1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিহারে রাহুলের ভোট-যাত্রা, পাল্টা চ্যালেঞ্জ নির্বাচন কমিশনের

১৮ আগস্ট ২০২৫

বিহারে ১৬ দিনের ভোট অধিকার যাত্রা শুরু করলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। একই দিনে সাংবাদিক সম্মেলন করলো নির্বাচন কমিশন।

সংসদে বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী
রাহুল গান্ধীছবি: Rahul Singh

১৬ দিনে এক হাজার তিনশ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করবেন বলে জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা তথা সংসদে বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। বিহারের মোট ২০টি জেলার মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বিহার নির্বাচনের আগে রাহুলের এই ভোট অধিকার যাত্রা রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

চলতি বছরের শেষ পর্বে বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধন এবং পরিমার্জনের কাজে হাত দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যার জেরে ইতিমধ্যেই প্রায় ৬৫ লাখ ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ গেছে। নির্বাচন কমিশনের দাবি নিবিড় ভোটার তালিকা সংশোধন বা স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (এসআইআর) করা হচ্ছে ভোটার তালিকার।

নির্বাচন কমিশনের এই এসআইআর নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। কংগ্রেসসহ অধিকাংশ বিরোধী দলের অভিযোগ, রিভিশনের নামে ন্যায্য ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থও হয়েছে তারা। সুপ্রিম কোর্টে দুই বিচারপতির বেঞ্চ এর মধ্যেই একটি অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছে। আগামী সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্ট আরো কিছু নির্দেশ দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে রাহুল গান্ধী আরো এক ধাপ উপরে গিয়ে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সরাসরি 'ভোট চুরি'র অভিযোগ এনেছেন। বেশ কিছু নথি দেখিয়ে তার দাবি, নির্বাচন কমিশনের চোখের সামনে ভুয়া ভোটারদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শাসক দল ভোটে জেতার জন্য এই কাজ করেছে এবং নির্বাচন কমিশন তা হতে দিয়েছে। ফলে রাহুল গান্ধীর অভিযোগ, নির্বাচন কমিশন একদিকে বিহারে ন্যায্য ভোটারদের নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে অন্যদিকে অন্য রাজ্যে ভুয়া ভোটারদের নাম তালিকায় রেখে দেওয়া হয়েছে।

রাহুল গান্ধীর এই বক্তব্যের জবাব দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। রোববার নির্বাচন কমিশনের সম্পূর্ণ বেঞ্চ একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে রাহুলকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। বলা হয়েছে, এক সপ্তাহের মধ্যে রাহুলকে তার বক্তব্যের তথ্য প্রমাণ জমা দিতে হবে। তিনি তা দিতে না পারলে ধরে নিতে হবে যে, তার কাছে প্রমাণ নেই। 

মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ''সকলে যাতে ভোট দিতে পারেন, সেটা দেখাই নির্বাচন কমিশনের কর্তব্য এবং কমিশন সেই কাজটিই করছে।''

রাহুল গান্ধীর বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুরও। রাহুলের পাল্টা তিনিও একটি লিস্ট তুলে ধরেছেন। তার অভিযোগ, রাহুল গান্ধী যে লোকসভা কেন্দ্র থেকে জিতেছেন, সেই রায়বেরিলিতে দুই লাখ ৬৯ হাজার ভুটো ভোটার বা সন্দেহভাজন ভোটার আছেন।

অনুরাগের এই মন্তব্য নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন সাংবাদিক রবিশ কুমার। রবিশের বক্তব্য, ''রাহুল যে ভোট চুরির অভিযোগ তুলেছেন, অনুরাগ কার্যত সেই অভিযোগকেই সমর্থন করেছেন। নির্বাচন কমিশন সাংবাদিক সম্মেলন করে রাহুলকে চ্যালেঞ্জ করেছে, অথচ অনুরাগকে তথ্যপ্রমাণ দিতে বলেনি। এটা এক ধরনের দ্বিচারিতা।'' 

এসআইআর নিয়ে সামাজিক এবং আইনি লড়াই শুরু করেছেন যোগেন্দ্র যাদব। ভোট বিশ্লেষক যোগেন্দ্র জানিয়েছেন, ''বিহারে এসআইআর এর নামে প্রহসন হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন যাদের মৃত বলে তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দিয়েছে, তেমন মানুষদের আমি সুপ্রিম কোর্টে সশরীরে হাজির করেছি। আদালতকে ধন্যবাদ, অন্তর্বর্তী আদেশে তারা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছে, এর ফলে সুবিধা হবে নাম বাদ চলে যাওয়া ভোটারদের।'' যোগেশের মতে, যেভাবে নির্বাচন কমিশন এসআইআর করার চেষ্টা করছে, তা অসাংবিধানিক। 

সাংবাদিক পরঞ্জয় গুহঠাকুরতা রোববার নির্বাচন কমিশনের সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তিনি সরাসরি কমিশনকে এবিষয়ে প্রশ্ন করেন। জানতে চান, কেন ভোটার তালিকা সংশোধনের ক্ষেত্রে এত তাড়াহুড়ো করছে কমিশন। কমিশনের জবাব, তালিকা সংশোধন করা তাদের কাজের মধ্যে পড়ে। 

বিজেপি নেতা সৌরভ শিকদারের বক্তব্য, ''বিহার পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে লাখ লাখ ভুটো ভোটার ভোটার লিস্টে আছে। ভোটার লিস্টে নাম তুলে ফেলেছে অনুপ্রবেশকারীরা। এই ভোটারদের চিহ্নিত করে বাদ দেওয়ার জন্যই এসআইআর। বিরোধীরা ভোট হারানোর ভয় পাচ্ছে।'' রাহুল গান্ধীকে চ্যালেঞ্জ করে সৌরভের বক্তব্য, যদি সত্যিই তার কাছে প্রমাণ থাকে, তাহলে সেই তথ্য কমিশনের হাতে কেন তুলে দিচ্ছেন না তিনি।

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ