1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বৃহস্পতি সম্পর্কে জানাবে ‘জুনো’

৮ আগস্ট ২০১১

বসে থাকার পাত্র নয় মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা৷ শাটল কর্মসূচি শেষ হয়েছে মাত্র দুই সপ্তাহ হলো৷ এরই মধ্যে নতুন মিশন শুরু করে দিয়েছে৷ এবারের গন্তব্য বৃহস্পতি গ্রহ৷

This 2010 artist's rendering depicts NASA's Juno spacecraft with Jupiter in the background. The robotic explorer Juno is set to become the most distant probe ever powered by the sun. Launch is set for Friday, Aug. 5, 2011, aboard an unmanned Atlas V rocket _ barely two weeks after NASA's final space shuttle flight. (Foto:NASA/JPL/AP/dapd)
ছবি: dapd/NASA

কেন বৃহস্পতি

সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতি৷ এতটাই বড় যে, অনেকে বলেন এক বৃহস্পতির মধ্যে এক হাজারটি পৃথিবী অনায়াসে পুরে রাখা যাবে৷ বিজ্ঞানীদের ধারণা, সূর্যের জন্মের পরপরই গ্রহদের আবির্ভাব, এবং সেটা ৪৬৫ কোটি বছর আগে৷ আর গ্রহদের মধ্যে সবার আগে জন্ম নিয়েছিল বৃহস্পতি৷

তার মানে, একদিকে সবচেয়ে বড় আর অন্যদিকে সবার আগে তৈরি হওয়া গ্রহ হলো বৃহস্পতি৷ ফলে বিজ্ঞানীদের আগ্রহও এই গ্রহকে নিয়ে৷ কারণ, তাঁরা মনে করছেন যেহেতু সবার আগে এসেছে বৃহস্পতি, তাই এটাকে নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করলেই গ্রহগুলো কীভাবে তৈরি হলো সে সম্পর্কে জানা যাবে৷ এছাড়া বৃহস্পতির পরিবেশ সম্বন্ধে জানতে পারলে অন্য গ্রহ সম্পর্কেও তথ্য পাওয়া যেতে পারে৷

প্রথম অভিযান

এসব কারণে ১৯৮৯ সালে প্রথমবারের মতো ‘গ্যালিলেও' নামের একটি মনুষ্যবিহীন স্পেসক্রাফট বা মহাকাশযান বৃহস্পতির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়৷ ছয় বছর পর ১৯৯৫ সালে এটি বৃহস্পতিতে পৌঁছায় এবং নানান তথ্য পাঠায়৷

জুনো

এবার আবার বৃহস্পতির উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গেল মনুষ্যবিহীন আরেকটি মহাকাশযান - যার নাম ‘জুনো'৷ রোমান পুরাণের প্রধান দেবতা জুপিটার, যেটা বৃহস্পতিরও ইংরেজি নাম, তার স্ত্রী ছিলেন জুনো৷ জুপিটার শব্দের অর্থ হচ্ছে ‘আকাশের পিতা'৷

শুক্রবার, মানে আগস্টের ৫ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের কেপ কার্নিভাল থেকে যাত্রা শুরু হয়েছে জুনোর৷ ‘অ্যাটলাস ৫' রকেটে করে রওয়ানা দেয়ার ৫৩ মিনিট পর রকেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মহাকাশের দিকে যাওয়া শুরু করে জুনো৷ এই দৃশ্য দেখতে প্রায় ১০ হাজার দর্শক জড়ো হয়েছিলেন৷

বৃহস্পতির উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গেল মনুষ্যবিহীন আরেকটি মহাকাশযান - যার নাম ‘জুনো'ছবি: picture alliance / dpa/NASA

এসময় নাসা'র প্রধান চার্লস বাল্ডেন বলেন, এর মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হলো যে, মহাকাশ গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রই বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে৷

এদিকে নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন সবকিছু ঠিক থাকলে পাঁচ বছর পর ২০১৬ সালের জুলাই মাসে বৃহস্পতিতে গিয়ে পৌঁছবে জুনো৷ এসময় পাড়ি দিতে হবে ৭১৬ মিলিয়ন কিলোমিটার পথ৷ এই দীর্ঘ পথ চলতে ব্যবহৃত হবে শুধুমাত্র সৌরশক্তি৷ যদিও ২০০৩ সালে যখন প্রথমবারের মতো জুনো'র কথা বলা হয়েছিল তখন জ্বালানি হিসেবে কিছু পরমাণু শক্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছিল৷

সৌরশক্তি ধরার জন্য জুনোর তিন ডানায় ১৮ হাজার সৌর কোষ লাগানো হয়েছে৷ কিন্তু বৃহস্পতিতে সূর্যের তেজ অনেক কম৷ সংখ্যার হিসেবে সেটা পৃথিবীর ২৫ ভাগের মাত্র এক ভাগ৷ ফলে কীভাবে শুধুমাত্র সৌরশক্তি ব্যবহার করে জুনো টিকে থাকবে সেটা প্রশ্ন ছিল সবার৷ উত্তরে জুনো মিশনের প্রধান বিজ্ঞানী স্কট বোল্টন বলেন, সৌর প্যানেলগুলো যেন শুধু সূর্যের দিকেই মুখ করে থাকে সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে৷

গ্যালিলেওর চেয়েও বৃহস্পতির আরও কাছাকাছি যাওয়ার কথা রয়েছে জুনোর৷ ফলে সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহটি সম্পর্কে এবার আরও বিস্তারিত তথ্য আশা করছেন নাসার বিজ্ঞানীরা৷

শুধু নাসা নয়, জুনো মিশনে কিছুটা অবদান রেখেছে ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থাও৷ বৃহস্পতিতে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর জন্য জুনোতে যেসব যন্ত্রপাতি দেয়া হয়েছে সেসবের কিছুটা দিয়েছে ইটালি, বেলজিয়াম, ফ্রান্স আর ডেনমার্ক৷

কী তথ্য জানা যাবে

বৃহস্পতি সম্পর্কে দুটো প্রধান বিষয় জানার চেষ্টা করবেন বিজ্ঞানীরা৷ এক - সেখানে কী পরিমাণ পানি আছে, আর দুই - সেখানে শক্ত কোনো কিছু আছে কিনা, নাকি শুধুই গ্যাস আর গ্যাস৷ বৃহস্পতির ম্যাগনেটিক ফিল্ড বা চৌম্বকীয় ক্ষেত্র সম্পর্কেও ধারণা পাওয়ার আশা করছেন বিজ্ঞানীরা৷

জটিল সব যন্ত্রপাতি ছাড়াও জুনোতে কিছু খেলনা দিয়ে দেয়া হয়েছে৷ অংক আর বিজ্ঞান সম্পর্কে তরুণদের মাঝে সচেতনতা বাড়ানোই এর উদ্দেশ্য বলে জানা গেছে৷

পুরো প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে একশো দশ কোটি ডলার৷

আজ থেকে চারশো বছর আগে ইটালির বিজ্ঞানী গ্যালিলেও তাঁর নিজের তৈরি দূরবীন দিয়ে বৃহস্পতির চারটি উপগ্রহ চিহ্নিত করেছিলেন৷ এবার দেখা যাক, এত টাকা খরচ করে কী আবিষ্কার করা যায়৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ