অ্যামেরিকার ভার্জিনিয়ায় আট বছরের এক বালক একজন অপরিচিত বৃদ্ধাকে ধরে সিঁড়ি ভাঙতে সাহায্য করছে – এ রকম একটি ভিডিও ইউটিউবে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
৩ জুন ইউটিউবে এ সাহায্য করার ভিডিওটি দেখেছেন ১ লাখ দুই হাজার ৭৫৪ জন৷ আর লাইক পরেছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার৷ আর ফেইসবুকে নানা পেইজে এটি শেয়ার হওয়ার পর এর ভিউ ২ কোটির কাছাকাছি হয়েছে৷ ফেসবুকে হিউম্যানকাইন্ড নামের একটি ভেরিফায়েড পেইজে এই ভিডিওটির ভিউ হয়েছে ৬০ লাখের ওপর৷ এবিসির ফেসবুক পেইজে এ ভিডিওটি দেখেছেন এক কোটির বেশি লোক৷ দুই লাখ ৩৫ হাজার বার শেয়ার হয়েছে কেবল তাদের পেজ থেকেই৷ সিবিসির ফেসবুক পেজে ভিডিওটি ভিউ হয়েছে প্রায় ৭০ লাখ বার৷
ভিডিওতে দেখা গেছে, অ্যামেরিকার ভার্জিনিয়ায় মরিস অ্যাডামস জুনিয়র মায়ের সাথে গাড়ি করে বাড়ি ফিরছিল৷ তখনই সে ওই বৃদ্ধাকে সিঁড়িতে উঠতে দেখে৷ এরপর সে গাড়ি থামিয়ে নেমে ওই বৃদ্ধাকে সাহায্য করে৷ বৃদ্ধা ছোট ছেলেটির এই সাহায্য প্রবণতা দেখে তার মাকে বলেছে- মরিস সাধারণ কোনো ছেলে নয়৷
এইচআই/ডিজি
জাপানে প্রবীণদের পরিচর্যায় রোবট
গা ধোয়া, হাঁটাচলা কিংবা আদর করা– সব কাজেই জাপানের প্রবীণাবাসে পরিচারকরা সাহায্য পান তাঁদের ইলেকট্রনিক সহকর্মীদের কাছ থেকে৷ রোবটরা দামে কম নয়, কিন্তু প্রবীণরা দৃশ্যত রোবট পছন্দ করেন৷
ছবি: Reuters/Kim Kyung-Hoon
ব্যায়াম বা কসরত করতে হলে রোবটরাই তা করে দেখাতে পারে
জাপানে প্রবীণদের সংখ্যা ও অনুপাত ক্রমেই বাড়ছে৷ হিসেব অনুযায়ী, ২০৩৫ সালে জাপানের জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশের বয়স হবে ৬৫ বা তার বেশি৷ এই পরিস্থিতিতে প্রবীণদের পরিচর্যার জন্য রোবটদের কাজে লাগানো ফ্যাশন নয়, নিছক আবশ্যকতা৷
ছবি: Reuters/Kim Kyung-Hoon
রোবট যেখানে ট্রেনার
টোকিওর এই প্রবীণাবাসে বাসিন্দাদের ব্যায়াম করানোর দায়িত্ব ‘পেপ্পার’ বা ‘মরিচ’ নামের একটি রোবটের৷ ‘মরিচ’-এর গলাটা ইলেকট্রনিক যন্ত্রের মতো খ্যানখ্যানে হলেও, সে কিন্তু ভারী অমায়িক এবং অত্যন্ত ভদ্রভাবে ‘‘এবার ডান দিকে, এবার বাঁ দিকে, বাঃ, খুব ভালো হয়েছে’’ ইত্যাদি নির্দেশ দেয়৷ জাপানের মোট ৫০০ প্রবীণাবাসে ‘মরিচ’-এর দেখা পাওয়া যাবে৷ সে নাকি হালকা গোছের কিছু আলাপচারিও করতে পারে৷
ছবি: Reuters/Kim Kyung-Hoon
রোবট সারমেয়
শিন-তোমি প্রবীণাবাসে পোষ্য প্রাণী বলতেও রোবট, যেমন ‘আইবো’ কুকুর – ছবিতে প্রবীণা যাকে নিয়ে খেলছেন৷ এখানে নাকি এ ধরনের ২০টি বিভিন্ন মডেল আছে – বাসিন্দারা তাদের যাকে ইচ্ছে নিয়ে খেলতে পারেন৷ ওদিকে জাপান সরকারের আশা যে, বিদেশেও ‘আইবো’-র মতো রোবট কুকুরের চল হবে৷
ছবি: Reuters/Kim Kyung-Hoon
‘পারো’ নামের একটি সিল মাছ
‘পারো’ নামের এই রোবটের গায়ে হাত বোলালে সে ভারী মিষ্টি সব আওয়াজ করে৷ ‘পারো’-কে তৈরি করতে দশ বছরের গবেষণা লেগেছে৷ আজ নাকি সারা বিশ্বে পাঁচ হাজার যান্ত্রিক সিল আছে, তার মধ্যে তিন হাজারই জাপানে৷ ‘পারো’র দামও কম নয়: জাপানে ৩,৮০০ ডলার, ইউরোপে ৫,০০০ ইউরো৷
ছবি: Reuters/Kim Kyung-Hoon
খেলনা হলেও, সস্তা নয়
জাপানের বহু প্রবীণাবাসের জন্য এ ধরণের বহুমূল্য ‘খেলনা’ কেনা সম্ভব হতো না, যদি না সরকার ভরতুকি দিতো৷ আর যে ‘খেলনা’ কথা বোঝে, আলো দেখতে পায়, মাথা নাড়ে, চোখ পিটপিট করে অথবা সত্যিকারের সিল মাছের মতো চেঁচায় – নিঃসঙ্গ প্রবীণ-প্রবীণাদের কাছে তার মূল্যও তো কিছু কম নয়৷
ছবি: Reuters/Kim Kyung-Hoon
যান্ত্রিক পেশী
রোবট মানে তো শুধু খেলনা নয়৷ তথাকথিত ‘মাসল সুট’ -এর কল্যাণে প্রবীণাবাসের পরিচারকরা অনেক শক্ত কাজ অনায়াসে করতে পারেন, কেননা, ঐ ‘মাসল সুট’ তাদের পেশীশক্তি বাড়িয়ে দেয়৷
ছবি: Reuters/Kim Kyung-Hoon
পরিচারকদের সুবিধা
রোবট সাজ পরা থাকলে পরিচারকরা প্রবীণ-প্রবীণাদের অনেক সহজে নাড়াচাড়া করতে পারেন, তুলতে কিংবা সরাতে কিংবা হুইলচেয়ারে বসিয়ে ঠেলতে পারেন৷ এসব কাজের দরুণ পিঠের ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়৷
ছবি: Reuters/Kim Kyung-Hoon
রোবটের সাহায্যে হাঁটতে শেখা
যন্ত্রের সাহায্য নিয়ে প্রবীণ-প্রবীণারা হাঁটতে শেখেন: কিভাবে ভারসাম্য রাখতে হবে, কোথায় পা ফেলতে হবে, সব কিছু দেখিয়ে দেয় ঐ রোবট৷ এসব সত্ত্বেও রোবট কোনোদিনই মানুষের জায়গা নিতে পারবে না বলে জাপান সরকারের বিশ্বাস৷ তবে রোবটরা প্রবীণ-প্রবীণাদের মনোরঞ্জন ও পরিচারকদের কর্মভার লঘু করার কাজে সাহায্য করতে পারবে৷