ার ক্ষমতা দেখে বিস্মিত হয়েছেন৷ তারা এই গবেষণার ফল মানবশরীরে ব্যবহারের উপায় খুঁজছেন৷

ছবি: Anka/picture alliance

জিব্রা ফিশ নামে পরিচিত এই মাছগুলোর নিজেদের সারিয়ে নেয়ার অনন্য ক্ষমতা আছে৷ জার্মানির মিউনিখের হেলমহলৎস সেন্টারের একটি পরীক্ষাগারে এখন এদের বাস৷ সেখানকার গবেষক জোভিকা নিনকোভিচ বলেন, ‘‘আমরা একসঙ্গে অনেক মাছ সাধারণ পরিবেশে দীর্ঘস্থায়ীভাবে রাখতে পারি৷ পানির গুণাগুণ ও খাবারের পরিমাণ আমরা নিয়ন্ত্রণ করি৷ এতে টেকসই ফল পাওয়া যায়৷ তারওপর প্রতিটি জোড়া আমাদের একশতের বেশি ডিম দেয় এবং এতে প্রজননও খুব ভালো হচ্ছে৷’’

প্রাণীরা মস্তিষ্কের ক্ষত কেমন করে সারায়, তা নিয়ে গবেষণা করছেন এই অনুজীব বিজ্ঞানী৷ গবেষণায় যেসব প্রাণীদের তিনি ব্যবহার করেন তাদের প্রথমে চেতনানাশক দেন তিনি৷ এরপর এদের মস্তিষ্কে খানিকটা ক্ষত তৈরি করেন এবং দেখেন কেমন করে তারা সেরে ওঠে৷

জোভিকার ভাষায়, ‘‘ক্ষত তৈরি হওয়া মানে মস্তিষ্কে কোষের মৃত্যু৷ স্ট্রোক বা ট্রমার কারণে এমনটি হতে পারে৷ আমাদের লক্ষ্য, এই কোষগুলোকে প্রতিস্থাপন করা৷ মাছ তা নিজে নিজে করে৷ ক্ষতিগ্রস্ত নিউরনগুলো মরে যায়৷ কিন্তু মাছের স্টেম কোষ এই নিউরনগুলোকে পুরোপরি প্রতিস্থাপন করে৷ নতুন কোষ তৈরি করে, যা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোকে সারিয়ে তোলে৷’’

জিব্রা মাছের ক্ষমতা দেখে বিস্মিত গবেষকরা

04:40

This browser does not support the video element.

বিভক্ত না হয়েই স্টেম কোষ সরাসরি স্নায়ু কোষে রূপান্তরিত হয়৷ মানবশরীরেও এই গবেষণার ফল কখনো কাজে লাগানো যাবে বলে মনে করেন গবেষকরা৷ জিব্রা মাছের হৃদযন্ত্রেরও নিজে নিজে সেরে ওঠার ক্ষমতা আছে৷ তবে এটা কাজ করে ভিন্নভাবে৷ উল্ম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক্সের অধ্যাপক গিলবার্ট ভাইডিঙ্গার এই পদ্ধতি ব্যাখ্যার একটি অনুজৈবিক প্রক্রিয়া বের করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘জিব্রা মাছের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল, হৃৎপিণ্ডের মাংসপেশীর ক্ষতিগ্রস্ত সব কোষই এরা প্রতিস্থাপন করতে পারে৷ সাধারণত মানুষ কিংবা অন্য প্রাণীদের পূর্ণাঙ্গ টিস্যুর স্টেম কোষ নতুন কোষ তৈরি করে৷ কিন্তু জিব্রা মাছের ক্ষেত্রে হৃৎপিণ্ডের মাংসপেশীর পূর্ণাঙ্গ কোষগুলোই ভাগ হয়ে নতুন কোষ তৈরি করে৷ সাধারণত এমন কোষগুলো অন্য প্রাণীদের ক্ষেত্রে বিভক্ত হয় না৷’’

ভাইডিঙ্গার ও তার দল আরো দেখলেন যে, সিগনাল প্রোটিনগুলো ক্ষতের সীমানায় পেশীকোষগুলোকে অধিক হারে ভাগ করতে কাজ করছে৷ তাই নির্দিষ্ট হারে কোষের পূণর্জন্ম প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছেন তারা৷ কিন্তু গবেষণালব্ধ এই জ্ঞান কি মানব শরীরেও ব্যবহার করা সম্ভব?

‘‘মাছ ও মানুষ উভয়ই একই গোষ্ঠীর, অর্থাৎ মেরুদণ্ডী প্রাণী৷ তাই আমাদের শারীরিক কাঠামোয় অনেক সাদৃশ্য রয়েছে৷ আমাদের কোষগুলোও প্রায় এক ধরনের৷ তাই জিব্রা মাছ ও মানুষের হৃৎপিণ্ডের পেশীগুলোও একই ধরনের কোষে তৈরি৷ মানবশরীর ও মাছের আশি ভাগ জিন ও কোষে মিল আিচে৷ এখন পর্যন্ত আমরা জানি যে, হৃৎপিণ্ডের কোষ প্রতিস্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় মাচের জিনগুলো মানবশরীরেও আছে৷ পার্থক্য হল, ক্ষত তৈরি হলে মাছের কোষগুলো প্রতিস্থাপনে সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং মানুষের কোষগুলো নীরব থাকে,’’ বলেন তিনি৷ 

প্রায় ২০ বছরের গবেষণায় এই বিস্ময়কর ছোট মাছগুলো এখন আলোর পথ দেখাচ্ছে৷ তবে এদের সব গল্প আজও অজানা৷

ডির্ক বেপলার/জেডএ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ