বুধ গ্রহ নিয়ে নতুন তথ্য
২৪ মে ২০০৯মহাশুন্যের অসীম রহস্য জানতে মানুষের কৌতুহলের শেষ নেই৷ তাই বিজ্ঞানের উৎকর্ষতার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ মহাশুন্যের পাঠাচ্ছে একের পর এক নভোযান৷ জানতে পারছে বিভিন্ন গ্রহ নক্ষত্রের অজানা সব তথ্য৷ সৌর জগতের কয়টি গ্রহ সম্পর্কেই বা আমরা বিস্তারিত জানতে পেরেছি? মঙ্গল ও শুক্র সম্পর্কে এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে৷ কিন্তু বুধ গ্রহ সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের জানার পরিধিটি এখনও বেশীরভাগ ক্ষেত্রে ধারণা পর্যন্ত রয়ে গেছে৷ তবে সম্প্রতি বুধ গ্রহ সম্পর্কে বেশ কিছু নতুন তথ্য জানতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা৷
বুধ গ্রহের ছবি তুলতে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসা বেশ কয়েক বছর আগে নভোযান মেসেঞ্জার পাঠিয়েছিলো৷ সেই নভোযান গত বছরের অক্টোবার মাসে বুধ গ্রহের চারপাশে দ্বিতীয়বারের মত প্রদক্ষিণ করে৷ এসময় অনেক কাছ থেকে বুধ গ্রহের ১২০০ এরও বেশী ছবি তোলা হয়৷ এসব ছবি থেকে বিজ্ঞানীরা বুধ গ্রহ সম্পর্কে আরো অজানা তথ্য জানতে পারছেন৷ তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বুধ গ্রহের ৬৯২ কিলোমিটার দীর্ঘ গর্ত৷ অনেক দিন আগে থেকেই বিজ্ঞানীদের কৌতুহল রেমব্রান্ট বেসিন নামে বুধ গ্রহের এই গর্তকে ঘিরে৷ এ গর্তের ছবি বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন আগ্নেয়গিরি থেকে এই বিশাল আকারের গর্তের সৃষ্টি হয়েছে৷ সাধারণত বুধ গ্রহের বায়ুমন্ডলে ধুলিকণার পরিমাণ অনেক বেশী হওয়ায় গ্রহটির ভূ পৃষ্ঠ সহজে দেখা যায় না৷ কেননা ঘন ঘন অগ্নুৎপাতের কারণে বায়ুরমন্ডলে ধুলিকণার স্তর অন্য যে কোন গ্রহ থেকে অনেক বেশী ঘন৷ কিন্তু নাসার নভোযান অবশেষে এবার বুধ গ্রহের রেমব্রান্ট বেসিনের ছবি তুলতে সক্ষম হয়েছে৷ এ ব্যাপারে ওয়াশিংটনের স্মিথসোনিয়ান ইন্সটিটিউশন এর বিজ্ঞানী থমাস ওয়াটারস বলেন, প্রায় ৩.৯ বিলিয়ন বছর আগে বুধ গ্রহে এই বিশাল আকারের গর্তটি সৃষ্টি হয়েছে, যখন সৌর জগতের মধ্যেই একের পর এক প্রচন্ড বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছিলো৷ ওয়াশিংটন ভিত্তিক আরেক গবেষণা প্রতিষ্ঠান কার্নেগি ইন্সটিটিউশন এর গবেষক শন সলোমন বলেন, বুধ গ্রহের চারপাশে নভোযানের দ্বিতীয় প্রদক্ষিণ অনেক নতুন গবেষণার জন্ম দিয়েছে৷ বিশাল আকারের এই বেসিনের আবিষ্কার প্রমাণ করছে যে সেখানে একের পর এক অগ্নুৎপাতের ঘটনা ঘটছে এবং এসব কারণে গ্রহটির ভূ পৃষ্ঠের আকৃতিতে নানা পরিবর্তন সংঘটিত হচ্ছে৷
সাম্প্রতিক সময়ে বিজ্ঞান জগতের অন্যতম অভিযানে ব্যবহার করা হয় অত্যাধুনিক প্রযুক্তি৷ নাসার পাঠানো মেসেঞ্জার নভোযানে ছিলো বহু দূর থেকে ছবি তুলতে সক্ষম ক্যামেরা এবং লেজার আলটিমিটার৷ এই লেজার আলটিমিটার ব্যবহার করে বুধ গ্রহের ভূ পৃষ্ঠের বিভিন্ন সার্ভেও চালানো হয়৷ বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন এই অভিযানের পর বুধ গ্রহের প্রায় ৩০ শতাংশ রহস্য উন্মোচিত হয়েছে৷
প্রতিবেদক: রিয়াজুল ইসলাম, সম্পাদনা: আবদুস সাত্তার