1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দারিদ্রের কবলে বৃদ্ধ অভিবাসী

গ্যুনটার বির্কেনস্টক / আরবি১৭ জুলাই ২০১৩

এসার গ্যোকলারের জীবন ব্যতিক্রমী৷ ৬৫ বছর বয়সি এই তুর্কি ১৯৬৯ সালে জার্মানিতে আসেন৷ শেখেন জার্মান ভাষা৷ হাইস্কুল পাশ করে পড়াশোনা করেন অর্থনীতি নিয়ে৷ এরপর চাকরি ছেড়ে দিয়ে শুরু করেন ব্যবসা, যা বেশ ভালোই চলছে৷

Bildnummer: 59889680 Datum: 09.05.2011 Copyright: imago/Caro Berlin, Deutschland - Eine Gruppe alter Maenner unterhaelt sich. (QF, europäisch, Männer, Türken, türkisch, Ausländer, Gespräch, Fussgängerzone, Pensionäre) 00S110509D751CARO.JPG MODELxRELEASE:xNO, PROPERTY RELEASE: NO PUBLICATIONxNOTxINxPOL xdp x0x 06 2011 quer 60-70 Jahre A
ছবি: imago/Caro

তবে অধিকাংশ অভিবাসীর অবস্থাটা কিন্তু অন্যরকম৷ পড়াশোনার পর এসার গ্যোকলার বড় এক কোম্পানিতে কন্ট্রোলার হিসাবে কাজ করেন৷ পরে সে চাকরি না পোষালে স্বাধীনভাবে ব্যবসা শুরু করেন তিনি৷ ছোট ছোট বাড়ি কিনে টাকা বিনিয়োগ করতে শুরু করেন৷ ‘‘এজন্য আমার আজ বাড়ি ভাড়া দিতে হয় না৷ এবং বাড়ির আয়ের সঙ্গে পেনশনের ১২০০ ইউরো মিলে দ্বিগুণ অর্থ আসে আমার হাতে'', বলেন গ্যোকলার৷ কিন্তু এটা তো শুধু তাঁর গল্প নয়৷ তাঁর বয়সি অধিকাংশ অভিবাসীকে যে একরকম কায়ক্লেশেই বেঁচে থাকতে হয়৷

বহু মানুষ জার্মানিতে আসেন কাজের সন্ধানে

১৯৬০ এবং ৭০-এর দশকে দক্ষিণ ও ইউরোপের পূর্বাঞ্চল থেকে লাখ লাখ মানুষ জার্মানিতে আসেন কাজের সন্ধানে, দারিদ্র্যের হাত থেকে পরিত্রাণ পেতে৷ জার্মানির অর্থনীতির তখন রমরমা অবস্থা৷ প্রয়োজন ছিল কর্মী ও শ্রমিকের৷ এই সব শ্রমিক ইস্পাতের কারখানা, খনি, গাড়ি নির্মাণের কারখানা ইত্যাদি ক্ষেত্রে শ্রম দিয়েছেন৷ তবে সম্পদ ও সমৃদ্ধির মুখ দেখেছেন খুব কম জনই৷

এসার গ্যোকলারছবি: DW

প্রবীণ অভিবাসীদের অনেকেই দরিদ্র

অর্থনীতি ও সমাজবিজ্ঞান ইন্সটিটিউট হান্স ব্যোকলার ফাউন্ডেশন-এর এক সমীক্ষায় জানা গেছে যে, পেনসনভোগী বা এই বয়সি অভিবাসীর মধ্যে ৪০ শতাংশই দারিদ্র্যের শিকার৷ সমবয়সি জার্মানদের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের দারিদ্র্যের সংজ্ঞা অনুযায়ী, জার্মানিতে একজনকে ৮৪৮ ইউরোর কম অর্থ দিয়ে মাস চালাতে হলে তাকে দরিদ্র বলা যায়৷ আর স্বামী-স্ত্রী বা দুইজনের জন্য এই অর্থের পরিমাণ ১২৭৮ ইউরো৷

সমাজ গবেষকরা অভিবাসীদের দারিদ্র্যের জন্য কয়েকটি কারণের কথা উল্লেখ করেছেন৷ তাঁদের মতে, ‘‘যে সব বিদেশি এখানে কাজের জন্য আসেন তারা বড় বড় প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পেলেও সাধারণ ও ছোট খাট কাজগুলিই তাদের করতে হয়৷ যাতে বেতন খুব বেশি নয়৷''

দ্বিতীয়ত: ১৯৮০-এর দশকে শিল্প কলকারখানায় কাজ কমে গেলে বিশেষ করে বিদেশিদেরই ছাঁটাইয়ের কবলে পড়তে হয়েছিল৷ সেজন্য জার্মানদের চেয়ে বিদেশিদের মধ্যে বেকারের হারও বেশি দেখা যায়৷

এছাড়া, অনেক বিদেশি পরিণত বয়সে এখানে এসেছেন৷ তাই পেশা জীবনেও নানা রকম বাধা পড়েছে তাদের৷ স্বদেশে তারা কাজ করলেও অনেকে সামাজিক বিমার আওতায় ছিলেন না৷ তাই সেই কাজের সময়টাকে পেনশনের খাতে ধরা হয় না৷ ফলে, বৃদ্ধ বয়সে পেনশনও কম পান তারা৷

জার্মানির অর্থনৈতিক গবেষণা ইন্সটিটিউট-এর উদ্যোগে ২০০৬ সালেও প্রবীণ অভিবাসীদের ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্য নিয়ে একটি সমীক্ষা হয়েছিল৷ সেই সময় থেকে আজ পর্যন্ত অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন হয়নি৷ প্রবীণ অভিবাসীদের মধ্যে দরিদ্রের সংখ্যা ছিল ২০০৬ সালে ১ লাখ ৭০ হাজার৷ আজ এই সংখ্যাটা ২ লাখ ৭০ হাজারে দাঁড়িয়েছে৷ সম্ভবত সংখ্যাটা আরো বাড়তে পারে৷

আজকের পেনশনোভোগী বা বৃদ্ধ অভিবাসীরা অবশ্য এই ধরনের ‘ক্যাম্পেন' থেকে লাভবান হবেন না (ফাইল ফটো)ছবি: picture-alliance/dpa

একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়

ভবিষ্যতের অভিবাসী প্রজন্মকে বৃদ্ধ বয়সে দারিদ্র্যের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ২০০৯ সালে বাডেম ভ্যুর্টেমব্যার্গ রাজ্যের ইন্টিগ্রেশন মন্ত্রী ও কয়েকটি জনককল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে মিলে একটি বিশাল প্রকল্প গঠন করে৷ কিন্তু পেনশন সংক্রান্ত বিভিন্ন কোর্সে অভিবাসীদের খুব একটা সাড়া পাওয়া যায়নি৷ তাই পরে ‘অভিবাসন ও সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ক একটি নেটওয়ার্ক' গড়ে তোলা হয়৷ নেটওয়ার্কের পরিচালক আন্ড্রেয়াস শোয়ারৎস বলেন, ‘‘বিশেষ করে অভিবাসীদের তিনটি গ্রুপ তুর্কি, ইটালিয়ান ও গ্রিকদের পেনশন ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে তথ্যদি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয় এই নেটওয়ার্কে৷ সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টি অত্যন্ত জটিল৷ আমরা এমন সব সেমিনারের আয়োজন করে থাকি, যেখানে কঠিন বিষয়গুলিকেও খুব সহজে বুঝিয়ে দেওয়া হয়৷ এছাড়া অংশগ্রহণকারীরা যাতে মাতৃভাষায় প্রশ্ন করতে পারে, সে ব্যবস্থাও রাখা হয় সেমিনারে৷''

২০১২ সালে নেটওয়ার্কটির বিভিন্ন কোর্স চলেছে৷ ভালো সাড়াও পাওয়া গেছে৷ তবে অন্যান্য রাজ্যে এই ধরনের ব্যবস্থা থাকলেও খুব একটা প্রচার হয়নি বিষয়টি নিয়ে৷ এছাড়া কেন্দ্রীয় পর্যায়ে এই রকমের একটি তথ্য-ক্যাম্পেনের অভাব রয়েছে৷

সামাজিক ভাতার দ্বারস্থ হতে দ্বিধাবোধ

আজকের পেনশনোভোগী বা বৃদ্ধ অভিবাসীরা অবশ্য এই ধরনের ‘ক্যাম্পেন' থেকে লাভবান হবেন না৷ তাদের সামাজিক ভাতার জন্য আবেদন করা ছাড়া উপায় নেই৷ সমাজ গবেষক এরিক সাইলস বলেন, ‘‘পেনশনভোগী দুঃস্থ অভিবাসীদের সবাই যদি সামাজিক ভাতার দ্বারস্থ হতেন, তাহলে পরিসংখ্যানে দরিদ্র বৃদ্ধ অভিবাসীর সংখ্যাটা আরো বেশি হতো৷ অভাবে পড়লে জার্মানদের চেয়ে বিদেশিরা সামাজিক ভাতার জন্য হাত পাততে দ্বিধা বোধ করেন অনেক বেশি৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ