বুড়ো হতে না চাইলে মাটিতেই থাকুন
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১০প্রথমজন অত্যন্ত দ্রুতগতির কোন গাড়িতে করে বিশ্বভ্রমণে বেড়িয়ে পড়লো৷ অনেক বছর পর বাড়িতে ফিরে এসে সে দেখলো তার যমজ ভাইয়ের বয়স যেন তার চেয়ে অনেক বেশি৷ অথবা ধরুন প্রথমজন কোন পর্বতের চূড়ায় উঠতে বেরিয়ে পড়লো৷ অনেকদিন পর পর্বতের চূড়া থেকে সমতলে বাড়িতে ফিরে দেখতে পেলো তার যমজ ভাইয়ের চেয়ে সে নিজে যেন অনেকটা বুড়িয়ে গেছে৷ এসব কথা কল্পকাহিনী মনে হলেও বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন টুইন প্যারাডক্স৷ অর্থাৎ বিজ্ঞানের জগতে এটি এখন প্রমাণিত বলেই ধরা হচ্ছে৷
আরও খানিকটা খোলসা করেই বলি৷ বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের থিওরি অব রিলেটিভিটির কথা তো আমরা সকলে জানি৷ গতি যত বাড়বে সময় তত ধীরে বইবে, আপেক্ষিক তত্ত্বের এই হচ্ছে অন্যতম কথা৷ যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেকনোলজি বা এনআইএসটির বিজ্ঞানীরা এখন দেখছেন গতির বাড়ার কারণে সময় যেমন ধীরে বয়, তেমনি মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কমার সঙ্গে সঙ্গে সময় তত দ্রুত বইতে শুরু করে৷
বিজ্ঞানীরা এই বিষয়টি প্রমাণের জন্য বেছে নিয়েছিলেন বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে অত্যাধুনিক দুটি আণবিক ঘড়িকে৷ বলে রাখি, এই ঘড়ি এক সেকেন্ডের কয়েক মিলিয়ন বিলিয়ন ভাগের এক ভাগ সময়ের পার্থক্য ধরতে সক্ষম৷ পরীক্ষাগারে এই ধরণের দুটি ঘড়িকে রাখা হয়েছিল একই সমতলে৷ খানিক পরে একটিকে এক ফুট ওপরে তুলে ধরা হয়৷ দেখা গেছে, এই উপরে যেতে যেতেই উপরের ঘড়িটি অন্যটির চেয়ে কিছুটা দ্রুতগামী হয়ে গেছে৷ এই থেকে বিজ্ঞানীরা এই ধারণায় এসেছেন, যে মানুষ যত উপরে ওঠার চেষ্টা করবে সে তত তাড়াতাড়ি বুড়িয়ে যাবে, কারণ উপরে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সময় তত দ্রুত চলতে শুরু করে৷ কিন্তু এর পরিমাণ কত জানেন? ৭৯ বছরের একটি মানুষের জীবনের এক সেকেন্ডের ৯০ বিলিয়ন ভাগের এক ভাগ৷ উপরে ওঠার জন্য জীবনের এতটুকু ক্ষয় করে ফেলা কি খুব বেশি?
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী