বড়দিনের ঠিক আগে রক্তাক্ত হলো আফ্রিকার বুরকিনা ফাসো৷ জঙ্গি, সেনা, সাধারণ মানুষ মিলিয়ে একশর বেশি প্রাণহানি হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
বুরকিনা ফাসো ও সাহেল অঞ্চলে জঙ্গি হানা ও প্রাণহানির ঘটনা নতুন কিছু নয়৷ তা সত্ত্বেও মঙ্গলবার গভীর রাতে জঙ্গি হানার পর যে ভাবে শতাধিক লোকের প্রাণ গেল তা অভূতপূর্ব৷ এর মধ্যে ৩৫ জন সাধারণ মানুষ মারা গিয়েছেন এবং সেনা ও সন্ত্রাসবাদী লড়াইয়ে ৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে৷
সরকার ও সেনার পক্ষে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, সন্ত্রাসবাদীরা উত্তর বুরকিনা ফাসোর শহর আরবিন্দা আক্রমণ করে৷ প্রথমে তারা পাশের এলাকায় সামরিক ঘাঁটিতে আক্রমণ করতে যায় সেখানে ব্যর্থ হয়ে আরবিন্দাতে আসে৷ সেখানেও সেনা তাদের প্রতিহত করলে তারা পালাতে থাকে৷
পালাবার সময়ই এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে ৩৫ জন সাধারণ মানুষকে মারে৷ তার মধ্যে ৩১ জন নারী৷
সেনা ওই জঙ্গিদের তাড়া করে৷ সেনার গুলিতে আশি জনের মতো জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে৷ সেই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে জঙ্গিদের ব্যবহার করা মোটর বাইক ও প্রচুর পরিমাণে অস্ত্রশস্ত্র ও গুলি৷
সপ্তাহখানেক আগেই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ এই এলাকায় সফর করে গিয়েছেন৷ জি ৫সাহেল দেশগুলিতে কয়েক হাজার ফরাসি সেনা রয়েছে৷ এই পাঁচ দেশের মধ্যে রয়েছে বুরকিনা ফাসোও৷ জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির মোকাবিলা করার জন্যই ফরাসি সেনা সেখানে রয়েছে৷ ফ্রান্স, অ্যামেরিকা ও জি ৫ সাহেল দেশগুলির চেষ্টা সত্ত্বেও তাদের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি৷ পুরো এলাকার দখলদারিও নেওয়া সম্ভব হয়নি৷ ২০১৫ থেকে বুরিকনা ফাসো, মালি, চাড সহ দেশগুলিতে বারবার আক্রমণ করে জঙ্গিরা কয়েকশো সাধারণ লোককে হত্যা করেছে৷ কয়েক লাখ লোক নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ঘর ছেড়েছেন৷ ফলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে না৷
জিএইচ/এসজি (রয়টার্স,এপি)
পালটে যাওয়া দেশের নাম
ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তি এবং অন্য নানা কারণে নিজেদের নাম পালটেছে অনেক দেশ৷ এই ছবিঘরে থাকছে এমন কিছু দেশের গল্প৷
বাংলাদেশ
এক সময় বিশ্ব মানচিত্রে পূর্ব পাকিস্তান নামে পরিচিত ছিল আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ৷ অর্থনৈতিক মুক্তি, ভাষার দাবি, সামাজিক শোষণ, এমন নানা কারণে পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় বাঙালিরা৷ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে স্বাধীনতা অর্জন হয় ঠিকই, কিন্তু বিনিময়ে বিসর্জন দিতে হয় ৩০ লক্ষ শহীদের প্রাণ, ২ লক্ষ নারীর সম্ভ্রম৷ বাঙালির নতুন দেশ পরিচিত হয় বাংলাদেশ নামে৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
মিয়ানমার
সামরিক জান্তা ১৯৮৯ সালে বার্মার নাম পালটে মিয়ানমার রাখে৷ রাজধানী রেঙ্গুনের নাম পালটে রাখা হয় ইয়াঙ্গুন৷ অনেকেই অবশ্য সামরিক জান্তার দেয়া নাম সহজে মেনে নিতে চাননি৷ অং সান সুচিসহ গণতন্ত্রের দাবিতে আন্দোলনরত সকলেই মিয়ানমারের বদলে বার্মা বলতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন৷ তবে শেষ পর্যন্ত গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার পর আনুষ্ঠানিকভাবে মিয়ানমারই ব্যবহার হচ্ছে৷
ছবি: Reuters/Z. Bensemra
এসোয়াতিনি
ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের ৫০ বছর পর ২০১৮ সালের এপ্রিলে নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আফ্রিকার সোয়াজিল্যান্ড৷ দেশটির রাজা তৃতীয় এমসোয়াতি সিদ্ধান্ত নেন, ঔপনিবেশিকদের দেয়া নাম নয়, দেশ ফিরবে তার আসল নামে– এসোয়াতিনি৷ এসোয়াতিনি অর্থ সোয়াজিদের ভূমি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Husra
বুরকিনা ফাসো
১৯৫৮ সালে ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পরও অনেকদিন পশ্চিম আফ্রিকার দেশটির নাম আপার ভোল্টাই ছিল৷ ১৯৮৪ সালে দেশটির প্রধান দুই ভাষা থেকে নেয়া হয় এ নাম৷ মোসি ভাষা থেকে ‘বুরকিনা’ এবং ডিউলা ভাষা থেকে ‘ফাসো’ শব্দ নেয়া হয়েছে৷ বুরকিনা ফাসো অর্থ– ন্যায়পরায়ণ মানুষদের দেশ৷
ছবি: AFP/Getty Images/I. Sanogo
কম্বোডিয়া
১৯৭০ সালে প্রিন্স নরোডোম সিহানোক এক অভ্যূত্থানে ক্ষমতা দখলের পর কিংডম অব কম্বোডিয়ার নাম পালটে রাখেন খেমার রিপাবলিক৷ ১৯৭৫ সালে পল পটের খেমার রুজ ক্ষমতা দখলের পর দেশের নাম আবার পালটে রাখে ডেমোক্র্যাটিক কাম্পুচিয়া৷ পরে ১৯৭৯ সালে ভিয়েতনামের সমর্থনে খেমার রুজ উৎখাত হলে দেশের নাম হয় পিপলস রিপাবলিক অব কাম্পুচিয়া৷ ১৯৮৯ সালে আবার রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর কম্বোডিয়া তার পুরনো নাম ফিরে পায়৷
ছবি: Tang Chhin Sothy/AFP/Getty Images
বেনিন
ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের ১৫ বছর পর দাহোমে নাম পালটে পিপলস রিপাবলিক অব বেনিন নাম ধারণ করে৷ উপনিবেশ-পূর্ব সময়ে আফ্রিকায় একই নামে এক শক্তিশালী রাজত্ব ছিল৷ দক্ষিণ-পশ্চিম নাইজেরিয়ার একটি প্রদেশের নামও সেই রাজ্যের অংশ ছিল, সে প্রদেশের নামও বেনিন৷