1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বেটোফেন, গ্যোটে প্রেমিকাদের কী লিখেছিলেন জানেন?

৩১ মার্চ ২০২০

করোনা সংকটের ফলে অনেক দম্পতি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন৷ ইন্টারনেট সহায়ক হচ্ছে বটে, কিন্তু প্রেম-ভালবাসা টিকিয়ে রাখা চ্যালেঞ্জ বটে৷ অতীতের কিছু বিখ্যাত প্রেমপত্র থেকে প্রেরণা পাওয়া যেতে পারে৷

ছবি: Imago Images/theissen

১৮১২ সালে বিখ্যাত জার্মান সংগীতসৃষ্টা লুডভিশ ফন বেটোফেন এক প্রেমপত্রে লিখেছিলেন, ‘‘হে ঈশ্বর! এত দূরে থাকা সত্ত্বেও এমন নৈকট্য! অশ্রুর মধ্যে তোমার প্রতি এ কী টান!’’ ঠিক কাকে তিনি এই চিঠি লিখেছিলেন, আজও সেই রহস্যের সমাধান করা যায় নি৷

যুগে যুগে যা বদলায় নি, তা হলো প্রেমে পড়লে মানুষ তার প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটাতে চায়৷ অতীতে প্রেমিক-প্রেমিকারা একে অপরকে আবেগভরা প্রেমপত্র লিখতো৷ আজকাল হয়তো মানুষ আর এতটা রোম্যান্টিক নেই৷ হোয়াটসঅ্যাপে শুধু আইএলওয়াই বা ‘আই লাভ ইউ' লিখে, সঙ্গে হৃদয়ের ইমোজি জুড়ে দিলেই চলে৷

বেটোফোনের যুগে হোয়াটসঅ্যাপ ছিল না৷ চিঠি চালাচালি করতে অনেক সময় লাগতো৷ ধৈর্য্য ধরে চিঠির উত্তরের জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হতো৷ কখনো তিনি আক্ষেপ করে বলতেন, প্রেমিকার হাতে এত দেরিতে চিঠি পৌঁছবে! তাঁর বন্ধু ফ্রানৎস গেয়ারহার্ডের মতে, নারীদের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বেটোফেন বেশ পটু ছিলেন৷ তবে তার ফলে চিঠির বৈচিত্র্য কমতো না৷

নারীদের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বেটোফেন বেশ পটু ছিলেনছবি: picture-alliance/Glasshouse Images

জার্মান মহাকবি ইয়োহান ভল্ফগাং ফন গ্যোটে-ও প্রেম-ভালবাসা ও নারীসঙ্গের বিষয়ে যথেষ্ট পটু ছিলেন৷ জীবনে একাধিকবার প্রেমে পড়েছেন তিনি৷ এর মধ্যে শুধু শার্লটে ফন স্টাইন-কেই প্রায় ১,৭০০ চিঠি লিখেছিলেন তিনি৷ একটি চিঠিতে গ্যোটে লিখেছিলেন, ‘‘যে সব মিষ্টি শব্দের মাধ্যমে তুমি আমাকে আচ্ছন্ন করে তুলেছো৷ এমনটাই তো চেয়েছিলাম৷ আমার আত্মার মধ্যে তুমি নীরবে সবচেয়ে সুন্দর কথাগুলি ভরে দিয়েছো৷ তোমার ওষ্ঠ যখন সেই শব্দগুলি পড়ে শোনাচ্ছে...৷’’ গ্যোটে ভাইমার থেকে ইটালি যাবার পর সেই সম্পর্ক অবশ্য কিছুটা শীতল হয়ে পড়েছিল৷

ফ্রান্সের দার্শনিক ভলতেয়ার তাঁর ভাগ্নি মারি-লুইজ দেনির প্রেমে পড়েছিলেন৷ তাঁদের প্রেমপত্রগুলিও অমর হয়ে রয়েছে৷ ১৭৪৫ সালে ভলতেয়ার ভার্সাই থেকে লিখেছিলেন, ‘‘রাজা, রাজপ্রাসাদ, রাজকীয় পরিবেশ থেকে বহু দূরে তোমার সঙ্গে শান্তিতে থাকতে না পেরে আমি খুবই অখুশি৷ সব সময়ে পরস্পর থেকে দূর থাকা নিয়তির কী পরিহাস! কী ব্যাকুল হয়ে সাক্ষাতের আকাঙ্ক্ষা, অথচ দেখার উপায় নেই৷’’

একাধিকবার প্রেমে পড়েছেন গ্যোটেছবি: picture-alliance/Leemage

তবে দম্পতিদের মধ্যে লেখা সব প্রেমপত্রই শুধু মধুময় হয় না৷ যেমন জার্মানির এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের নারী জেনি ফন ভেস্টফালেন তাঁর হবু স্বামীর উদ্দেশ্যে লিখেছিলেন, ‘‘প্রিয় ভাল মনের পুরুষ৷ তুমি এখন এখানে থাকলে দেখতে, তোমার প্রিয়তমা কতটা ব্যাকুল হতো৷ কার্ল মার্ক্স পর্যন্ত লিখে গেছেন, আমি মাথা থেকে পা পর্যন্ত তোমাকে চুম্বন করছি৷ সর্বহারার জন্য প্রেম নয়, প্রেমিকের জন্য ভালবাসা, তোমার জন্য ভালবাসা... সেই ভালবাসা কোনো পুরুষকে আবার পুরুষ করে তোলে৷’’

বিংশ শতাব্দীর বিরহের প্রেমকাহিনির মধ্যে নেলসন ও উইলি ম্যান্ডেলার সম্পর্কের উল্লেখ করতেই হয়৷ দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি হিসেবে পরিচিত নেলসন ম্যান্ডেলা বহু বছর কারাগারে বন্দি ছিলেন৷ ১৯৬৯ সালে রবিন আইল্যান্ডের কারাগার থেকে তিনি স্ত্রী উইনিকে লেখেন, ‘‘ডার্লিং, ১৯৬২ সালের ২০শে ডিসেম্বর তুমি আমাকে প্রথম যে চিঠি লিখেছিলে, এখানে সেটাই আমার সবচেয়ে মূল্যবান সম্পত্তি৷ গত সাড়ে ছয় বছর ধরে আমি বার বার সেটা পড়েছি৷ সেই চিঠিতে অসাধারণ আবেগ প্রথম দিনের মতই তরতাজা রয়েছে৷’’

অনেক বছর পর নেলসন ও উইনি ম্যান্ডেলার সম্পর্ক ভেঙে যায়৷

প্রশ্ন হলো, আবার দেখা হওয়া ও আলিঙ্গনের সুযোগ পাওয়া পর্যন্ত আজকের সংকটে বিচ্ছিন্ন দম্পতিরা কি চিঠি লেখার আনন্দ নতুন করে আবিষ্কার করছেন কি?

সুজান কর্ডস/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ