1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শরণার্থী দিবস

১৯ জুন ২০১২

তৃতীয় বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশ থেকেই প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ পাড়ি দিচ্ছে বিদেশে, অজানার উদ্দেশ্যে৷ এসব দেশের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে আফগানিস্তান৷ আফগানিস্তান থেকে বেশির ভাগ মানুষ পাড়ি দিচ্ছে ইউরোপের উদ্দেশ্যে৷

ছবি: dapd

তুরস্ক এবং গ্রিসের মধ্যে এগেয়ান সমুদ্র৷ পাঁচজন আফগান একটি ছোট নৌকায় দীরে ধীরে বৈঠা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে৷ জীবন বাঁচাতে তারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে৷ যারা তাদের পাচার করেছে তারা জানিয়েছে যে, ছয় ঘণ্টা নৌকা পাড়ি দিলেই তারা পৌঁছাবে গ্রিসে৷ আর একবার গ্রিসে পা রাখার মানেই ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশ৷ তবে যখনই নৌকা গ্রিসের তীরে এসে পৌঁছেছে, তখনই তাদের নৌকা উদ্দেশ্য করে গুলি ছোঁড়া হয়েছে৷

আহমেদ করিম জানালো, ‘‘সীমান্ত প্রহরী আমাদের সঙ্গে সঙ্গেই গ্রেপ্তার করে৷ আমাদের বড় একটি জাহাজে তোলা হয়৷ এর কয়েক ঘণ্টা পর তুরস্কের একটি নির্জন দ্বীপের কাছে আমাদের নামিয়ে দেয়া হয়৷ আমাদের পানিতেই নামিয়ে দেয়া হয়, ডাঙায় নয়৷''

যখন এই ঘটনা ঘটে তখন করিমের বয়স ২৩ বছর৷ তাদের পরে একটি তুর্কি জেলে উদ্ধার করে৷ তাদের পাঠানো হয় ইস্তানবুলে৷ কয়েক সপ্তাহ পর তাদের আবার পাঠানোর চেষ্টা করা হয় পশ্চিমের দেশগুলোতে৷

হাজার হাজার আফগান সন্ত্রাস, নিরাপত্তাহীনতা এবং অন্ধকার ভবিষ্যতের হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে যাচ্ছেছবি: AP

এভাবেই প্রতি বছর করিমের মতো হাজার হাজার আফগান সন্ত্রাস, নিরাপত্তাহীনতা এবং অন্ধকার ভবিষ্যতের হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে যাচ্ছে৷ তারা বিশ্বাস করছে আদম পাচারকারীদের৷ যারা তাদের মিথ্যে কথা বলে ইউরোপে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে৷ স্টেফান টেলোকেন জাতিসংঘের শরণার্থী দপ্তরে কাজ করছেন৷ তিনি রয়েছেন জার্মান বিভাগে৷ তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের এখানে মানুষদের নিয়ে কাজ হয় না যারা শণার্থীদের সাহায্য করতে চায়৷ বরং এর জন্য বিশাল মূল্য দিতে হয়৷ প্রতি বছরই আমরা শুনি যে শণার্থীরা মারা গেছে বা যাচ্ছে৷ তাদের কীভাবে বিভিন্ন নৌকায় বা কন্টেইনারে পাচার করা হয়েছে বা হচ্ছে৷ ভয়ঙ্কর সমুদ্র তারা কীভাবে পাড়ি দিয়েছে৷ অথবা সমুদ্রে তাদের কীভাবে নিঃসঙ্গ অবস্থায় ভয়ঙ্কর পরিস্থিতে ছেড়ে দিয়ে আসা হয়েছে৷''

যে সব আফগান অস্ট্রেলিয়ায় শরণার্থী হিসেবে গেছে তারা পাকিস্তান, মালয়শিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া হয়ে তারপর অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে পৌঁছেছে৷ আর আহমেদ করিমের মতো যারা ইউরোপে আসতে চায়, তাদের পাড়ি দিতে হয় ইরান, তুরস্ক এবং গ্রিস৷ অনেক আফগানই টাকা-পয়সার অভাবে ধাপে ধাপে গন্তব্যস্থলে পৌঁছায়৷ অবৈধভাবে ইউরোপে আসতে প্রয়োজন প্রায় ১০ হাজার ইউরো৷ করিম শুধুমাত্র ইরান পর্যন্ত আসার জন্য টাকা দিতে পেরেছিল৷ সেখানে সে কাজ করে বাকি টাকা যোগাড় করেছিল৷ তিনি জানান, ‘‘ইরানে যখনই সবাই জানবে যে তুমি অবৈধ আফগান তখনই শুরু হবে অত্যন্ত নিম্ন পারিশ্রমিকে কাজ করিয়ে নেয়ার প্রতিযোগিতা৷ মানুষ হিসেবে কখনোই তোমাকে গণ্য করা হবে না৷''

ছবি: EPA/Dai Kurokawa/picture alliance/dpa

ইরানে বর্তমানে বসবাস করছে প্রায় এক লক্ষ আফগান৷ অনেকেরই গন্তব্যস্থল ইউরোপ৷ করমি প্রায় তিন বছর ইরানে বিভিন্ন জায়গায় ছিল৷ যখনই যে কাজের সুযোগ করিমের কাছে এসেছে সঙ্গে সঙ্গেই সে তা করেছে৷ কারণ তার অর্থের প্রয়োজন ছিল৷ শেষ পর্যন্ত সে তুরস্ক পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছে৷ প্রায় এক বছর তুরস্কে অবৈধভাবে কাজ করার পর সে পৌঁছেছে গ্রিসে৷ প্রথমবার তাকে ঢুকতে দেয়া হয়নি৷ তবে দ্বিতীয়বার সে সফল হয়েছে৷ পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে সোজা পাঠিয়ে দিয়েছে রাজধানি এথেন্সে৷ পশ্চিম ইউরোপে আসতে প্রয়োজন পাঁচ হাজার ইউরো৷ সমানে চলছে টাকার খেলা৷ খেলা হচ্ছে শরণার্থীদের ভবিষ্যত নিয়ে৷

প্রতিবেদন: রাতবিল শামেল / এমজে

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ