1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বুধ গ্রহের রহস্য উন্মোচনে মেসেঞ্জারের ভূমিকা

কর্নেলিয়া বর্মান/এসবি৬ জুলাই ২০১৫

মার্কারি বা বুধ সূর্যের সবচেয়ে কাছের গ্রহ৷ পাথুরে গ্রহগুলির বিবর্তন বুঝতে সম্প্রতি এই গ্রহের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে৷ একের পর এক মহাকাশযান চমকপ্রদ সব আবিষ্কার করে চলেছে৷

Messenger am Merkur
ছবি: Reuters/NASA/Johns Hopkins University Applied Physics Laboratory/Carnegie Institution of Washington

এমন গহ্বর শুধু বুধ গ্রহে দেখা যায়৷ গবেষকরা একে ‘হলোস' বলেন৷ জমিতে রাসায়নিক পদার্থ সরে গেলে এবং বাষ্পে পরিণত হলে এমন অনিয়মিত গহ্বর দেখা যায়৷ মার্কিন মহাকাশযান মেসেঞ্জার আমাদের সৌরজগতের কেন্দ্রস্থলের এই গ্রহে এমন বিশেষত্ব খুঁজে পেয়েছে৷ পৃথিবীর তুলনায় সূর্যের তিন গুণ কাছে রয়েছে এই গ্রহ৷ ২০০৮ সালে যানটি যখন বুধগ্রহে পৌঁছালো, তখন তার অর্ধেকেরও বেশি অংশ মানুষের কাছে অজানা ছিল৷

কয়েক বছর ধরে মেসেঞ্জার সাতটি যন্ত্র দিয়ে সূর্যের সবচেয়ে কাছের গ্রহ পর্যবেক্ষণ করেছে৷ খুব কাছ থেকে অত্যন্ত উচ্চমানের ছবি তোলা হয়েছে৷ বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যে গ্রহের বিকিরণও পরিমাপ করা হয়েছে৷ মেসেঞ্জার পেলোড ম্যানেজার রবার্ট গোল্ড বলেন, ‘‘ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বিক ডিজাইন ও কাঠামো সম্পর্কে জানা গেছে৷ স্পেকট্রোমিটার মাটিতে ধাতু ও বায়ুমণ্ডলে গ্যাসের অনুপাত বলে দেয়৷ বুধ গ্রহের পাতলা বায়ুমণ্ডলকে ‘এক্সোস্ফিয়ার' বলা হয়৷ গবেষকরা মূলত জানতে চান, কীভাবে বুধ গ্রহের সৃষ্টি হলো এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গ্রহটি কীভাবে বদলে গেল?

পৃথিবীর তুলনায় সূর্যের তিন গুণ কাছে রয়েছে এই গ্রহছবি: Reuters/NASA/Johns Hopkins University Applied Physics Laboratory/Carnegie Institution of Washington

বুধগ্রহ সত্যি অভিনব৷ পৃথিবীর তুলনায় ১০ গুণ বেশি সূর্যের আলো তার উপর পড়ে৷ সেখানে একটি দিন পৃথিবীর ১৭৬টি দিনের সমান৷ তবে বুধগ্রহে এক বছর পৃথিবীর তুলনায় প্রায় অর্ধেক৷ আয়তনও পৃথিবীর তুলনায় অনেক কম৷ চাঁদের তুলনায় সামান্য বড়৷ সূর্যের দিকের অংশের তাপমাত্রা প্রায় ৪৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁতে পারে৷ ছায়ায় ‘শীতল' অংশের তাপমাত্রা ১৭০ ডিগ্রি৷

ধাঁধার সমাধান করতে টুকরো টুকরো ছবি সাজিয়ে ভৌগোলিক মানচিত্র গড়ে উঠেছে৷ গবেষকরা তার সঙ্গে স্পেকট্রাম মানচিত্রও জুড়ে দিয়েছেন৷ ফলে মেসেঞ্জার থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বুধ গ্রহের পাথরের মানচিত্র সৃষ্টি হয়েছে৷ ফলে এক ঝলকেই সেই গ্রহের ধাতুগুলি চেনা যাচ্ছে৷

পাথরের এই মানচিত্র দেখে গবেষকরা জানতে পারছেন, কীভাবে এমন পাথুরে গ্রহগুলি তাদের বর্তমান রূপ পেয়েছে৷ জার্মান এয়ারোস্পেস সেন্টারের ড.ইয়োর্ন হেলবার্ট বলেন, ‘‘পৃথিবীতে এই বিবর্তন বোঝা আর সম্ভব নয়৷ এখানে আবহাওয়া ও জল রয়েছে, অনেক ক্ষয় হয়েছে৷ অর্থাৎ শুরুতে যা ছিল, বার বার তার পরিবর্তন ঘটেছে৷ বুধ গ্রহে সেটা ঘটেনি৷ সেখানে মৌলিক পদার্থ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়, যা থেকে গ্রহগুলি সৃষ্টি হয়েছিল৷''

বিস্ময়কর ঘটনা হলো, অন্যান্য পাথুরে গ্রহের সঙ্গে বুধ গ্রহের তফাত রয়েছে৷ তার মধ্যে গন্ধক ও ক্লোরিনের মতো অনেক তরল পদার্থ রয়েছে৷ বহু দশক ধরে গবেষকদের মনে প্রশ্ন ছিল, বুধ গ্রহে আগ্নেয়গিরি আছে কিনা৷ মেসেঞ্জার শুধু তার অস্তিত্ব নয়, তাদের গভীর গুরুত্বের প্রমাণও দিয়েছে৷ এই মসৃণ উপত্যকা গরম ও দ্রুত লাভার প্রবাহের কারণে তৈরি হয়েছে৷

২০১২ সালে মেসেঞ্জার বুধ গ্রহের উত্তর মেরুতে চমকপ্রদ আবিষ্কার করেছে৷ ছায়ার আড়ালে লুকানো গহ্বরে এই যান বরফ খুঁজে পেয়েছে৷ অরগ্যানিক মলিকিউলের পুরু স্তরের মধ্যে তা লুকিয়ে রয়েছে৷ দুটিই হয়ত ধূমকেতু বা উল্কার মাধ্যমে সৌরজগতের গভীর অংশ থেকে বুধ গ্রহে এসেছে৷

২০১৬ সালে বুধ গ্রহ সোলার ডিস্কের উপর দিয়ে যাবে৷ প্রতি শতাব্দীতে ১৩ থেকে ১৪ বার এমনটা ঘটে৷ ২০১৭ সালে ইউরোপ ও জাপানের এক যৌথ মহাকাশযান বুধ গ্রহে পৌঁছাবে৷ সেই যান থেকে দুটি স্যাটেলাইট বেরিয়ে মেসেঞ্জারের অসমাপ্ত কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ