বন্ধুকে বিয়ে করলেন জাপানের রাজকন্যা মাকো। রাজপরিবারের বাইরে বিয়ে করার জন্য তার রাজবাড়ির আভিজাত্য নষ্ট হলো।
বিজ্ঞাপন
দীর্ঘদিনের সহপাঠী এবং বন্ধু কেই কোমুরোকে বিয়ে করলেন জাপানের রাজকন্যা মাকো। মঙ্গলবার সকালে রাজপরিবার ত্যাগ করে বিয়ে করতে গেলেন তিনি। রাজপরিবারে ফেরার রাস্তা চিরতরে বন্ধ হয়ে গেল। কিন্তু তা নিয়ে এতটুকু বিচলিত নন মাকো। বাড়ি ছাড়ার আগে বাবা, মা-কে একাধিকবার বো করেছেন তিনি। জড়িয়ে ধরেছেন বোন কিকোকে। তারপর গাড়ি করে বিয়ে করতে গেছেন নিজের দীর্ঘদিনের বন্ধুকে।
রাজপরিবারে সাধারণ মানুষদের বিয়ে
একদিন রাজপুত্র ঘোড়া ছুটিয়ে এসে রানি করে নিয়ে যাবে তাকে – এমন স্বপ্ন না দেখা মেয়ে কমই আছে পৃথিবীতে৷ আবার রাজকন্যার সঙ্গে আংটিবদলের স্বপ্ন দেখেনি খুব সাধারণ ঘরের এমন ছেলেও বিরল৷ অনেকেরই কিন্তু এই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে...
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Kneffel
মডেল থেকে রাজবধূ
সোফিয়া হেল্কভিস্ট ছিলেন মডেল৷ রিয়্যালিটি শো-তে প্রতিযোগিতাতেও নেমেছিলেন বড় কিছু হওয়ার বাসনা পূরণ করতে৷ ২০১৫ সালে সুইডেনের যুবরাজ কার্ল ফিলিপকে বিয়ে করে তিনি এখন রাজপরিবারের সদস্য৷
ছবি: picture-alliance/dpa
গ্রিসের রাজপুত্রের ঘরে ভিন দেশের মেয়ে
টাটিয়ানা ব্লাটনিকের জন্ম ভেনিজুয়েলায়৷ বড় হয়েছেন সুইজারল্যান্ডে৷ ইভেন্ট প্ল্যানার তাতিয়ানার ২০১০ সালে বিয়ে হয় গ্রিসের ক্ষমতাচ্যুত রাজ কনস্টান্টিনের ছেলে প্রিন্স নিকোলাসের সঙ্গে৷
ছবি: picture-alliance/abaca/G. Mousse
টেনিস কোর্টে পরিচয়, তারপর...
মিচিকো শোডাও সাধারণ ঘরের মেয়ে৷ টেনিস খেলতে গিয়ে পরিচয় হয় জাপানের যুবরাজ আকিহিতোর সঙ্গে৷ ১৯৫৯ সালে বিয়ে করেন তাঁরা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Pana
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠি থেকে চিরসঙ্গী
ব্রিটেনের উচ্চবিত্ত পরিবারের মেয়ে কেট মিডলটন ছিলেন সেন্ট অ্যান্ড্রুস বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী৷ ব্রিটেনের যুবরাজ উইলিয়ামসও পড়তেন সেখানে৷ সেখানেই তাঁদের পরিচয় এবং ২০১১ সালে সারা দুনিয়ায় সাড়া জাগিয়ে বিয়ে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Kneffel
ফিলিস্তিনি তরুণী এখন রাজপরিবারে
ফিলিস্তিনি বাবা-মায়ের সন্তান রানিয়া আল-ইয়াসিনের জন্ম কুয়েতে৷ এক ডিনার পার্টিতে জর্ডানের ক্রাউন প্রিন্স আব্দুল্লাহর সঙ্গে পরিচয়৷ বিয়ে ১৯৯৩ সালে৷ ঠিক ছয় বছর পর সিংহাসনে বসেন আব্দুল্লাহ, সেই সুবাদে রানিয়া হয়ে যান সত্যিকারের রানি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. van Katwijk
এক অলিম্পিক সাঁতারুর গল্প
শার্লিন লিনেট উইটসটক ছিলেন সাঁতারু৷ দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে অলিম্পিকেও অংশ নিয়েছেন৷ ২০১১ সালে মোনাকোর রাজপুত্র দ্বিতীয় অ্যালবার্টকে বিয়ে করেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Monaco Princely Palace
প্রশিক্ষক যখন স্বামী
রাজপরিবারের সন্তানদের নানা কিছু শিখতে হয়৷ তাই পার্সোনাল ট্রেনার থাকাটা জরুরি৷ ড্যানিয়েল ওয়েস্টলিং প্রশিক্ষকের দায়িত্ব নিয়েই সুইডেনের রাজপ্রাসাদে গিয়েছিলেন ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়ার কাছে৷ আর দূরে সরা হয়নি৷ ২০১০ সালে বেশ ধুমধাম করে বিয়ে হয় তাঁদের৷
ছবি: picture-alliance/IBL Schweden/J. Ekströmer
পেমার প্রেমে ভুটানের রাজা
ভুটানের পেমা জেতসুনও খুব সাধারণ ঘরের মেয়ে৷ ঘটনাক্রমে পরিচয় রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুকের সঙ্গে৷ তারপর ২০১১ সালে বিয়ে৷
ছবি: picture-alliance/PPE/Royal House/K. Nidup
সরকারের অনুমতি নিয়ে বিয়ে
সোনিয়া হ্যারাল্ডসেন জানতেন নরওয়ের ক্রাউন প্রিন্সের বউ হওয়া কঠিন৷ তবুও দীর্ঘদিন গোপনে প্রেম করেছেন ক্রাউন প্রিন্স হ্যারাল্ডের সঙ্গে৷ সোনিয়াকে পেয়ে হ্যারাল্ড তো প্রেমে দিওয়ানা৷ একসময় পরিবারকে জানিয়ে দিলেন, বিয়ে যদি করতে হয় সোনিয়াকেই করবেন৷ রাজা ওলাফ পড়ে গেলেন মহাবিপদে৷ এমন বিয়ের যে নিয়ম নেই! শেষ পর্যন্ত সরকারের অনুমতি নিলেন রাজা ওলাফ এবং ১৯৬৮ সালে বিয়ে হলো হ্যারাল্ড-সোনিয়ার৷
ছবি: Getty Images/AFP
সাংবাদিক যখন অন্দরমহলে
স্পেনের সাংবাদিক এবং সংবাদ পাঠিকা লেতিৎসিয়া ওরটিস রোচোসোলানোর সঙ্গে যুবরাজ ফিলিপের পরিচয় কীভাবে তা কি বেশি গুরুত্বপূর্ণ? আসল কথা হলো ফিলিপ সাংবাদিককেই বিয়ে করেন ২০০৪ সালে৷ ২০১৪ সাল থেকে তিনি স্পেনের রাজা আর সাবেক সাংবাদিক তাঁর রানি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Ballestos
রাজপুত্র পেলেন পাবে
২০০০ সাল৷ অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে তখন চলছে অলিম্পিক৷ তখনই মেরি এলিজাবেথ এক পাবে গিয়ে পেয়েছিলেন সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্স ফ্রেডরিকের দেখা৷ প্রেমের শুরু তখনই৷ তবে পরিণয় পরের অলিম্পিকে, অর্থাৎ অর্থাৎ ২০০৪ সালে৷
ছবি: Getty Images/I. Waldie
11 ছবি1 | 11
এখানেই বিপ্লব থেমে থাকেনি। রাজপরিবারের রীতি মেনে বিয়ে করেননি মাকো। অর্থ নেননি রাজপরিবারের। জাপানের রাজপরিবারের নিয়ম হলো, বাড়ির কোনো মেয়ে সাধারণ মানুষকে বিয়ে করলে তাকে রাজপরিবার ছেড়ে যেতে হয়। রাজপুত্রের ক্ষেত্রে অবশ্য সে নিয়ম খাটে না। রাজকন্যা চলে গেলে তাকে অর্থসাহায্য করা হয়। যা দিয়ে তার পরবর্তী জীবন কাটবে। মাকো সেই অর্থ নিতে অস্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তার বর অ্যামেরিকায় আইনজীবী। বিয়ের পর তিনি বরের সঙ্গে অ্যামেরিকায় বসবাস করবেন আর পাঁচজন সাধারণ মানুষের মতো।
বেশ কিছুদিন মাকো এবং কোমুরোকে নিয়ে আলোচনা চলছে জাপানের সংবাদমাধ্যমে। বিয়ের জন্য অ্যামেরিকা থেকে জাপানে ফিরেছেন কোমুরো। তার পনিটেল দেখে জাপানের গণমাধ্যম সমালোচনাও করেছে। রাজকন্যার স্বামীর পনিটেল বিতর্ক তৈরি করেছে। কিন্তু মাকো এসব কোনো কিছুতেই মাথা ঘামাননি।
জাপানের একাংশের মিডিয়া আবার প্রিন্স হ্যারি এবং মেগান ম্যার্কেলের সঙ্গে তুলনা করতে শুরু করেছে মাকো-কোমুরোর। জাপানের হ্যারি-মেগান বলা হচ্ছে তাদের।