বেতন বৃদ্ধির দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলন
৩১ অক্টোবর ২০২৩ঢাকার অদূরে আশুলিয়া এবং গাজীপুরে বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানার হাজার হাজার শ্রমিক ধর্মঘট পালন করছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ৷ এসময় কারখানা ভাঙ্চুর এবং রাস্তা বন্ধ করার চেষ্টা করা জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস এবং রাবার বুলেট ছোঁড়ে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা৷
শুধু গাজীপুরে একহাজারের বেশি কারখানা রয়েছে যেখানে এইচএন্ডএম এবং গ্যাপ-এর মতো পশ্চিমা জনপ্রিয় ব্রান্ডের পোশাক তৈরি করা হয়৷
''পোশাক কর্মীরা রাস্তায় নেমেছেন কারণ যে বেতন তারা পান তা দিয়েই আর বেড়ে চলা খাবারের খরচ মেটানো যাচ্ছে না,'' আশুলিয়ায় বলেন পোশাক শ্রমিকদের সংগঠনের নেতা আল কামরান৷
বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বড় তৈরি পোশাক রপ্তানিকার দেশ৷ দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির বাৎসরিক ৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি বাণিজ্যের ৮৫ শতাংশই আসে পোশাক খাত থেকে৷
আশুলিয়া শিল্প এলাকা পুলিশের উপপ্রধান মাহমুদ নাসের বলেন, ‘‘বেতন বৃদ্ধির দাবিতে ১৫ হাজারের মতো পোশাক কর্মী আশুলিয়ার বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন৷''
শ্রমিক নেতা কামরান অবশ্য পুলিশের বলা এই সংখ্যা সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন৷ তার হিসেবে শুধু আশুলিয়াতেই আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন ৫০ হাজারের মতো পোশাক কর্মী৷ আর এই আন্দোলনের মূল কারণ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের মূল্য গতবছরের তুলনায় দ্বিগুণ হয়ে যাওয়া বলেও জানান তিনি৷
কামরান বলেন, ‘‘আলুর দাম এখন ৭০ টাকা, পেঁয়াজের দাম ১৩০ টাকা৷ অথচ গতবছর আলুর দাম ছিল ৩০ টাকা, আর পেঁয়াজ ৫০-৬০ টাকা৷ ''
‘‘বাড়ি ভাড়াও বেড়েছে৷ শুধুমাত্র একটা জিনিসই বাড়েনি, সেটা হচ্ছে বেতন,'' যোগ করেন তিনি৷
উপপুলিশ প্রধান মাহমুদ জানিয়েছেন যে প্রতিবাদকারীরা রাস্তায় টায়ারে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে, কারখানার জানালা ভেঙ্গেছে এবং শিল্প এলাকার সঙ্গে রাজধানীতে যাতায়াতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক বন্ধ করে দেয়৷ ফলে পুলিশ একপর্যায়ে ‘‘রাবার বুলেট এবং কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে৷''
পোশাক কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন গতসপ্তাহে শুরু হলেও সোমবার হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে আসলে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়৷ তখন এক কর্মী মারা যান৷
আরেকজন কর্মী পুলিশ এবং প্রতিবাদকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে প্রাণ হারান৷
এআই/এসিবি (এএফপি, রয়টার্স)