বহু রাস্তায় জল জমে যায়। বিশাল ট্রাফিক জ্যাম হয়। গভীর রাত পর্যন্ত যানজট চলে। দিল্লিজুড়ে অনেক রাস্তাই জলের তলায় চলে যায়।
মৃত সাত
দিল্লির গাজিপুরে তনুজা ও তার তিন বছরের ছেলে প্রিয়াংশ জলে ডোবা রাস্তায় নালার মধ্যে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। গুরুগ্রামের ইফকো চকে বিদ্যুৎবাহী তার রাস্তায় জমা জলে পড়ে যায়। তাতে তিনজনের মৃত্যু হয়। সবজি মণ্ডিতে বাড়ি ভেঙে পড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। গ্রেটার নয়ডায় মৃত্যু হয়েছে একজনের।
মোট দশটি বিমানকে ঝড়-বৃষ্টির সময় নামতে দেয়া হয়নি। আটটি বিমানকে জয়পুর ও দুইটি বিমানকে লখনউ পাঠিয়ে দেয়া হয়।
রেড অ্যালার্ট জারি
দিল্লিতে বৃহস্পতিবার রেড অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর। তারা জানিয়েছে, দিল্লিতে বৃহস্পতিবার ঝড়-বৃষ্টি হবে। খুব দরকার না থাকলেমানুষকে বাড়ির বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ৫ অগাস্ট পর্যন্ত ঝড়-বৃষ্টি চলবে।
প্রচণ্ড গরমের পর প্রবল বৃষ্টিতে ভাসলো দিল্লি
দিল্লিতে বেশ কিছুদিন ধরে তাপপ্রবাহ চলছিল। সেই তাপপ্রবাহের পর প্রবল বৃষ্টি হলো। জলে ভাসলো রাজধানীর বিস্তীর্ণ এলাকা।
সফদরজঙ্গ আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, দিবাগত রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ১৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে তাপমাত্রা একধাক্কায় অনেকখানি কমেছে ঠিকই, কিন্তু জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
দিল্লি বিমানবন্দরের এক নম্বর টার্মিনালের ছাদের একটা অংশ প্রবল বৃষ্টির ফলে ভেঙে পড়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। যেখানে যাত্রীরা গাড়ি থেকে নামেন বা গাড়িতে ওঠেন, সেখানেই ছাদের একাংশ পড়ে গেছে। এর ফলে একজন মারা গেছেন। ছয়জন আহত হয়েছেন। অনেকগুলি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এক নম্বর টার্মিনালে বিমান ওঠানামা বেলা দুইটা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে।
ছবি: AP Photo/picture alliance
বহু রাস্তায় জল
দিল্লির অনেক রাস্তায় জল জমে গেছে। মিন্টো রোড, লোদি এস্টেট, আইটিও, গল্ফ কোর্স রোড-সহ বহু রাস্তা জলের তলায় চলে গেছে। ফলে দিল্লি জুড়ে ব্যাপক যানজট দেখা দিয়েছে।
প্রবল বৃষ্টি ও যানজটের ফলে দিল্লির রাস্তায় শুক্রবার গাড়ি কম ছিল। যাতায়াতের জন্য মানুষ মেট্রো রেলে চেপেছেন। কিছু জায়গায় মেট্রো স্টেশনের সামনেও জল জমে গেছে। তবে সকালের পর থেকে বৃষ্টি থেমেছে।
ছবি: Arun Sankar/AP Photo/picture alliance
তাপমাত্রা কমে গেছে
দিল্লির তাপমাত্রা এক ধাক্কায় অনেকটাই কমে গেছে। শুক্রবার দুপুরে দিল্লির তাপমাত্রা ছিল ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এতদিন ধরে গরম হাওয়া বইছিল। তার জায়গায় শুক্রবার ঠান্ডা হাওয়া বইছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, তাপমাত্রা ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে। আদ্রতার পরিমাণ থাকবে ৭০ শতাংশের মতো।
ছবি: Arun Sankar/AP Photo/picture alliance
বিদ্যুতের চাহিদা কমবে
কয়েকদিন আগে বিদ্যুৎ ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেকর্ড করেছে দিল্লি। তখন তাপমাত্রা ছিল ৪৫ ডিগ্রি বা তার বেশি। সেসময় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল আট হাজার ৬৪৭ মেগাওয়াট। গোটা উত্তর ভারতে ছিল ৮৯ হাজার মেগাওয়াট। এই বিপুল পরিমাণ চাহিদা মেটাতে বিপাকে পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থাগুলি। এখন আবহাওয়া ঠান্ডা হয়েছে। এসি, কুলারের ব্যবহার কমবে। ফলে বিদ্যুতের চাহিদাও কমবে।
ছবি: Arun Sankar/AP Photo/picture alliance
আরো বৃষ্টি
আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, দিল্লিতে শুক্রবার আরো বৃষ্টি হতে পারে। আগামী দুই দিনও বৃষ্টি হতে পারে। দিল্লিতে বর্ষাও ঢুকে পড়লো বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।
বর্ষা শুরু হয়ে যাওয়ায় দিল্লিতে আর জলকষ্ট থাকবে না বলে মনে করছে রাজ্য সরকার। দিন কয়েক আগেই দিল্লির এলজি-র কাছে গিয়ে আপ নেতা-মন্ত্রীরা বলেছিলেন, হিমাচলে, উত্তরাখণ্ডে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। এরপর হরিয়ানা চাইলেও আর যমুনার জল আটকে রাখতে পারবে না। দিল্লির মন্ত্রী আতিশি হরিয়ানা জল কম দেয়ার প্রতিবাদে অনশন করছিলেন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। বৃহস্পতিবার তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।
ছবি: Priyanshu Singh/REUTERS
8 ছবি1 | 8
বৃহস্পতিবার দিল্লির সব স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী অতিশি জানিয়েছেন, প্রবল বৃষ্টি হতে পারে বলে সরকারি ও বেসরকারি সব স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ওল্ড রাজেন্দ্রনগরে জল
কয়েকদিন আগেই ওল্ড রাজেন্দ্রনগরে রাস্তার জমা জল রাউস আইএএস স্টাডি সার্কেলের বেসমোন্টে প্রবল বেগে ঢুকে পড়ায় তিনজন পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সেই জায়গায় আবার জল জমেছিল। সেই জমা দলে দাঁড়িয়ে পড়ুয়ারা বুধবারও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
সাংসদ স্বাতী মালিওয়াল জল জমা রাস্তার ছবি সামাজিক মাধ্যমে দিয়ে বলেছেন, ''অতবড় ঘটনার পরেও ড্রেন পরিষ্কার করা হলো না। কাউকে দায়ী করা হলো না।''
হিমাচলে নিখোঁজ ২০
হিমাচল প্রদেশের রামপুরে ক্লাউড বার্স্ট বা মেঘফাটা বৃষ্টির পর প্রবল বন্যায় ২০ জন নিখোঁজ। একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাছে এই ঘটনা ঘটেছে। এলাকায় রাস্তাঘাট ভেসে গেছে। বিপর্যয় মোকাবিলার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
উত্তরাখণ্ডে মৃত চার
উত্তরাখণ্ডের তেহরিতে ক্লাউড বার্স্ট হয়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনজন নিখোঁজ। বৃষ্টি ও ক্লাউড বার্স্টের জেরে কাদারনাথ যাত্রীরাও আটকে পড়েছেন।
এছাড়া হরিদ্বারে বৃষ্টির ফলে একটি বাড়ি ভেঙে পড়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।