‘বিয়ে' নামের ‘দিল্লি কা লাড্ডু' খেতেই চেয়েছিলেন তিনি৷ কিন্তু যেদিন বিয়ে, ঠিক সেদিনই কী যে হলো, পালিয়ে গেলেন ঘর থেকে৷ একবার নয়, দু-দু'বার! জার্মানির এই পলায়নপর বর মহোদয় তাই এখন সংবাদ শিরোনামে৷
বিজ্ঞাপন
কথায় আছে, বিয়ে নাকি ‘দিল্লি কা লাড্ডু', এ লাড্ডু যে না খায় সে তো আফসোস করেই, যে খায় সে-ও নাকি আফসোস করে৷ সুখি দম্পতিরা এ কথা মানেন না, হেসে উড়িয়ে দেন৷
কিন্তু জার্মানির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাইনফেল্ডেনের এক তরুণ বোধহয় সংশয়েই ছিলেন৷ হয়ত বিয়ে নিয়ে শেষ মুহূর্তে একটা ভয়ও জন্ম নিয়েছিল তাঁর মনে৷ তাই গত বৃহস্পতিবার হঠাৎ করেই তিনি ঘর ছেড়ে উধাও৷ অথচ সেদিনই বিয়ে৷ বরের বোন অনেক খুঁজেও ভাইকে না পেয়ে পুলিশে জানালেন৷ সুইজারল্যান্ড সীমান্তের কাছের ছোট্ট শহরটিতে শুরু হলো পালিয়ে যাওয়া বরকে খুঁজে বের করার পুলিশি অভিযান৷
স্বামী পাচ্ছেন না? কিনে নিন!
বিয়ে রসিকতার ব্যাপার নয়৷ কিন্তু সুজানে হাইনৎস এমন বিষয় নিয়ে রসিকতাই করে চলেছেন৷ বিয়ে বিয়ে খেলার একটা প্রকল্পের কাজ শুরু করে দেখছেন এই পৃথিবীতে তাঁর অনেক সমব্যথী৷ ছবিঘরে থাকছে এই নিয়েই মজার এক গল্প৷
ছবি: Suzanne Heintz
যেন এক আদর্শ পরিবার
এক সময় সবাইকেই একটা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় – ‘বিয়ে কবে করছো?’ এ প্রশ্ন যে কত অস্বস্তিকর, যাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয় তাঁর মনে প্রশ্নটি যে কত চাপ তৈরি করে, তা কেউ ভাবেনই না৷ এ চাপ থেকে মুক্তি পেতে ফটোগ্রাফার সুজানে হাইনৎস কাপড়ের দোকানের পোশাক পরানো কিছু মূর্তি, অর্থাৎ ম্যানেকুইন্স দিয়ে সাজিয়েছেন নিজের পরিবার৷ স্বামী চঙ্কি, মেয়ে মেরি মার্গারেটের সঙ্গে তাঁর ছবিটি দেখুন৷ যেন সুখী পরিবার, তাই না!
ছবি: Suzanne Heintz
ছবি দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো
এভাবে নকল পরিবার সাজিয়ে, ছবি তুলে, সেই ছবি দিয়ে বানানো কার্ডের মাধ্যমে প্রিয়জনদের বিশেষ বিশেষ দিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে রীতিমতো সাড়া জাগিয়েছেন সুজানে হাইনৎস৷ এভাবে বিয়ে নিয়ে সবার সঙ্গে মজা করার প্রকল্পটির নাম দিয়েছেন ‘প্লেয়িং হাউস প্রজেক্ট : লাইফ ওয়ান্স রিমুভড’৷
ছবি: Suzanne Heintz
সপরিবারে প্যারিস সফর
চঙ্কি আর মার্গারেটকে কিনে এনে নিজের পরিবার গড়েছিলেন সুজানে৷ এক সময় মনে হলো, পরিবার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে বেড়াতে যাওয়া দরকার৷ প্রথম সফরটা হলো প্যারিসে৷ সেখানে আইফেল টাওয়ার থেকে শুরু করে যত দর্শনীয় স্থান আছে সব জায়গায় গিয়েছেন সুজানে৷ চঙ্কি আর মার্গারেটের সঙ্গে এমন সব ছবি তুলেছেন, যেন তাঁরা সত্যি সত্যিই সুখী পরিবার৷ এই ছবিটি তোলা হয়েছিল নোত্র দাম-এর সামনে৷
ছবি: Suzanne Heintz
বংশীবাদক
প্যারিস সফরটা ছিল দারুণ৷ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে সুজানে বললেন, ‘‘আমি ছিলাম প্যারিসের বংশীবাদক৷’’ তাঁর পেছনে শত শত কৌতূহলী মানুষের ভিড় জমেছিল – এটা বোঝাতেই এমন বলা৷ ‘প্লেয়িং হাউস প্রজেক্ট: লাইফ ওয়ান্স রিমুভড’ প্রকল্পটি ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে৷ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ বিয়ে নিয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা সুজানেকে জানাচ্ছেন তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে৷
ছবি: Suzanne Heintz
পুরুষদেরও একই হাল
সুজানে হাইনৎস বললেন, ‘‘‘প্লেয়িং হাউস’ শুধু মেয়েদের জন্য নয়৷’’ বিয়ে হচ্ছেনা কেন, কবে হবে – এ সব প্রশ্ন একটা সময় পুরুষদেরও শুনতে হয়৷ তাই এখন পুরুষরাও সুজানেকে জানাচ্ছেন তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা৷
ছবি: Suzanne Heintz
এবার চলচ্চিত্র নির্মাণ
ঘুরে ঘুরে ছবি তুলে আনন্দ দেয়া-নেয়ার মধ্যেই আর বিষয়টিকে সীমাবদ্ধ রাখছেন না সুজানে হাইনৎস৷ ভাবছেন, একটা চলচ্চিত্র নির্মাণ করবেন৷ ছবিতে থাকবে তিনটি পর্ব৷ প্রথম পর্বে প্যারিস সফরের মজার সব অভিজ্ঞতা, দ্বিতীয় পর্বে উঠে আসবে বিয়ে সম্পর্কে তাঁর পরিবর্তিত ভাবনা আর শেষে থাকবে বিয়ে নিয়ে স্কুলপড়ুয়া শিশুদের মনের কথা৷ এমন ছবি কে না দেখতে চাইবে, বলুন?
ছবি: Suzanne Heintz
6 ছবি1 | 6
রাতে বিয়ে উপলক্ষ্যে আগত অতিথিরা হঠাৎ আবিষ্কার করলেন পাত্র ঘরেই লুকিয়ে রয়েছেন৷ শুরু হলো বিয়ের অনুষ্ঠানের চূড়ান্ত প্রস্তুতি৷ সবাই ভেবেছিলেন, একবার যখন ফিরেছে পাত্রকে নিয়ে আর চিন্তার কিছু নেই৷ কিন্তু সবাইকে ভুল প্রমাণ করে তিনি আবার উধাও! আবার পুলিশ ডাকা হলো৷ কিন্তু এবার আর অভিযান শুরু করতে হয়নি৷ তার আগেইবর ফোন করে জানালেন, তিনি কাছাকাছিই আছেন এবং শিগগিরই ঘরে ফিরবেন৷
বর তারপর আর পালাননি, তবে দু'বার কেন পালিয়েছিলেন আর শেষ পর্যন্ত বিয়েটা হয়েছে কিনা তা আর জানা যায়নি৷